বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০০ অপরাহ্ন

নিজেকে নোবেলের যোগ্য বলছেন ট্রাম্প, বিশেষজ্ঞরা বলছেন উল্টোটা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৫ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার ঘোষণা করা হবে আগামী শুক্রবার। আর পুরস্কার জয়ের আশা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করছেন, তিনি এই পুরস্কারের যোগ্য, কারণ তিনি ‘সাতটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন।’ ট্রাম্পের দাবি অনেক বিশ্বনেতা তাকে সমর্থন করেছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তার পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।

ট্রাম্প কেন নিজেকে নোবেলের যোগ্য মনে করেন
ট্রাম্প দাবি করেন, ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি সাতটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন—যেমন ইসরায়েল-ইরান, রুয়ান্ডা-কঙ্গো, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া, ভারত-পাকিস্তান, মিশর-ইথিওপিয়া এবং সার্বিয়া-কসোভো। সম্প্রতি তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারলে এটি হবে তার ‘অষ্টম শান্তি উদ্যোগ’।

এক সামরিক বৈঠকে তিনি বলেন, কেউ কখনো এমন কিছু করতে পারেনি। আমি হয়তো পুরস্কার পাব না, তারা হয়তো দেবে এমন কাউকে, যে কিছুই করেনি। কিন্তু এতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি বড় অপমান হবে।

নোবেল পুরস্কার মূলত দেওয়া হয় সেই ব্যক্তিকে যিনি জাতির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন — এটাই আলফ্রেড নোবেলের মূলনীতি।

বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। কারণ নোবেল কমিটি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি ও বহুপাক্ষিক শান্তি প্রচেষ্টাকে অগ্রাধিকার দেয়, দ্রুত কূটনৈতিক সাফল্যকে নয়।

হেনরি জ্যাকসন সোসাইটির গবেষক থিও জেনু বলেন, কোনো সংঘাত সাময়িকভাবে থেমে যাওয়া আর স্থায়ী সমাধান এক বিষয় নয়। ট্রাম্পের উদ্যোগ এখনো টেকসই বলে প্রমাণিত হয়নি।

অসলোভিত্তিক পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ক্রিস্টিন সানডভিক বলেন, ট্রাম্প শান্তি নিয়ে কথা বলেছেন ঠিকই, কিন্তু বাস্তবে কতটা স্থায়ী ফল পাওয়া গেছে, তা সময়ই বলে দেবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে ট্রাম্পের অবহেলা তার নোবেল পাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দিয়েছে।

থিও জেনু বলেন, যিনি জলবায়ু পরিবর্তনের অস্তিত্বই অস্বীকার করেন, তাকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া অসম্ভব।

তিনি বলেন, নোবেল কমিটি সাধারণত এমন মানুষকে পুরস্কৃত করে, যারা জাতির মধ্যে সহযোগিতা ও মিলনের সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে আমরা তেমন কিছু দেখি না।

নোবেল কমিটির সহ-সভাপতি অ্যাসলে তোয়ে বলেন, নিজেকে নিয়ে প্রচারণা চালানো বরং উল্টো ফল দেয়। কেউ যত বেশি নিজের জন্য প্রচার চালায়, তত বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

কে কে ট্রাম্পকে মনোনয়ন দিয়েছেন
২০১৮ সাল থেকে দেশি-বিদেশি কয়েকজন রাজনীতিক ট্রাম্পকে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দিয়েছেন। এ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাদের অন্যতম।

নেতানিয়াহু এক বৈঠকে ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্রও হস্তান্তর করেছেন। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ট্রাম্পের এই মনোনয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। কারণ শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার দাবিগুলোর অধিকাংশই যাচাইযোগ্য প্রমাণের অভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নোবেল কমিটি এবারও এমন কাউকেই পুরস্কৃত করবে, যিনি প্রকৃত অর্থে মানবতার কল্যাণে এবং দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছেন।

কিউএনবি/অনিমা/৮ অক্টোবর ২০২৫,/সকাল ১১:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit