রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০১ পূর্বাহ্ন

মালয়েশিয়ার বিস্ময়কর পুত্রা মসজিদ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : মালয়েশিয়ায় পা রাখলেই যে স্থাপনাটি আপনাকে সর্বপ্রথম টানবে, সেটি হলো পুত্রা মসজিদ। রাজধানী কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরেই এর অবস্থান। মনোমুগ্ধকর এই মসজিদটি দেখতে আপনাকে যেতে হবে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়া, যা বিশ্বের অন্যতম আধুনিক ও পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্নতা ও দৃষ্টিনন্দন শহর হিসেবে সুপরিচিত। সেই দৃষ্টিনন্দন শহরের কেন্দ্রেই দেখা মিলবে নীল জলরাশিবেষ্টিত গোলাপি গম্বুজবিশিষ্ট স্বপ্নিল পুত্রা মসজিদ।

নির্মাণ ইতিহাস

পুত্রা মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ১৯৯৭ সালে। মাত্র দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বরে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। পুরো প্রকল্পে ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২৫০ মিলিয়ন মালয়েশিয়ান রিংগিত, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫২০ কোটি টাকার সমান।

মসজিদের স্থাপত্য বৈশিষ্ট্য

মসজিদটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ এর ৯টি গম্বুজ। প্রধান গম্বুজটির উচ্চতা প্রায় ১৬০ ফুট। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ মিনারটি ৩৮১ ফুট উঁচু, যা আকাশছোঁয়া এক মহিমান্বিত স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত।

গোলাপি আভাযুক্ত গ্রানাইট দিয়ে নির্মাণ হওয়ায় পুরো স্থাপনাটি যেন রঙিন মরুভূমির সৌন্দর্যকে ধারণ করেছে। স্থাপত্য নকশায় মিশে গেছে মালয়েশিয়ান, পারসিয়ান ও আরব-ইসলামিক ধারা।

প্রবেশদ্বারটি বানানো হয়েছে প্রাচীন পারস্যের ঐতিহ্যবাহী পাবলিক বিল্ডিং গেটের আদলে। ভেতরে ব্যবহৃত হয়েছে দেশীয় উপকরণ ও স্থানীয় কারুশিল্পের অসাধারণ নিদর্শন।
অভ্যন্তরীণ বিন্যাস

মসজিদটি মূলত তিনটি অংশে বিভক্ত। প্রধান অংশ হলো যেখানে নামাজ পড়া হয়—যেখানে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।

দ্বিতীয় রয়েছে ‘সাহান’ বা প্রাঙ্গণ—সহজে বলতে গেলে খোলা আকাশের নিচে অবস্থিত বিশাল উঠান, যেখানে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ একত্র হতে পারেন।

এ ছাড়া শিক্ষা ও অন্যান্য সামাজিক কার্যক্রমের জন্য রয়েছে অডিটরিয়াম, ডাইনিং রুম ও লাইব্রেরি।

দর্শনার্থীদের জন্য নিয়ম

মসজিদটি প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য খোলা থাকে।

নামাজের সময় অমুসলিম দর্শনার্থীদের প্রবেশ সীমিত করা হয়।

ধূমপান কমপ্লেক্সজুড়ে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

নারী পর্যটকদের জন্য বিশেষ গোলাপি পোশাক ও মাথা ঢাকার ব্যবস্থা প্রবেশদ্বার থেকেই সরবরাহ করা হয়।

রাতের পুত্রা মসজিদ

যদি পুত্রজায়া ভ্রমণে আসেন, তবে অবশ্যই রাতে একবার মসজিদটির সৌন্দর্য উপভোগ করবেন। কারণ রাতের রঙিন আলোকসজ্জায় গম্বুজ ও মিনারের প্রতিচ্ছবি লেকের জলে ভেসে ওঠে, যা সেখানে যেন স্বপ্নরাজ্যের আভা তৈরি করে। নান্দনিক এই অনুভূতি নিতে এখানে এসে মাগরিব বা এশার নামাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

মসজিদের সামনের বিশাল বর্গক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন রাজ্যের পতাকা বাতাসে উড়তে থাকে, যা পুরো পরিবেশকে আরো মহিমান্বিত করে তোলে।

পুত্রা মসজিদ শুধু একটি নামাজের স্থান নয়, বরং এটি মালয়েশিয়ার জাতীয় গর্ব ও আধুনিক ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। এখানে এলে একই সঙ্গে পাওয়া যায় আধ্যাত্মিক প্রশান্তি, স্থাপত্যের অনুপম সৌন্দর্য ও এক স্মরণীয় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। তাই মালয়েশিয়া ভ্রমণের সুযোগ হলে প্রত্যেকেরই উচিত, কুয়ালালামপুরের পাশাপাশি পুত্রজায়ার পুত্রা মসজিদটি ভ্রমণ তালিকায় সবার আগে রাখা।

কিউএনবি/অনিমা/২৪ আগস্ট ২০২৫/সকাল ১১:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit