সোমবার, ০২ জুন ২০২৫, ০৭:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
চৌগাছায় বড় ভাইয়ের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল ছোট ভাইয়ের মেঘনায় ট্রলার ডুবি ২দিন পরও খোঁজ মেলেনি পুলিশ সদস্য সাইফুলের,অপেক্ষায় স্বজনেরা বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার বিনিয়োগকারী ‘পাইপলাইন’ গঠন করছে: সালেহউদ্দিন ‘ও সুন্দরী’ গানের লেখক বললেন পর্দায় নাচা চ্যালেঞ্জিং ভিসা বিতর্কের মধ্যেই হার্ভার্ডের চীনা স্নাতকের বক্তব্য: প্রশংসা-সমালোচনার ঢেউ সকালে ঢাকায় এসে বিকালে অনুশীলনে হামজা বড় আকারের গরু নিয়ে বিপাকে খামারিরা এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ক্লাসেন চলছে হজের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, সৌদি পৌঁছেছেন ১৩ লাখ মুসল্লি প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৬টি নতুন ডিজাইনের নোটের ছবি হস্তান্তর

মুমিনের জীবনে প্রকৃত সুখ ও সফলতা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৪০ Time View

ডেস্ক নিউজ : মানুষ জন্ম থেকেই নিজের ভেতরে একটা শূন্যতা নিয়ে বেড়ে ওঠে। এই শূন্যতা জাগতিক কিছুর জন্য নয়, বরং মানুষের ভেতরের পবিত্র সত্তার সঙ্গে সৃষ্টিকর্তার সংযোগের এক তাড়না থেকে এই শূন্যতার জন্ম। পৃথিবীতে একজন ঘুমন্ত মানুষেরও যেমন অক্সিজেন প্রয়োজন হয়, ঠিক তেমনই এই দেহে রুহ প্রবেশের পর থেকে প্রয়োজন স্রষ্টার ভালোবাসা। সেই প্রয়োজনটা কি কখনো অনুভব করতে পারি?

জীবন একটি সফর। যার শুরু মায়ের গর্ভে, আর শেষ মাটির বুকে নয়, বরং পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে। দুনিয়ার এই অস্থায়ী যাত্রা কেবলই একটি পরীক্ষা; আমাদের প্রতিটি কাজ, প্রতিটি সিদ্ধান্ত—সবই আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্য নির্ধারণে ভূমিকা রাখে। আমাদের অনেকের জীবনের উদ্দেশ্য থাকে ভালো রেজাল্টের কিছু সার্টিফিকেট, উন্নত ক্যারিয়ার, বিলাসবহুল জীবনযাপন, স্ত্রী—এ বিষয়গুলোর পেছনেই যে পৌনঃপুনিক ছুটে চলা। ছুটে চলার কারণ পার্থিব সুখ।

এই পার্থিব সুখই যেন জীবনের গন্তব্য। আসলেই কি তাই? এগুলো পূরণ হয়ে গেলেই কি একজন মানুষ সুখী হতে পারে? হয়তো জীবনের অংশগুলো তুলে ধরে বলবে—‘আমার সব কিছু আছে, আমি তো ভালোই আছি।’

কিন্তু সত্যিই কি সেই মানুষগুলো ভালো থাকে? স্রষ্টার আনুগত্য ছাড়া কেউই সুখী হতে পারে না। সেটা কোরআনে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন—‘আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জন্য হবে নিশ্চয়ই এক সংকুচিত জীবন।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)

যে জীবনে আল্লাহর আনুগত্য থাকে না, সে জীবন যতই স্বাভাবিকভাবে চলুক না কেন, সে জীবনে সুখী হতে পারবে না। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। আর কিয়ামতের দিন তোমাদের পুরোপুরি প্রতিদান দেওয়া হবে…।’

(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

এই আয়াত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের আসল গন্তব্যের কথা। সার্টিফিকেট, উন্নত ক্যারিয়ার, স্ত্রী, বাড়ি, বিলাসবহুল জীবনযাপন—এগুলো জীবনের অন্যতম অংশ।

