স্পোর্টস ডেস্ক : শনিবার ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে হারা ম্যাচের কেবল মিলোস কেরকেজই দলে টিকে ছিলেন, বাকিদের জায়গায় এসেছিল এক ঝাঁক তরুণ। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে লিভারপুলের রক্ষণভাগে ছিলেন ক্যালভিন র্যামসে, ওয়াতারু এন্ডো, জো গোমেজ, অ্যান্ডি রবার্টসন ও কেরকেজ, গোলরক্ষক হিসেবে ছিলেন ফ্রেডি উডম্যান।
মাঝমাঠে ছিলেন কিয়েরান মরিসন, রিও এনগুমোহা, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার ও তরুণ ট্রে নিয়নি। আক্রমণভাগে একাই নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ফেদেরিকো কিয়েসা। স্লট বেঞ্চেও কোনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রাখেননি। আলেকজান্ডার ইসাক, মোহাম্মদ সালাহ এবং ভার্জিল ফান ডাইক বেঞ্চেও ছিলেন না।
পরিবর্তিত এই দলটি শুরু থেকেই সংগ্রাম করছিল প্যালেসের বিপক্ষে। প্রথমার্ধের শেষের দিকে ইসমাইলা সারের দ্রুত দুটি গোলেই অতিথিরা এগিয়ে যায় ২-০ তে। দ্বিতীয়ার্ধে ইয়েরেমি পিনো তৃতীয় গোলটি যোগ করেন। এদিকে বদলি হিসেবে নামার ১২ মিনিট পরই লিভারপুল ডিফেন্ডার আমারা নালো লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন।
ম্যাচের আগে স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্লট নিজের দলবদলের কারণ ব্যাখ্যা করেন, ‘যারা এই ক্লাবকে ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ করেন, তারা জানেন আমরা এই প্রতিযোগিতাটি ব্যবহার করি তরুণদের জন্য। আমরা তাদের জন্য একটি পথ তৈরি করতে চাই, যাতে তারা ৬০,০০০ দর্শকের সামনে, নিজেদের মাঠে খেলতে পারে — এটাই মূল কারণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য কারণ হলো, আমাদের এখন মাত্র চার বা পাঁচজন আহত খেলোয়াড় আছে, কিন্তু একই খেলোয়াড়দের বারবার খেলানো ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা অনেক ম্যাচ হেরেছি, এর কোনো অজুহাত নেই, তবে প্রায় প্রতিবারই দুই দিনের ব্যবধানে খেলার ফলে একই খেলোয়াড়দের মাঠে নামাতে হচ্ছে। যেমন, উদাহরণ হিসেবে বলি, আলেকজান্ডার ইসাকের মতো যেসব খেলোয়াড় প্রি-সিজন মিস করেছে, তাদের আবার ইনজুরির ঝুঁকি বেশি। এখন আমাদের হাতে মাত্র ১৫-১৬ জন সিনিয়র খেলোয়াড় ফিট আছে।’
কিন্তু সমর্থকেরা এই ব্যাখ্যা মানতে রাজি নন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) তারা ক্ষোভে উগরে দিয়েছেন। একজন লিখেছেন, ‘আর্নে স্লট যত সমালোচনা পাচ্ছেন, সবই প্রাপ্য। তিনি একেবারে হাস্যকর। ৬১,০০০ পরিশ্রমী, টিকিট কেনা সমর্থকের সামনে এমন দল নামানো একদম বোকামি। তিনি ক্লাব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ভয়ঙ্কর।’
আরেকজন বলেন, ‘যারা অ্যানফিল্ডে গিয়েছিল, তাদের সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত দেওয়া উচিত। ভাবা যায়, টিকিট ও যাতায়াতের খরচ দিয়ে কেউ গেল, আর দেখল কোনো তারকা খেলোয়াড়ই নেই, দলটি ৩-০ গোলে হারল, আর স্লটের জেতার কোনো আগ্রহই নেই।’
তৃতীয়জন পোস্ট করেন, ‘এটা লিভারপুলের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে ফর্ম। আর্নে স্লট এক প্রতারক।’ আরেকজন ১৮বার লিখেছেন , ‘আর্নে স্লট বিদায় হও।’বুধবার রাতে ক্রিস্টাল প্যালেসের কাছে এই পরাজয়ের ফলে লিভারপুল তাদের শেষ সাত ম্যাচের মধ্যে ছয়টিতে হেরেছে। একমাত্র সান্ত্বনা হলো, আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্টের বিপক্ষে ৫-১ গোলের জয়।
কিন্তু স্লট ও লিভারপুলের সামনে এখন আরও কঠিন সময়। শনিবার (১ নভেম্বর) তারা মুখোমুখি হবে অ্যাস্টন ভিলার, এরপর আগামী সপ্তাহে চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদকে আতিথ্য দেবে। সে ম্যাচে অলরেডরা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেতে পারে সাবেক সতীর্থ ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ডকে।
নভেম্বরের আন্তর্জাতিক বিরতির আগে শেষ ম্যাচে লিভারপুলের প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটি। প্রিমিয়ার লিগে টানা চার ম্যাচ হারের ফলে স্লটের দল এখন শীর্ষে থাকা আর্সেনালের চেয়ে সাত পয়েন্ট পিছিয়ে আছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেরও নিচে অবস্থান করছে।
কিউএনবি/আয়শা/৩০ অক্টোবর ২০২৫,/বিকাল ৪:২২