শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৬ অপরাহ্ন

সাংবাদিকদের কমিটমেন্ট হবে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের প্রতি: যুগান্তর সম্পাদক

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ মে, ২০২৫
  • ৫৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিশিষ্ট কবি, প্রাবন্ধিক ও দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, ‘বিগত ১৫ বছরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে, দরিদ্র হয়ে যাওয়ার ভয়ে এবং বেশি বেশি সম্পদের লোভে আমাদের সাংবাদিকতা পঁচে গেছে। একটি রাষ্ট্রের সরকার পরিবর্তন হলে সাংবাদিকরাও যে পালায় এটা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই অস্বাভাবিকতার প্রধান কারণ হলো সাংবাদিকের কমিটমেন্ট। বুধবার (২১ মে) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি। 

আবদুল হাই শিকদার বলেন, ‘যখন সাংবাদিক তার কমিটমেন্টের জায়গা থেকে দূরে সরে যায় তখনই সে দালাল, চাঁদাবাজ ও দুর্বৃত্তে পরিণত হয়। এজন্য সাংবাদিককে তার কমিটমেন্টের জায়গায় সতর্ক থাকতে হবে। এই কমিটমেন্ট হবে সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের প্রতি।’তিনি বলেন, ‘একটি রিপোর্টের কারণে যদি কোনো অপরাধী বেঁচে যায় তাহলে সেটি আমার মাথা ব্যাথার কারণ নয়। তবে যদি কোনো নিরপরাধ লোক ফেঁসে যায়, তাহলে সেটাই আমার মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মনে রাখবেন, নিরপরাধ লোককে ফাঁসানো সাংবাদিকতার কাজ নয়। সাংবাদিকতার কাজ হলো সত্যকে অন্বেষণ করা। তিনি গোয়েন্দাদের মতো সবসময় সত্য অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকবেন।’ 

যুগান্তর সম্পাদক বলেন, সাদাকে সাদা ও কালোকে কালো বলার মন মানসিকতা থাকতে হবে। এতে এক ধরনের সাহস লাগে। তবে বাংলাদেশের মতো দেশে সতর্কতার সঙ্গে সাহসের প্রয়োগ করতে হবে। কারণ গত ফ্যাসিবাদ আমলে প্রায় ৬৫ সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। এক সাংবাদিক হত্যার কোনো তদন্ত হয়নি। প্রায় দুই হাজার সাংবাদিক নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। এসব ঘটার কারণ হলো আমাদের রাজনীতি দূষিত হয়ে গেছে। রাজনীতি দূষিত হয়ে গেলে সমাজের সর্বদিক দূষিত হয়ে যায়। অনেক সময় পত্রিকাগুলো যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারে না। মিডিয়াগুলো বিগত ১৫ বছরের শিক্ষার কারণে এখনও অনেক সময় ভয় পায়। এই ভয়কে জয় করতে হবে। আপনি পরাজিত হবেন না, এক সময় না এক সময় জিতে যাবেন।’

কবি কাজী নজরুলের সাংবাদিকতা নিয়ে বিশিষ্ট এই নজরুল গবেষক বলেন, ‘সাহিত্যিকের পাশাপাশি গণমুখী সাংবাদিকতায় পথিকৃত পুরুষ কাজী নজরুল ইসলাম। নজরুল পূর্ববর্তী সময়ে সংবাদপত্র ছিল অনেকটা আমাদের বিগত ফ্যাসিবাদী আমলের ১৫ বছরের সংবাদপত্রের মতো। সে সময় সংবাদপত্র ব্রিটিশ শাসনকে শক্তিশালী করেছে। এরমধ্যে ‘ধুমকেতু’ পত্রিকা নিয়ে আসেন নজরুল। এর মাধ্যমে সাংবাদিকতার ভাষা ও বলার ভঙ্গি পরিবর্তন করে দিলেন তিনি। সংবাদপত্রের মধ্যে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতা চাওয়া প্রথম ব্যক্তি তিনি। নজরুল সাংবাদিকতা করতে গিয়েই জেল খেটেছেন।’

মতবিনিময়কালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রেজাউল করিম প্লাবন, ইবি প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তর প্রতিবেদক সরকার মাসুম, ইবি প্রেস ক্লাবের সভাপতি মুনজুরুল ইসলাম নাহিদ, সাধারণ সম্পাদক আজাহারুল ইসলাম, ইবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তাজমুল হক জায়িম ও সাধারণ সম্পাদক রাকিব মিয়া রিফাতসহ কাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। 

এ সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে আবদুল হাই শিকদারকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে সেমিনারে মূখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন আবদুল হাই শিকদার।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/২২ মে ২০২৫, /বিকাল ৫:৩৮

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit