শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

ঈমান ও ইসলামের পরিচয়

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৫২ Time View

ডেস্ক নিউজ : ‘ঈমান ও ইসলাম’ শব্দদ্বয় বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী পরিভাষা। ‘ঈমান’ অর্থ নিছক বিশ্বাস নয়, বরং এর প্রতিশব্দ ‘তাসদিক’  অর্থাৎ সত্য বলে স্বীকার করা। এরই  অন্তর্নিহিত অনুভূতির প্রকাশ ঘটে একজন মুসলমানের  সব কথা, কাজ ও বিশ্বাসে। এ চেতনার বিকাশই হলো  ইসলামের লক্ষ্য এবং তা মহান আল্লাহ মনোনীত পরিপূর্ণ জীবন দর্শন-‘নিশ্চয়ই ইসলাম আল্লাহ মনোনীত একমাত্র ধর্ম।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯)

ঈমানের বিষয়বস্তু সাতটি ও ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ পাঁচটি, যে ব্যক্তির মধ্যে এসবের প্রতিফলন যত বেশি সে-ই তত বেশি পরিপূর্ণ মুমিন ও মুসলিম। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী ঈমানের শাখা রয়েছে ৭০টি, মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর (রহ.) ব্যাখ্যায় যার সম্পর্ক জিহ্বার সঙ্গে সাতটি, অন্তরের সঙ্গে ৩০টি, অঙ্গ-প্রতঙ্গের সঙ্গে ৪০টি। এ জন্যই শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভী (রহ.) বলেন, ‘প্রত্যেক ভালো কাজকে ঈমান বলা হয়, যার ওপর পরকালে মুক্তি নির্ভরশীল।’ আর হাদিসের ভাষায় “সে-ই  ঈমানের প্রকৃত স্বাদ পেয়েছে যে আল্লাহকে ‘রব’ (প্রতিপালক) ইসলামকে ‘দ্বিন’ (ধর্ম) ও মুহাম্মদকে (সা.) রাসুল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট।” (মুসলিম)

‘তাওহিদ’-‘রিসালতে’র প্রতি প্রকাশ্য স্বীকৃতি, কর্মময় সর্বত্র এর প্রতিফলন এবং অন্তঃকরণে ওই চেতনা সার্বক্ষণিক জাগরূক রাখার প্রয়াশ হলো ‘ঈমান’। ঈমান একটি ইসলামী পরিভাষা, যার অর্থ সত্যতা স্বীকার, আস্থা, বিশ্বাস স্থাপন করা ইত্যাদি। ঈমানের অনুসারী বা ঈমানদারকে বলা হয় মুমিন।

ইসলাম শব্দটির উৎপত্তি আরবি ‘সিলমুন’ শব্দমূল থেকে। ইসলামের অনুসারীকে ‘মুসলিম’ বা ‘মুসলমান’ বলা হয়। ইসলাম শব্দের আভিধানিক অর্থ-আত্মসমর্পণ, শান্তি, আপস ও বিরোধ পরিহার। যার ব্যাবহারিক অর্থ-
(ক) যুদ্ধবিরতির জন্য শান্তি প্রস্তাব।

(খ) ইসলামী বিধান।

(গ) যুদ্ধ পরিহারের জন্য প্রস্তাব।

(ঘ) শান্তি অথবা শান্তি কামনামূলক মুসলিম অভিবাদন (সংক্ষিপ্ত ইসলামী বিশ্বকোষ : ই.ফা.বা.)।

ঈমান ও ইসলামের সবকিছুর সঙ্গে মানবিক মূল্যবোধ, সৌজন্য-সেবা ও শান্তির সুনিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। এমনকি বন্ধুত্ব অথবা বৈরিতার মধ্যেও ঈমানি চেতনা প্রকাশিত হয়। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাউকে ভালোবাসবে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারো সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করবে আবার আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দান করবে অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দান করা থেকে বিরত থাকবে, সে-ই তার ঈমানকে পূর্ণতায় পৌঁছে দিল।’ (আবু দাউদ ও তিরমিজি)

ঈমানদার ব্যক্তির ব্যবহার-বক্তব্যে থাকবে শান্তি-নিরাপত্তা, ইসলামী মূল্যবোধ ও স্বার্থ। অকল্যাণ অনাচার ঈমান ও আখিরাতের জন্য ক্ষতিকর এবং মুসলমান স্বভাবগতভাবেই শান্তি প্রিয়। প্রিয় নবী (সা.) বলেন, ‘মুসলমান সে-ই, যার মুখ ও হাতের অপকারিতা থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ…।’ (নাসায়ি, তিরমিজি)

স্পষ্ট কথা হলো, প্রকাশ্য ঘোষণা, আন্তরিক বিশ্বাস, ত্রুটিহীন ও পরিপূর্ণ আমলদার ব্যক্তিই হলেন প্রকৃত মুমিন ও মুসলমান। তাই তো মহান আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন ‘উদখুলু ফিসসিলমি কাফফা’ অর্থাৎ তোমরা ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করো। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২০৮)

লেখক : সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ কাপাসিয়া, গাজীপুর

কিউএনবি/অনিমা/২০ নভেম্বর ২০২৫,/সকাল ৮:১৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

November 2025
M T W T F S S
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
25262728293031
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit