ডেস্ক নিউজ : ফরিদপুর জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান লিমনের নেতৃত্বে শহরের মাহেন্দ্রস্ট্যান্ডে হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় হামলাকারীরা বলেছে- এতদিন আওয়ামী লীগ স্ট্যান্ড দখল করে খেয়েছে, এখন আমরা খাব।
অভিযোগে জানা গেছে, যুবদলের নাম ব্যবহার করে জেলা কমিটির সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান লিমন ও তার সহযোগী যুবদল কর্মী শাহীন হাওলাদারসহ যুবক কয়েক মাস ধরে ভাঙা রাস্তার মোড়ে অবস্থিত মাহেন্দ্রস্ট্যান্ড দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এ সময় তারা স্ট্যান্ড থেকে নিয়মিত জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করত বলে অভিযোগ রয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মাহেন্দ্র চালকেরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল শাহীন হাওলাদার গংয়েরা।
মাহেন্দ্রচালক লিয়াকত আলী বাবু, রউফুল লিমন, রানা সরদার, মো. সলেমান, মামুন মণ্ডল অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে লিমন ও শাহীন মাহেন্দ্র স্ট্যান্ডের দখল নিতে চেষ্টা চালায়। স্ট্যান্ড দখল নিতে না পারলেও তারা জোরপূর্বক মাহেন্দ্রপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ করে টাকা নিত। আমরা ভয়ে তাদের চাঁদা দিতাম। গত কয়েক দিন ধরে চাঁদা না দেওয়ার কারণে তারা নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। মঙ্গলবার বিকালে বেশ কিছু ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাহেন্দ্রস্ট্যান্ডে হামলা চালায়। এ সময় তারা নির্বিচারে মাহেন্দ্রগুলো ভাঙচুর করতে থাকে। এ সময় তাদের বাধা দিলে আমাদের ১০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
মাহেন্দ্রস্ট্যান্ডের শ্রমিকরা জানান, যুবদলের নাম ব্যবহার করে লিমন ও শাহীন স্ট্যান্ড দখলের চেষ্টা করছে। চাঁদা না দিলে আমাদের মেরে স্ট্যান্ড থেকে তাড়িয়ে দেবে বলে হুমকি দিচ্ছে। হামলাকারীরা বলছে, এতদিন আওয়ামী লীগ স্ট্যান্ড দখল করে খেয়েছে, এখন আমরা খাব। মাহেন্দ্র শ্রমিকেরা অভিযোগ করে বলেন, মারপিট, মাহেন্দ্র ভাঙচুরের পাশাপাশি সমিতির কাউন্টার থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় তারা।
মাহেন্দ্রচালক এলাহি শেখ ও মো. মোতালেব বলেন, আমাদের মাহেন্দ্র গাড়িগুলো ভেঙে ফেলার কারণে এখন আমরা কিভাবে চলব। তাছাড়া আমরা এখন মালিকদের কি বুঝ দেব। এ সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিচার চাই। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে হামলার শিকার হওয়া শ্রমিকেরা জানান।
ফরিদপুর মাহেন্দ্র শ্রমিক ইউনিয়নের সড়ক সম্পাদক লিয়াকত আলী বাবু মোল্লা জানান, গত ৫ আগস্টে পর ফরিদপুর যুবদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান লিমনের নেতৃত্বে ভাঙা রাস্তার মোড় এলাকার মাহিন্দ্র থেকে চাঁদাবাজি করতে থাকে। মঙ্গলবার এরই ধারাবাহিকতায় মোড় এলাকার চাঁদাবাজি করতে গেলে শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃত জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে লিমনের সহযোগীরা আচমকা হামলা করে এ তাণ্ডব চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সভাপতি মো. রাজিব হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। যদি এমন ঘটনা কেউ ঘটিয়ে থাকে তাহলে তদন্তসাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর দায়ভার দল নেবে না। যুবদল নেতা মাসুদুর রহমান লিমন বলেন, আমি শ্রমিক পলিটিক্স করি না। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্য আমাকে জড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও উল্লেখ করেন।
কোতোয়ালি থানার এসআই পিষুষ কান্তি হালদার বলেন, ঘটনা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদ উজ্জামান বলেন, মাহিন্দ্র ভাঙচুরের বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিউএনবি/আয়শা/২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, /রাত ১২:২২