শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০২ পূর্বাহ্ন

‎লালমনিরহাট হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার পরিবর্তে ভোগান্তিই যেন জেলার মানুষের নিত্যসঙ্গী……২৫.০৮.২০২৫

জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, লালমনিরহাট প্রতিনিধি ।
  • Update Time : সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৪ Time View

‎জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না, ‎লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ‎জেলার প্রায় ১৮ লাখ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল। ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে জনবল ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব দীর্ঘদিনের সমস্যা হলেও বর্তমানে চরম অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা কার্যত ভেঙে পড়েছে। চিকিৎসকরা নিয়মিত না বসায় বহির্বিভাগে কর্মচারী ও বহিরাগতরা রোগী দেখছেন, দিচ্ছেন ব্যবস্থাপত্রও। ফলে সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পরিবর্তে ভোগান্তিই যেন জেলার মানুষের নিত্যসঙ্গী।
 
‎সরে জমিনে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালের ২০৬ নম্বর কক্ষে পুরুষ রোগী দেখার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার নিয়মিত বসেন না। সেখানে রোগী দেখছিলেন নাজির হোসেন নামে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। একইভাবে ২১৩ নম্বর কক্ষে শিশু রোগী দেখছিলেন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার আবির ও দুই বহিরাগত। অথচ নিয়ম অনুযায়ী এসব রোগী দেখার কথা শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের।

‎২১৭ নম্বর কক্ষেও একই চিত্র। মহিলা রোগীদের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার (ইউনানি) ডা. মো. শাহাব উদ্দিন ছুটিতে থাকলেও তার স্থানে কম্পাউন্ডার বুলবুল আহমেদ ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সাইফুল ইসলাম রোগী দেখছিলেন। ‎হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী তহমিনা বলেন, “ডাক্তাররা কোনো কথা শোনেন না, শুধু আগেই তৈরি করা ওষুধের তালিকা লিখে দেন। এতে রোগ ভালো হবে কিনা, সে নিশ্চয়তা নেই।”‎আরেক রোগী খাদিজা বেগম জানান, প্যাথলজি বিভাগে নির্ধারিত ফি জমা দিয়েও অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে। “রিপোর্ট দেওয়ার সময় জোরপূর্বক টাকা নেয়া হয়। সঠিক সেবা পাওয়া যায় না।”

‎অন্যদিকে এক পুরুষ রোগী অভিযোগ করেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট মেডিসিন ডাক্তার মোহাম্মদ রুবেল মিঞা প্রায়ই অফিস চলাকালে বাইরে রোগী দেখে আবার অফিসে আসেন। ‎বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ করে শিশু ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগীদের গুরুত্বের সাথে না দেখে বাহিরের প্রাইভেট ক্লিনিকে রোগী দেখতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। ‎রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে কোনো শৃঙ্খলা নেই। নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে সঠিক চিকিৎসার বদলে নানা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। সরকারি ওষুধ থাকলেও অনেক সময় বাহির থেকে কিনতে হয়। একজন ডাক্তারকে পাওয়া যেন এখানে সৌভাগ্যের বিষয়।

‎জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আব্দুল মোকাদ্দেস বলেন, “১০০ শয্যার জনবল দিয়েই ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালাতে হচ্ছে। বর্তমানে মাত্র সাতজন চিকিৎসক রয়েছেন।” তবে তিনি কর্মচারী বা বহিরাগতদের দিয়ে রোগী দেখার কথা অস্বীকার করে বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্থানে কর্মচারী বা বহিরাগত কোন ব্যক্তি রোগী দেখলে তা তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

কিউএনবি/আয়শা/২৫ আগস্ট ২০২৫/রাত ৯:৩৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit