শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

ভারতে স্থায়ী হতে চান বাংলাদেশের এই তারকারা!

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৭ মে, ২০২৫
  • ৫১ Time View

বিনোদন ডেস্ক : সত্তর, আশি কিংবা নব্বই দশকে কলকাতার শিল্পীরা ঢাকায় এসে কাজ খুঁজতেন। কারণ সেখানকার ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা তখন ছিল খুবই করুন। এছাড়া ওই সময় বাংলাদেশী সিনেমার বাজারও ছিল বেশ রমরমা। তাই বাধ্য হয়ে ক্যারিয়ার বাঁচাতে ঢাকামূখী হতেন তারা। একবিংশ দশকের দিকে পরিস্থিতি ঘুরে যেতে থাকে। ঢাকাই সিনেমা বাজার হারাতে শুরু করে, অন্যদিকে কলকাতা জমজমাট হয়ে উঠে। সময়ের পরিক্রমায় ঢাকা ও কলকাতা- দুই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অবস্থাই এখন খুব একটা সুবিধার নয়। তবু গত দুই বছর ধরে ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আর এই চেষ্টায় ‘মধু’ খেতে হাজির হচ্ছেন কলকাতার শিল্পীরা। 

কলকাতায় যাদের কাজ নেই, তারাই এখন ঢাকায় এসে নিজেদের আসন গড়ার চেষ্টা করছেন। উদাহরণস্বরুপ, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাই সিনেমায় কাজ করেছেন কলকাতার ইধিকা পাল, মিমি চক্রবর্তী, নুসরাত জাহান, কৌশানী মুখার্জী, সায়ন্তিকা, দর্শনা বণিকসহ অনেকে। এদের অনেকেরই এখন কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিতে তেমন ব্যস্ততা নেই। বলা যায়, বাংলাদেশী সিনেমা দিয়েই নিজেদের ক্যারিয়ারে ‘ইউটার্ণ’ ঘটাতে চাচ্ছেন। অবশ্য, এরমধ্যে কয়েকজন সফলও হয়েছেন। 

একইভাবে কলকাতার সিনেমায় কাজ করে সেদেশের দর্শক মাতিয়েছেন বাংলাদেশের জয়া আহসান, রাফিয়াত রশীদ মিথিলা, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্ব, তাসনিয়া ফারিণ, অপু বিশ্বাসসহ আরও অনেক দেশি তারকা। প্রায় সময় ওপারের বিভিন্ন আয়োজনে এসব শিল্পীদের কাজের স্বীকৃতিস্বরুপ দেয়া হয় সম্মাননা। দেশের শিল্পীরা বাইরে গিয়ে কাজ করছেন সেটা ইন্ডাস্ট্রির জন্য গর্বের। দেশের বাইরে শিল্পীদের কাজের বিষয়টি অনেকেই ইতিবাচকভাবেই দেখছেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে কলকাতার কাজ করা প্রসঙ্গে দেশের কয়েকজন শিল্পীকে নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে সমালোচনা। এর কারণ, কলকাতায় তারা আগে কাজ করলেও, বর্তমানে সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়ার চিন্তা-ভাবনা করছেন। আর তাতেই এক হাত নিতে শুরু করলেন নেটিজেনরা। তবে এর পেছনেও রয়েছে যথাযথ কারণ। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে এসব শিল্পী সমালোচনার মুখে পড়েছেন। আওয়ামী ঘনিষ্ঠ শিল্পী হওয়ায় ইন্ডাস্ট্রিতেও কাজের ব্যস্ততা নেই তাদের। বলা যায়, নিজেদের কর্মফল তাদের কোণঠাসা করে দিয়েছে। 

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময় থেকেই তাদের অনেকেই আড়ালে রয়েছেন। সুযোগ সন্ধানী এসব শিল্পী পেটের তাগিদে কাজের জন্য কলকাতাকেই এখন নিরাপদ ভাবছেন। তাই কাজের সুযোগের পাশাপাশি সেখানে স্থায়ী আবাস গড়ার চিন্তাও করছেন তারা। তাদের মধ্যে রয়েছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ, চিত্রনায়িকা নুসরাত ফারিয়া, অভিনেত্রী ও মডেল সোহানা সাবা।   

গত বছর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে আড়ালে চলে যান আরিফিন শুভ। ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ সিনেমায় শেখ মুজিবুর রহমানের চরিত্রে এক টাকা পারিশ্রমিকে অভিনয় করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিলেন তিনি। অবশ্য সেজন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুশী হয়ে পুরষ্কার হিসাবে পূর্বাচলে প্লটও উপহার দিয়েছিলেন। আওয়ামী সুবিধাভোগী এ নায়ক তাই ছাত্র আন্দোলনেও ছিলেন নীরব ভূমিকায়। বরং ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে সেসময় প্রকাশ্যে এনেছিলেন নিজের বিবাহ বিচ্ছেদের খবর। ৫ আগস্টের পর থেকে কোনো কাজ তো দুরের কথা, কখনো মিডিয়ার সামনেও আসেননি এ অভিনেতা। 

