শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৭ অপরাহ্ন

বন্ধুত্বের ৫টি স্তর, আপনি কোনটায় আছেন?

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫
  • ৪৪ Time View

লাইফস্টাইল ডেস্ক : মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের সম্পর্ক যেমন সময়ের সঙ্গে পাল্টায়, তেমনি বন্ধুত্বও নানা স্তরে বিভক্ত। কারো সঙ্গে পরিচয় থাকে, কারো সঙ্গে হয় হৃদয়ের অদৃশ্য সেতু।

আজ জানব বন্ধুত্বের এমনই পাঁচটি স্তর সম্পর্কে। আর আপনি খুঁজে নেবেন, আপনার বন্ধুরা কোন স্তরে আছে, আর আপনি নিজে কোন বন্ধুত্বে সবচেয়ে বেশি জড়িত।

স্তর ১: পরিচিত– কেবল চেনা-জানার সম্পর্ক

এই সম্পর্ক একেবারেই পৃষ্ঠসত। আপনি তার নাম জানেন, সে কোথায় থাকে হয়তো জানেন, কিন্তু এর বেশি কিছু নয়। দেখা হলে সালাম বা হেসে কথা বললেও আবেগের কোনো গভীরতা নেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সম্পর্কগুলো টিকে থাকে পরিবেশ বা সামাজিক সৌজন্যের কারণে। এখানে তেমন কোনো মানসিক জড়িত থাকার বিষয় থাকে না।

উদাহরণ: বাসার পাশের কেউ, যার সঙ্গে কেবল ‘কেমন আছেন’ পর্যায়ের আলাপ হয়। সহপাঠী বা সহকর্মী, যাকে ছাড়া গ্রুপে দেখা গেলেও আলাদা যোগাযোগ নেই।

স্তর ২: স্বস্তির বন্ধুত্ব- একসাথে ভালো লাগে, তবে গভীরতা কম

এদের সঙ্গে সময় কাটানো যায়, হাসা-আড্ডা হয়, মাঝেমধ্যে কোথাও যাওয়া হয়। কিন্তু মন খারাপ হলে কাকে বলবেন- এরা সেই তালিকায় থাকে না। এই সম্পর্ক গড়ে ওঠে সাধারণত একসাথে কাজ, পড়া বা চলাফেরা করার কারণে। আবেগের জায়গায় আসতে আরও সময় ও নির্ভরতার দরকার হয়।

উদাহরণ: একসাথে আড্ডা হয়, মাঝেমধ্যে মেসেজ চালাচালি। কখনোই গভীর কোনো বিষয় শেয়ার করেন না। দূরত্ব হলে মনে কষ্ট লাগে না।
স্তর ৩: ঘনিষ্ঠ বন্ধু- যাদের সাথে মন খুলে বলা যায়

এরা আপনার সেই বন্ধু, যাদের সাথে আপনি খোলামেলা কথা বলতে পারেন। আনন্দের মুহূর্তের পাশাপাশি তারা আপনার দুঃখও জানে। ঝগড়া হলেও সম্পর্ক ভাঙে না।

মনোবিজ্ঞান বলছে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সংখ্যা হাতে গোনা হয়। তাদের সঙ্গে থাকে মানসিক জড়িততা, ভরসা আর নিরাপত্তার অনুভব।

উদাহরণ: পারিবারিক সমস্যা, জীবনের টানাপোড়েন এই বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেন। রাগ-অভিমান হলেও নিজের মানুষ বলেই ভাবেন। কেউ একজন মন খারাপ করলে অন্যজন সেটা ঠিক বুঝে নেয়

স্তর ৪: প্রিয় বন্ধু- হৃদয়ের সবচেয়ে কাছের মানুষ

এই স্তরের বন্ধুত্বে থাকে নিঃশর্ত গ্রহণযোগ্যতা। আপনি তার সঙ্গে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে মেলে ধরতে পারেন, কোনো রাখঢাক বা লুকোচুরি নেই। নিজের ভালো-মন্দ, ভুল-ত্রুটি, ছোট ছোট স্বপ্ন- সবকিছু বলার মতো মানুষ তিনি।

এমন বন্ধু হয়তো জীবনে একজনই হয়। এবং তার স্থান সহজে কেউ নিতে পারে না।

উদাহরণ: দুঃসময় হলে যার কথা প্রথম মনে পড়ে। যে আপনার না বলা কথাও বুঝে নিতে পারে। তার সঙ্গে নীরবতাও স্বস্তিদায়ক মনে হয়।
স্তর ৫: আত্মার বন্ধু– সম্পর্ক থেকে বড় হয়ে ওঠা বন্ধন

এরা আপনার জীবনের সঙ্গী হয়ে ওঠে, সময়ের বাইরে এক ধরনের মনের বন্ধন তৈরি হয়। হয়তো প্রতিদিন কথা হয় না, দেখা হয় না, তবু আপনি জানেন—প্রয়োজনে সে থাকবে।

এই সম্পর্ক হয়তো বহু পুরোনো, কিংবা হঠাৎ কারো সঙ্গে এমন মানসিক সংযোগ গড়ে উঠেছে, যা সহজে মুছে যায় না।

উদাহরণ: ১০ বছর দেখা নেই, তবু মনে হয় ঠিক আগের মতোই কাছের। দূরে থেকেও আপনার খবর রাখে, মন বোঝে। আপনি তার পাশে না থেকেও জানেন, সে আপনাকে মনের মধ্যে ধরে রেখেছে

কেন বন্ধুত্বের স্তর জানা জরুরি?
প্রত্যেক সম্পর্কের গভীরতা এক নয়। যাকে আপনি ঘনিষ্ঠ ভাবেন, সে হয়তো আপনাকে কেবল চেনা মানুষ হিসেবেই দেখে। স্তর বুঝে সম্পর্কের যত্ন নিলে ভুল বোঝাবুঝি কমে যায়। প্রত্যাশা কমে, সম্পর্ক টিকে থাকে।

বন্ধুত্ব হলো জীবনের এমন এক সম্পর্ক, যা রক্তের নয়, তবু আত্মার। সব বন্ধুই এক রকম নয়- কেউ কেবল পথচলা সঙ্গী, কেউ হয় জীবনের শেষ অবলম্বন। সম্পর্কে নিজেকে বোঝা যেমন দরকার, তেমনি অপরপক্ষের অবস্থান বোঝাটাও গুরুত্বপূর্ণ।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২ আগস্ট ২০২৫/রাত ১০:২২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit