ডেস্ক নিউজ : ইনজুরি প্রবনতার কারণে ৩৪ বছর বয়সী স্টোকস সাম্প্রতিক বছরগুলোতে খেলার পরিমান উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে দিয়েছেন। গত এক বছরে তিনি শুধু ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ফরম্যাটেই খেলেছেন। হ্যামস্ট্রিং ও কাঁধের চোটে নাকাল স্টোকস ২০২৩ এর নভেম্বরের পর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে আর কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি। তবে নতুন করে চুক্তিতে সই করে এই অলরাউন্ডার জানিয়ে দিলেন–আপাতত জাতীয় দল থেকে অবসরের কথা ভাবছেন না তিনি।
ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামের সঙ্গে ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত বোর্ডের চুক্তি আছে এবং স্টোকসের নতুন চুক্তিতে স্বাক্ষর মানে এই ‘কোচ-অধিনায়ক’ যুগল আরও দুবছর একসঙ্গে থাকছেন। ২০২২ সালের জুনে ম্যাককালাম–স্টোকস যুগ শুরু হওয়ার পর থেকে ইংল্যান্ড ২৫টি টেস্ট জিতেছে ও ১৪টি হেরেছে, যদিও তারা এখনো ‘বিগ থ্রি’ দলের বিপক্ষে কোনো সিরিজ জিততে পারেনি। আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সফরে সেই সুযোগ পেতে পারে তারা।
স্টোকসসহ মোট ১৪ জন খেলোয়াড় দুই বছরের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন। এর বাইরে আরও ১২ জন খেলোয়াড়ের চুক্তি ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং চারজনকে দেওয়া হয়েছে ডেভেলপমেন্ট চুক্তি। মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ইসিবি এই তালিকা প্রকাশ করে। বোর্ডের পুরুষ ক্রিকেট পরিচালক রব কি বলেন, এই তালিকা ইংল্যান্ডের ক্রিকেটের ‘গভীরতা ও প্রতিভার শক্তি’ তুলে ধরেছে।
প্রথমবারের মতো কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নাম লিখিয়েছেন পাঁচজন খেলোয়াড়—সনি বেকার, লিয়াম ডসন, সাকিব মাহমুদ, জেমি ওভারটন ও লুক উড। অন্যদিকে ছয়জনের সঙ্গে আর চুক্তি নবায়ন করা হয়নি। তারা হলেন–জনি বেয়ারস্টো, জ্যাক লিচ, লিয়াম লিভিংস্টন, অলি স্টোন, রিস টপলি এবং ক্রিস ওকস (আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন)।
রব কি জানান, দুই বছর মেয়াদি কেন্দ্রীয় চুক্তি, যা দুই বছর আগে চালু করা হয়েছিল; তাদেরকে সব ফরম্যাটের খেলোয়াড়দের ওয়ার্কলোড সামলাতে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের ক্রমবর্ধমান চাহিদার মধ্যেও ইংল্যান্ডকে খেলোয়াড়দের ‘অগ্রাধিকার’ হিসেবে রাখতে সাহায্য করবে।
আদিল রশিদের সঙ্গে নতুন চুক্তি করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি ২০২৭ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলবেন। স্যাম কুরানকেও নতুন চুক্তিতে আনা হয়েছে, যা তাকে আবারও ইংল্যান্ডের সাদা বলের পরিকল্পনায় ফিরিয়ে এনেছে। জস বাটলারও এই বছর সাদা বলের দলের অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর দুই বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন টেস্ট খেলোয়াড় কেবল এক বছরের চুক্তি পেয়েছেন, যার মানে হলো—আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজে বড় ধরনের ব্যর্থতা ঘটলে দলের বড় পরিবর্তন হতে পারে। এক বছরের চুক্তি পাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন শোয়েব বাশির, জ্যাক ক্রলি, অলি পোপ এবং মার্ক উড (যিনি ২০২৩ সালে করা তিন বছরের চুক্তির শেষ বছরে প্রবেশ করেছেন)।
অস্ট্রেলিয়া সফরে যাওয়া ইংল্যান্ড লায়ন্স দলের চারজন পেসার—জশ হাল, এডি জ্যাক, টম লজ ও মিচেল স্ট্যানলি ২০২৫-২৬ মৌসুমের জন্য পেয়েছেন ডেভেলপমেন্ট চুক্তি। অন্যদিকে, হ্যাম্পশায়ারের জন টার্নার, যিনি ২০২৫ সালের গ্রীষ্মে পিঠের ইনজুরির কারণে প্রায় পুরো মৌসুম মিস করেছেন, চুক্তি থেকে বাদ পড়েছেন।
রব কি বলেন, ‘এই কাঠামো আমাদের খেলোয়াড়দের যথাযথ সহায়তা দেয়, পাশাপাশি সব ফরম্যাটে শক্তিশালী দল গঠন করতে সাহায্য করে।’ব্রুকের অধীনে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে নিয়মিত মুখ ছিলেন টম ব্যান্টন এবং জর্ডান কক্স, যিনি গত বছর একাধিক ফরম্যাটে স্কোয়াডে ছিলেন, চুক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, যা বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে।
ইংল্যান্ড পুরুষ দলের কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা:
দুই বছরের চুক্তি (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৭ পর্যন্ত): জোফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, জ্যাকব বেথেল, হ্যারি ব্রুক, জস বাটলার, ব্রেইডন কার্স, স্যাম কুরান, বেন ডাকেট, উইল জ্যাকস, আদিল রশিদ, জো রুট, জেমি স্মিথ, বেন স্টোকস, জশ টাং;
এক বছরের চুক্তি (৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত): রেহান আহমেদ, সনি বেকার, শোয়েব বাশির, জ্যাক ক্রলি, লিয়াম ডসন, সাকিব মাহমুদ, জেমি ওভারটন, অলি পোপ, ম্যাথিউ পটস, ফিল সল্ট, লুক উড, মার্ক উড;
ডেভেলপমেন্ট চুক্তি: জশ হাল, এডি জ্যাক, টম লজ, মিচেল স্ট্যানলি;
চুক্তি নবায়ন হয়নি: জনি বেয়ারস্টো, জ্যাক লিচ, লিয়াম লিভিংস্টন, অলি স্টোন, রিস টপলি, ক্রিস ওকস, জন টার্নার।
কিউএনবি/আয়শা/০৪ নভেম্বর ২০২৫,/রাত ৯:২৫