তবে আন্দোলন পরবর্তী গোপনে ভারত গিয়ে একটি ওয়েব সিরিজের শুটিং করেন তিনি। কলকাতায় সৌমিক সেনের পরিচালনায় ‘জ্যাজ সিটি’ নামের সিরিজটির শুটিং করতে গিয়েই সেখানে স্থায়ী হবার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বর্তমানে এ অভিনেতা কলকাতায় রয়েছেন। সেখানের একটি সংবাদ মাধ্যমে তিনি নিজেই স্থায়ী হবার বিষয়টি স্বীকার করেন। 

এসময়  নিজেকে একজন অরাজনৈতিক মানুষ হিসাবে দাবি করে শুভ বলেন, ‘সচেতনভাবেই আমি একজন অরাজনৈতিক মানুষ। অভিনয় ছাড়া কিছু করি না। কোনো ব্যবসা নেই, ব্যাকআপ নেই। যদি সত্যি সত্যি সমস্যায় পড়তাম, তাহলে কলকাতার বসে সাক্ষাৎকার দিতে পারতাম না।’ এদিকে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে এ অভিনেতার  ‘নীলচক্র’, ‘নূর’, ‘ঠিকানা বাংলাদেশ’, ‘লহু’ নামের সিনেমাগুলো। 

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই দলটির সমর্থক শিল্পীরা চাপের মধ্যে রয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম আরও এক অভিনেত্রী সোহানা সাবা। তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী। দলের হয়ে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, বহুল সমাালোচিত ‘আলো আসবেই’ নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য ছিলেন তিনি। ছাত্র আন্দোলন দমাতে আওয়ামী সুবিধাভোগি শিল্পীদের নিয়েই ভার্চুয়াল এ গ্রুপটি খোলা হয়েছিল। যেখানে ছাত্রদের গায়ে গরম পানি ঢেলে দেয়ার মত ভয়াবহ পরিকল্পনাও করা হয়। পট পরিবর্তনের পর এ অভিনেত্রীও রয়েছেন বিপাকে। এরইমধ্যে তার নামে হয়েছে হত্যা চেষ্টার মামলা। 

তবে এখনোও আড়ালো থাকা এ শিল্পী সামাজিক মাধ্যমে সরব। তিনিও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন দেশ ছাড়ার। স্থায়ী হতে চাচ্ছেন কলকাতায়। সেখানেই কাজের সুযোগও খুঁজছেন তিনি। কলকাতার নির্মাতাদের দৃষ্টি কাড়তে তাদের প্রশংসা করে কিছুদিন আগেই গণমাধ্যমে সাবা জানান, তিনি কলকাতার সিনেমার অন্ধ ভক্ত। সেখানে কাজের সুযোগ চান। কাজ পেলে সেখানেই স্থায়ী হবেন। 

অন্যদিকে ঢাকার চেয়ে কলকাতা ইন্ডাস্ট্রিতেই বেশি ব্যস্ত নুসরাত ফারিয়া। এ অভিনেত্রীও ছাত্রআন্দোলন পরবর্তী সময় থেকে বেশ চাপে রয়েছেন। সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ‘মুজিব’ সিনেমার শেখ হাসিনার চরিত্রে রূপদানকারী এ অভিনেত্রীকে। ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি দেশ ত্যাগ করেন। আন্দোলনকে ভিন্ন পথে পরিচালিত করতে বিদেশে বসে সামাজিক মাধ্যমে উত্তাপ ছড়িয়েছিলেন তার স্বল্পবসনা ছবি দিয়ে। দলের সুবিধা ভোগ করা এ শিল্পীও গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গোপনে দেশে ফেরেন। এরপর প্রায় কয়েকমাস ছিলেন ঘরবন্দী ও মিডিয়ার আড়ালে। তবে গত ঈদুল ফিতরে তার অভিনীত একটি সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলেও, সমালোচিত এ নায়িকার কারণে সে সিনেমার কপালেও জোটে ফ্লপ তকমা। 

এদিকে আর কোনো কাজেও তিনি যুক্ত হতে পারছেন না। স্বাভাবিকভাবেই তার নজরও এখন কলকাতার দিকেই। কাজের ব্যস্ততা বাড়লে সেখানেই হতে পারেন স্থায়ী। এক সাক্ষাৎকারে দেশীয় নির্মাতার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে জানান, দেশের নির্মাতারা তাকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেননি। সে তুলনায় কলকাতার নির্মাতাদের এগিয়ে রেখেছেন এ অভিনেত্রী।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৭ মে ২০২৫, /রাত ১১:১২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit