মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৪০ পূর্বাহ্ন

জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে ৩.৩ শতাংশে দাঁড়াতে পারে: বিশ্বব্যাংক

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৪৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। আজ বুধবার (২৩ এপ্রিল) প্রকাশিত সংস্থাটির দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট: ট্যাক্সিং টাইমস’-এ এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আর্থিক চাপের কারণে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এ বছর উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসতে পারে। যদিও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়ে ৪ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাবে, তবু এটিও পূর্ববর্তী পূর্বাভাসের চেয়ে কম।

বিশ্বব্যাংক মনে করছে, দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি কিছুটা থমকে গেছে। ২০২৫ সালে অঞ্চলটির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়াতে পারে, যা গত অক্টোবরে করা পূর্বাভাসের চেয়ে ০.৪ শতাংশ কম। তবে ২০২৬ সালে এই প্রবৃদ্ধি আবার বাড়তে পারে ৬ দশমিক ১ শতাংশে।

প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশেই প্রবৃদ্ধি কমছে। ভারতের ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা পরের বছর কমে হতে পারে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। আফগানিস্তানে আন্তর্জাতিক সহায়তা হ্রাস পাওয়ায় প্রবৃদ্ধি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নেমে আসবে ২ দশমিক ৫ শতাংশে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আরও কমে ২ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে।

ভুটানে কৃষি খাতের দুর্বলতার কারণে প্রবৃদ্ধি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হবে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ, তবে পরের বছর জলবিদ্যুৎ খাতে গতি এলে এটি বাড়বে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে। মালদ্বীপে নতুন বিমানবন্দর টার্মিনাল উদ্বোধনের কারণে ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তবে সেখানে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।

নেপালে প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব দেখা যাবে প্রবৃদ্ধির ওপর। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্যা ও ভূমিধসের কারণে প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়াবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে, যা পরের বছর কিছুটা বেড়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশ হতে পারে। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ শতাংশ এবং পরের বছর ৩ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে বলে ধারণা করছে বিশ্বব্যাংক।

শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ঋণ পুনর্গঠনের কারণে ২০২৫ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। তবে ২০২৬ সালে তা কিছুটা কমে ৩ দশমিক ১ শতাংশে দাঁড়াবে।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইজার বলেছেন, ‘গত এক দশকে একাধিক ধাক্কা অঞ্চলটিকে দুর্বল করে দিয়েছে। এখনই সময় বাণিজ্যের দ্বার উন্মুক্ত করা, কৃষি খাত আধুনিকীকরণ এবং বেসরকারি খাতকে আরও সক্রিয় করে দ্রুত প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার।’

প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিকে আরও সহনশীল করতে রাজস্ব বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশে করহার তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও প্রকৃত কর আদায়ের হার অনেক কম। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অঞ্চলটির গড় সরকারি রাজস্ব ছিল জিডিপির মাত্র ১৮ শতাংশ, যেখানে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে এটি ২৪ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওন্সর্জ মনে করেন, রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি দক্ষিণ এশিয়ার আর্থিক দুর্বলতার মূল কারণ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এই সময়ে তা স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য হুমকিস্বরূপ।

প্রতিবেদনে করব্যবস্থার সংস্কার, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, বিধিমালা সরলীকরণ, প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রসার, কর অব্যাহতি হ্রাস ও দূষণমূল্য আরোপের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।

কিউএনবি/অনিমা/২৩ এপ্রিল ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

June 2025
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit