ডেস্ক নিউজ : আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থার (আইএমও) কাউন্সিলে পুনঃনির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ প্রার্থিতা উপস্থাপন করেছে।
সোমবার লন্ডনে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এই প্রার্থিতা উপস্থাপন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মাদ ইউসুফ। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যে ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুনঃনির্বাচনের জন্য প্রার্থিতা উপস্থাপন করেছে সেখানে ২৭টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এর মধ্যে ২০টি দেশ নির্বাচিত হবে।
আইএমওতে মোট তিনটি ক্যাটাগরিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এগুলো হচ্ছে – এ, বি ও সি ক্যাটাগরি। সামুদ্রিক পরিবহন ও নৌ চলাচলের ক্ষেত্রে যেসব দেশের আগ্রহ রয়েছে তারা সি ক্যটাগরিতে নির্বাচন করবে। দুই বছরের জন্য দেশগুলো নির্বাচিত হয়।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বাংলাদেশের পাশাপাশি যেসব দেশ নির্বাচিত হয়েছে তারা হচ্ছে- বাহামা, চিলি, সাইপ্রাস, ডেনমার্ক, মিশর, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, জ্যামাইকা, কেনিয়া, মালয়েশিয়া, মাল্টা, মেক্সিকো, মরক্কো, পেরু, ফিলিপাইন, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর এবং তুর্কিয়ে।
প্রার্থিতা উপস্থাপনের সময় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও আইএমওতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আবিদা ইসলাম, আইএমও মহাসচিব আর্সেনিও ডমিনগুয়েজ এবং আইএমওতে নিযুক্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।
নৌ পরিবহন সচিব বলেন, বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত একটি সামুদ্রিক জাতি হিসেবে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও কৌশলগত অবস্থানের কারণে বৈশ্বিক সামুদ্রিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এ দুটো বন্দর শুধু বাংলাদেশের জন্যই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
১৯৭৬ সালে আইএমওতে যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশ সবসময় নিরাপদ, সুরক্ষিত ও টেকসই নৌপরিবহনের পক্ষে কথা বলে আসছে।
পরিবেশবান্ধব জাহাজ ভাঙা খাতে বাংলাদেশ বিশ্বে অগ্রগামী। বর্তমানে বৈশ্বিক সক্ষমতার প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশ যোগান দিচ্ছে বলে তিনি জানান।
সচিব বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আইএমওতে এলডিসি, ছোট দ্বীপ-রাষ্ট্র, স্থলবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
পুনরায় নির্বাচিত হবার জন্য বাংলাদেশের তরফ থেকে কিছু প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়েছে। এগুলো হচ্ছেঃ নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সামুদ্রিক অনুশীলনকে উৎসাহিত করা, পরিবেশবান্ধব জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াকরণকে সমর্থন করা, সামুদ্রিক খাতে নারীর ক্ষমতায়ন এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করা।
আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা হচ্ছে জাতিসংঘের একটি বিশেষায়িত সংস্থা, যার দায়িত্ব হলো জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং জাহাজ দ্বারা সৃষ্ট সামুদ্রিক ও বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ প্রতিরোধ করা।
আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির কার্যক্রম জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে সহায়ক।
সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে আইএমওর কর্মপরিধি অনেক ব্যাপক। যেমন: জাহাজের নকশা, নির্মাণ, যন্ত্রপাতি, জনবল পরিচালনা। এই গুরুত্বপূর্ণ খাতটি যাতে নিরাপদ, পরিবেশবান্ধব, জ্বালানিসাশ্রয়ী ও সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করা হয় আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার মাধ্যমে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থার ১৭৬টি সদস্য রাষ্ট্র এবং তিনটি সহযোগী সদস্য রয়েছে। বাংলাদেশ ১৯৭৬ সালে এর সদস্যপদ লাভ করে।
কিউএনবি/অনিমা/০৮ জুলাই ২০২৫,/সকাল ১০:২৫