এই অংশগুলো হলো জীবনের প্রকৃত গন্তব্যে সফল হওয়ার উপকরণ মাত্র। অথচ আমরা এই উপকরণ অর্জনকেই জীবনের লক্ষ্য বানিয়ে রেখেছি। পড়াশোনা, ক্যারিয়ার, সংসার বা দায়িত্বকে জীবনের উদ্দেশ্য বানিয়ে হয়তো আমাদের প্রচেষ্টার সব পূরণ হবে। এই উদ্দেশ্য হয়তো পৃথিবীতেই পূরণ হয়ে যাবে।
তখন বেঁচে থাকার জন্য আর কী উদ্দেশ্য খুঁজব?

তখন হয়তো বেঁচে থাকার আর কারণ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

মানুষের জীবনে এমন উদ্দেশ্য থাকা উচিত, যা এ জীবনে অর্জন সম্ভব নয়; শুধু পাথেয় কুড়িয়ে যাবে আর প্রত্যাশ্যা রাখবে এবং এ উদ্দেশ্যে পৌঁছানোর জন্য জীবনের প্রত্যেক অংশকে সমান গুরুত্ব দেবে।

পৃথিবীতে মানুষের অসুখী হওয়ার অন্যতম কারণ হলো নিজের জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে জেনেও হয়তো এ বিষয়ে উদাসীনতা। বাইরে থেকে দেখতে মুসলিম হলেও আমাদের মাঝে যেন কত বৈচিত্র্য!

আমাদের স্রষ্টা এক, আমাদের বিশ্বাস এক, আমাদের রাসুল এক হওয়া সত্ত্বেও আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য যেন ভিন্ন! আমরা ভুলে যাই আমাদের প্রকৃত গন্তব্যের কথা।

জীবনের প্রকৃত এই গন্তব্য যদি মস্তিষ্ক মননে ধারণ করতে পারত তাহলে আর সমাজে নিত্যদিনের ঘটনার মধ্যে ধর্ষণ, জুলুম, ব্যভিচার, আত্মহত্যা, খুনের মতো এত বড় বড় অপরাধ খবরের শিরোনাম হতো না।

দুনিয়া কি তবে উপেক্ষা করব?

না, ইসলাম দুনিয়াকে অস্বীকার করে না, বরং এটাকে ব্যবহার করতে বলে আখিরাত অর্জনের জন্য। সার্টিফিকেট, উন্নত ক্যারিয়ার, হালালভাবে উপার্জন, পরিবার-পরিজনের দায়িত্ব পালন—সবই ইবাদতের অংশ হতে পারে, যদি নিয়ত হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি। এর পাশাপাশি স্মরণ রাখতে হবে চিরস্থায়ী জীবনের কথা। রাসুলুল্লাহ (সা.) দুনিয়ার জন্য বেশি চিন্তা করতে বলেননি। তিনি বলতেন—‘তুমি দুনিয়ায় এমনভাবে থাকো যেন তুমি এক পথিক, অথবা এক ভ্রমণকারী, যিনি পথের ছায়ায় কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিচ্ছেন।’ (বুখারি)

জীবন হলো পথ, আমরা হলাম পথিক। পথিকের তো স্থায়ী ঘর হয় না, তাঁর চোখ থাকে গন্তব্যে। আমরাও যেন এমন পথিক হই, যাদের চোখ জান্নাতের দিকে। একজন পথিক যেমন জানে তার গন্তব্য রয়েছে, তেমনি আমাদেরও মনে রাখতে হবে—আমাদের চূড়ান্ত গন্তব্য জান্নাত। আল্লাহ তাআলা ঘোষণা

করেন : ‘সেই দিন যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে, সেই-ই প্রকৃত সফলকাম।’

(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৮৫)

অর্থাৎ চূড়ান্ত সফল আমরা তখনই হতে পারব, যেদিন তাকওয়া, ইখলাস, ইবাদতের সাহায্যে পাথেয় সংগ্রহ করে আমরা জান্নাত লাভ করতে পারব।

কিউএনবি/অনিমা/৩০ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ১০:১৭

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit