শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২২ অপরাহ্ন

আফ্রিকার নতুন ‘চে গুয়েভারা’ ইব্রাহিম ত্রাউরে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১১ জুন, ২০২৫
  • ৪৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার রাজনীতিতে তিনি এখন এক নতুন মুখ, এক নতুন শক্তির নাম। ইব্রাহিম ত্রাউরে। আধুনিক আফ্রিকায় নতুন এক রাজনৈতিক জাগরণের প্রতীক হয়ে উঠেছেন বুরকিনা ফাসোর এই তরুণ নেতা।

আফ্রিকার ভূরাজনীতিতে এক নতুন যুগের সূচনা করেছেন। মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দেশের ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন তিনি।

সামাজিক মাধ্যমে তার বিপ্লবী বক্তব্য, দেশপ্রেম ও দৃঢ় নেতৃত্ব তাকে কোটি মানুষের আইকনে পরিণত করেছে। অনেকেই তাকে দেখছেন আফ্রিকার নতুন প্রজন্মের প্রতীক হিসেবে—যিনি উপনিবেশিক উত্তরাধিকার ভেঙে এক নতুন আফ্রিকা গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুনভাবে সাজাচ্ছেন তিনি। সেই সঙ্গে নাড়া দিয়েছেন ভিমরুলের চাকে। গোটা সাহেল অঞ্চলে পশ্চিমা ঔপনিবেশিক শক্তির প্রভাবের বিরুদ্ধে একটি স্পষ্ট বার্তাও দিয়েছেন।

মালি ও নাইজারের সাম্প্রতিক সামরিক নেতাদের সঙ্গে একযোগে ফ্রান্সবিরোধী একটি জোট গড়ে তুলেছেন। এই ঘটনা আফ্রিকার নতুন রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিতে শুরু করেছে।

এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বুরকিনা ফাসোর তৎকালীন সামরিক শাসক পল-হেনরি সান্দাওগো দামিবাকে সরিয়ে দিয়ে ক্ষমতায় আসেন ক্যাপ্টেন ইব্রাহিম ত্রাউরে।

সেনাবাহিনীর এই বিদ্রোহের পেছনে প্রধান কারণ ছিল জিহাদি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দামিবার ব্যর্থতা। এই শাসক ছিলেন ফ্রান্সপন্থী। সেটাও তরুণ বুরকিনা নাগরিকদের মনে তীব্র ক্ষোভ তৈরি করেছিল।

ত্রাউরে শুরু থেকেই নিজেকে টমাস সাংকারার উত্তরসূরি হিসেবে তুলে ধরেছেন। সাংকারা ছিলেন এক বিপ্লবী নেতা। তাঁকে আফ্রিকার চে গুয়েভারা বলে ডাকা হয়। তিনি ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বুরকিনা ফাসো শাসন করেছিলেন। হয়ে উঠেছিলেন আফ্রিকান সমাজতন্ত্র ও স্বনির্ভরতার প্রতীক।

ত্রাউরের নেতৃত্বে বুরকিনা ফাসো সুস্পষ্ট অগ্রাধিকার দিয়েছে ‘জিহাদি’দের বিরুদ্ধে ‘জনগণকে সম্পৃক্ত করে’ লড়াই করার। সরকার একদিকে গণমিলিশিয়া সংগঠনের মাধ্যমে তরুণদের সশস্ত্র প্রতিরোধে যুক্ত করছে।

অন্যদিকে পশ্চিমা সামরিক উপস্থিতি থেকে ধীরে ধীরে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ত্রাউরে ফ্রান্সকে তাঁর দেশ থেকে তাদের বাহিনী সরিয়ে নিতে বলেন। বাতিল করেন ফ্রান্সের সঙ্গে করা আগের পুতুল শাসকদের সাক্ষর করা সশস্ত্র চুক্তি। এই সিদ্ধান্ত ছিল যুগান্তকারী।

সাহেল অঞ্চলে জনসাধারণের একটি বড় অংশ সামরিক সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে। যদিও গণতন্ত্রবাদীরা এতে উদ্বিগ্ন। তবে সাধারণ মানুষ এই পরিবর্তনে নিজেদের নিরাপত্তা, আত্মমর্যাদা ও স্বপ্ন দেখতে পাচ্ছে।

বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম সাংকারার মতো আদর্শবান নেতৃত্বের খোঁজে ছিল বহুদিন ধরে। সেই নেতা এখন তাঁরা ত্রাউরের মতো নেতাদের মধ্যে খুঁজে পাচ্ছেন।

ত্রাউরের মতো নেতাদের আফ্রিকার রাজনৈতিক মঞ্চে আসা কেবল একটা দেশ চালানোর ব্যাপার নয়। এই বাস্তবতা একই সঙ্গে একটি ইতিহাসের পুনরায় আবিষ্কার।

অনেক পুরোনো এক লড়াইয়ের আবার জেগে ওঠা। আফ্রিকানরা নিজেদের মতো করে বাঁচতে চান, নিজের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিজে গড়তে চান। সেই সঙ্গে চান নিজের সম্পদের ওপর নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা।

কিউএনবি/অনিমা/১১ জুন ২০২৫, /বিকাল ৪:০৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

August 2025
M T W T F S S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit