আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইতালির রাজধানী রোমে দ্বিতীয় ধাপের পরোক্ষ আলোচনার আগে ইরান ইন্টারন্যাশনালের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। প্রথম বৈঠকের এক সপ্তাহ পর শনিবার (১৯ এপ্রিল) ওমানের মধ্যস্থতায় ইতালির রোমে বৈঠকে বসছেন ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানে প্রথম পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। 
ওই বৈঠক ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ হয়েছে বলে দাবি উভয় পক্ষের। তবে তিন ঘণ্টার বৈঠকে আলোচনার বিস্তারিত খোলাসা করেনি কেউই। তবে ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, প্রথম বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে তিন ধাপের একটি চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। দেশটির অন্তত তিন কূটনীতিকের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের কাছে লিখিতভাবে তিন ধাপের পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
তেহরানের ওই প্রস্তাবে বলা হয়, পরিকল্পনার প্রথম ধাপে তেল রফতানির সুযোগ ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া ৩.৬৭ শতাংশে নামিয়ে আনবে। ইরান এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশের বেশি মাত্রার ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে। পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ৯০ শতাংশের কাছাকাছি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন।
 
দ্বিতীয় ধাপে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইরানের ওপর থেকে আরও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং তেহরানের ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকতে ব্রিটেন, জার্মানি ও ফ্রান্সকে রাজি করায়, তাহলে ইরান স্থায়ীভাবে উচ্চ-স্তরের সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করবে এবং পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার পরিদর্শনের অনুমতি দেবে।
 
এই ধাপে ইরান ‘অ্যাডিশনাল প্রোটোকল’ বাস্তবায়নেও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হবে, এটি একটি সম্পূরক চুক্তি যা জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থাকে এমন স্থানগুলোতে আকস্মিক পরিদর্শন করার অনুমতি দেবে যেখানে সংস্থাটি ঘোষণা করেনি। ট্রাম্প তার ক্ষমতার প্রথম মেয়াদে ২০১৮ সালে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আগের আন্তর্জাতিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তেহরান এই সম্মতি বন্ধ করে দেয়।
 
তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে ট্রাম্প সরকারের পাশাপাশি মার্কিন কংগ্রেসকে পারমাণবিক চুক্তি অনুমোদন করতে হবে এবং ওয়াশিংটনকে প্রাথমিক ও গৌণ উভয় ধরণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। এই ধাপে ইরান তার উচ্চ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ তৃতীয় কোনো দেশে স্থানান্তর করবে।  ইরান ইন্টারন্যাশনালের দাবি, বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচির উত্থাপিত প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ। 
ইরান শুরু থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা অস্বীকার করে আসছে। তবে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা, তেহরান এখনও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রে কেউ কেউ বলছেন, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে, ইরানকে অবশ্যই পারমাণবিক চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে, নতুবা আক্রমণের মুখোমুখি হতে হবে।
 
 
কিউএনবি/আয়শা/১৯ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ৮:৩০