আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার। প্রেসিডেন্টের ‘অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা সত্ত্বেও দেশটিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা অব্যাহত আছে। দ্রুজদের প্রতিরোধে সেখানে বিভিন্ন রাজ্য থেকে গাড়িবহর নিয়ে প্রবেশ করছে সিরিয়ার বেদুঈন যোদ্ধারা।
একের পর এক গাড়ি ভর্তি করে সোয়েইদা অঞ্চলে প্রবেশ করতে দেখা গেছে সিরিয়ার সশস্ত্র বেদুঈন যোদ্ধাদের। রাউন্ড রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে তাদের স্বাগত জানাচ্ছে গোষ্ঠিটির অন্যান্য সহযোদ্ধারা। সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে দ্রুজ ও বেদুঈনদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা। তবুও নিরাপত্তার স্বার্থে স্বংয়ক্রিয় রাইফেল আর তলোয়ার হাতে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা পাহারা দিচ্ছে বেদুঈনরা।
প্রশ্ন উঠতে পারে, কারা এই বেদুঈন জনগোষ্ঠি? আর কেনই বা দ্রুজদের সাথে সংঘাতে অস্ত্র সজ্জিত হয়ে যুদ্ধাবস্থায় এই জনগোষ্ঠির মানুষ? ঐতিহাসিকভাবে আরবের মরু অঞ্চলে যাযাবর হিসেবে বসবাস করে আসছে এই বেদুঈন সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে এসব বেদুঈনদের একটি অংশ সিরিয়ার বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। একসময় মরুভূমিতে পশুপালন তাদের একমাত্র জীবিকা হলেও বর্তমানে তারা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। তারা আত্মীয়দের মাঝে পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং প্রতিটি বেদুঈন গোষ্ঠির একজন শেখ বা দলনেতা থাকে। বর্তমানে সিরিয়ার বেদুঈন জনগোষ্ঠি সুন্নি ইসলাম অনুসরণ করে।
দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে বসবাস থাকলেও সোয়াইদা শহরে তারা সংখ্যালঘু। বিভিন্ন সময়ে অঞ্চলটিতে শিয়া ধর্মীয় সংখ্যাগুরু জাতিগোষ্ঠি দ্রুজদের সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়ে আসছে। এসব সংঘর্ষের পেছনে ঐতিহাসিক কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সম্প্রতি দ্রুজ সম্প্রদায়ের এক ব্যাক্তির উপর হামলাকে কেন্দ্র করে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। পরে দু’পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা আর অপহরণের মতো ঘটনায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয় পরিস্থিতি।
সিরিয়ার সশস্ত্র গোষ্ঠি বিষয়ক গবেষক আহমেদ আবা জেইদ বলেন, বর্তমানে সমগ্র সিরিয়া কোনো এমন অনেক সামাজিক সমস্যায় জর্জরিত। এসব সংঘাতের সত্যিকার অর্থে কোনো কারণ নেই। তবে, সোয়াইদাতে সাম্প্রতিক এই সংঘাতের সুযোগ নিয়েছে সরকার। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আরও জটিল করে তুলেছে তারা।
কিউএনবি/আয়শা//২০ জুলাই ২০২৫,/বিকাল ৫:০০