শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১৮ অপরাহ্ন

যেভাবে ‘তীব্র আকাশযুদ্ধে’ ভারতের রাফাল ভূপাতিত করে পাকিস্তান

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫
  • ১১ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘর্ষের সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনী চীনা-নির্মিত জে-১০সি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে এক তীব্র আকাশযুদ্ধে ভারতের ফরাসি নির্মিত রাফাল জেট ভূপাতিত করে। এমনটাই জানিয়েছে রয়টার্সের একটি বিশদ অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন।

চলতি বছরের ৭ মে ভোরবেলায় সংঘটিত এই সংঘর্ষকে সাম্প্রতিক দশকগুলোর মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম আকাশযুদ্ধ বলে বর্ণনা করছেন সামরিক বিশ্লেষকরা। দুই দেশের প্রায় ১১০টি বিমান এতে অংশ নেয় বলেও দাবি করেন তারা।

এই সংঘর্ষের নেপথ্য কারণ ছিল ভারত কর্তৃক পাকিস্তানের ভূখণ্ডে চালানো একটি বিমান হামলা। দিল্লি দাবি করে, এই হামলায় তারা ভারত-শাসিত কাশ্মীরে ২৬ এপ্রিল সংঘটিত একটি প্রাণঘাতী হামলার সঙ্গে যুক্ত জঙ্গি অবকাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। 

ইসলামাবাদ অবশ্য সেই হামলার দায় অস্বীকার করে এবং ভারতের বিমান হামলাকে একতরফা আগ্রাসন হিসেবে বর্ণনা করে।

এদিকে, রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির আহমেদ বাবর সিধু ভারতের সম্ভাব্য আক্রমণের আশঙ্কায় দিনের পর দিন অপারেশন রুমের পাশে একটি ম্যাট্রেসে ঘুমিয়ে রাত পার করছিলেন। ভারতের বিমান হামলার পরই তিনি সঙ্গে সঙ্গে চীনা জে-১০সি যুদ্ধবিমান মোতায়েনের নির্দেশ দেন। 

পাকিস্তানের হাতে থাকা এই যুদ্ধবিমানগুলো পিএল-১৫ দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম এবং সেদিনের ওই অভিযানে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এ বিষয়ে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ‘আমরা ওঁত পেতে থেকে তাদের মোক্ষম আঘাত করেছি’।

তিনি বলেন, ‘সংঘর্ষ চলাকালীন ভারতীয় পাইলটদের বিভ্রান্ত করতে পাকিস্তান বিমান বাহিনী একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ অভিযানও চালায়’। অবশ্য ভারতীয় কর্মকর্তারা এখনো তাদের রাফাল হারানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেননি বা গোয়েন্দা ত্রুটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ফরাসি সামরিক ও প্রতিরক্ষা শিল্পের সূত্রগুলো এ ঘটনাকে স্বীকার করেছে।

জুনে ফরাসি বিমান বাহিনীর প্রধান নিশ্চিত করেন, ভারতীয় বাহিনী পরিচালিত একটি রাফাল এবং একটি রাশিয়ান তৈরি সুখোইসহ মোট ৩টি বিমান তারা হারিয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে আসে, ভারতের একটি বড় গোয়েন্দা ব্যর্থতাই ছিল তাদের এই ক্ষতির মূল কারণ। ভারতীয় পাইলটরা ভেবেছিল পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রের রপ্তানি সংস্করণ মাত্র ১৫০ কিমি দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ২০০ কিমি দূর থেকে ছোড়া হয়েছিল বলে পাকিস্তানি ও ভারতীয় সূত্র জানিয়েছে।

অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ এয়ার মার্শাল গ্রেগ ব্যাগওয়েল রয়টার্সকে বলেন, ‘এটি ছিল অবস্থানগত সচেতনতার একেবারে পাঠ্যবইয়ের মতো উদাহরণ’। তিনি জোর দিয়ে বলেন, যাদের তথ্যভিত্তিক নেটওয়ার্ক শক্তিশালী, তারাই জয়ী হয়।

রয়টার্স জানায়, পাকিস্তান ওই সময় একইসঙ্গে বহু-মাত্রিক যুদ্ধব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছে। যেখানে গোয়েন্দা নজরদারি, তথ্য ও হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ‘কিল চেইন’ গঠন করা হয়। পাকিস্তানের তৈরি ডাটা লিংক-১৭ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুইডেনের নির্মিত নজরদারি (গোয়েন্দা) বিমানের রাডার তথ্য সরাসরি সীমান্তের কাছে থাকা জে-১০সি যুদ্ধবিমানের পাইলটের কাছে পাঠানো হচ্ছিল। এতে জে-১০সি নিজস্ব রাডার চালু না করেই শত্রুর নজর এড়িয়ে আঘাত অভীষ্ট অক্ষ্যে হানতে সক্ষম হয়।

বিপরীতে, ভারতীয় কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে, তাদের বিমান বাহিনীর বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে সংগৃহীত বিমান ও প্রযুক্তি এখনো একটি সমন্বিত কমান্ড এবং কন্ট্রোল ব্যবস্থায় একীভূত হয়নি, যা তাদের বড় দুর্বলতা।

৭ মে’র সংঘর্ষের পর ভারত তাদের আকাশযুদ্ধের কৌশল পাল্টায় এবং ১০ মে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়। যেখানে পাকিস্তানের ৯টি বিমানঘাঁটি ও রাডার সাইটকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। 

ভারতীয় ও পাকিস্তানি সূত্র বলছে, ভারতের ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে একটি নজরদারি (গোয়েন্দা) বিমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

এই সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র আকাশযুদ্ধ ১০ মে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়।

পরবর্তীতে, ভারতের উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাহুল সিংহ পাকিস্তানকে চীনের কাছ থেকে রিয়েল-টাইম সামরিক তথ্য পাওয়ার অভিযোগ করেন। যদিও তিনি কোনো সরাসরি প্রমাণ দেখাননি। 

পাকিস্তান তার এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং চীন বলেছে, ইসলামাবাদের সঙ্গে তাদের সামরিক সহযোগিতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশমাত্র।

রয়টার্স আরও জানায়, জুলাই মাসে চীনা বিমান বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াং গ্যাং পাকিস্তান সফর করেন এবং জানতে চান, কীভাবে পাকিস্তান চীনা যুদ্ধবিমানগুলোকে বহুমাত্রিক অভিযানে সফলভাবে একীভূত করে এবং সফলতা অর্জন করে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২ আগস্ট ২০২৫/রাত ১০:০৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit