শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম

বনি ইসরাইল অন্তহীন অবাধ্যতায় অভিশপ্ত এক জাতি

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১৬৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : হজরত মূসা (আ.)-এর নেতৃত্বে তারা যখন ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্তি পায়, তখন আল্লাহ তাদের জন্য বিস্ময়কর সব নিদর্শন প্রকাশ করেন। সমুদ্র ফেটে যায়, আকাশ থেকে খাবার নামে, পাথর ফেটে ঝরনা প্রবাহিত হয়। কিন্তু এসবের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ তো দূরে থাক, তারা বরং মূর্তিপূজার মতো জঘন্য কুকর্মে জড়িয়ে পড়ে। যখন মূসা (আ.) তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলতে যান, তখন তারা তার অনুপস্থিতিতে গলানো সোনার বাছুর তৈরি করে তার পূজা শুরু করে বসে। তারা বলেছিল: “এই বাছুরই আমাদের উপাস্য!” কী ভয়াবহ অবাধ্যতা!

তাওরাত যখন নাজিল হলো, তারা তা গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানায়। আল্লাহ তখন পাহাড় উঁচু করে তাদের উপর ঝুলিয়ে দেন, যেন তারা ভয় পেয়ে নেয়ামত গ্রহণ করে। এমনকি এরপরও তারা নবীর প্রতি আস্থা রাখেনি, বরং মূসা (আ.)-এর উপর অশালীন অভিযোগ তোলে—তাকে অপারগ, এমনকি শারীরিক ত্রুটিসম্পন্ন বলেও অপবাদ দেয়।
 
তাদের সীমালঙ্ঘনের আরেকটি নিদর্শন দেখা যায় শনিবারের ঘটনায়। আল্লাহ তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, শনিবার মাছ শিকার করা নিষিদ্ধ। কিন্তু তারা চতুরভাবে ফাঁকি দেওয়ার পথ বের করে। তারা শুক্রবার জাল ফেলে দিত, আর রবিবার তা তুলে নিত, যেন আল্লাহকে ধোঁকা দিতে পারে। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল, আল্লাহ ধোঁকায় পড়েন না—বরং তিনি সর্বজ্ঞ ও সর্বদ্রষ্টা। এর পরিণতিতে তাদের একাংশকে আল্লাহ বানর ও শুকরে রূপান্তর করে দিয়েছিলেন।
এ জাতি এতটাই নির্লজ্জ ও সত্যবিদ্বেষী ছিল যে, তারা অপবিত্র কথা বলত পবিত্র মানুষের বিরুদ্ধে। হযরত মারিয়াম (আ.)-এর ওপর তারা চরিত্রহরণের জঘন্য অপবাদ দেয়, যার পবিত্রতা স্বয়ং আল্লাহ কুরআনে ঘোষণা করেছেন। এদের চক্রান্তের ধারাবাহিকতায় হযরত ঈসা (আ.)-কেও তারা হত্যার জন্য চক্রান্ত করে, যদিও আল্লাহ তাঁকে রক্ষা করেন।
 
এই অবাধ্যতার ফলেই আল্লাহ তাঁদের উপর গজব নাজিল করেন। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে তাদের বিতাড়িত করা হয়। বেবিলন, রোম, স্পেন, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড—প্রতিটি জায়গা থেকে তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়। কারণ তারা ছিল বিশ্বাসঘাতক, চক্রান্তকারী, এবং মানবতা ও ধর্মবিরোধী কাজের উদঘাটক। তারা এক সময় চিরকালীন রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়ে, যাযাবরের মতো এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়ায়।
 
বিশ্ব ইতিহাসের একটি করুণ অথচ শিক্ষণীয় অধ্যায় হলো—হিটলারের সময় জার্মানিতে বনি ইসরাঈলের ওপর সংঘটিত নিষ্ঠুরতা। হিটলার তাদেরকে ‘জাতীয় নিরাপত্তার শত্রু’ আখ্যা দিয়ে লাখো ইহুদীকে বন্দী করেন, গ্যাস চেম্বারে হত্যা করেন, নাৎসি শাসনের নিষ্ঠুরতার শিকার বানান। ইতিহাসবিদদের মতে, ইহুদীদের ব্যাঙ্কিং, মিডিয়া ও অর্থনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ, জার্মান সমাজে চক্রান্তমূলক কর্মকাণ্ড এবং সাধারণ জনগণের প্রতি প্রতারণামূলক আচরণই হিটলারের এই উগ্র মনোভাবের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
 
তবে হিটলারের বর্বরতা সমর্থনযোগ্য না হলেও  ইতিহাস বলছে, এরা স্বীয় কৃতকর্মের কারণে একবার নয়, বারংবার গজবের শিকার হয়েছে। তাও ভুলেনি। আজও তারা সেই পুরনো চরিত্র নিয়েই বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করছে, ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, শিশু হত্যা করছে, পবিত্র আল-আকসা মসজিদে আগ্রাসন চালাচ্ছে। আর তথাকথিত ‘সভ্য’ বিশ্ব নিরব দর্শক হয়ে বসে আছে।
 
তাদের ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায়েই আছে একটাই বার্তা: আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের শেষ পরিণতি ধ্বংস। নবীদের হত্যা করে, সত্যকে বিকৃত করে, পবিত্র মানুষদের প্রতি অপবাদ দিয়ে, চক্রান্ত আর প্রতারণা করে একটি জাতি কখনো আল্লাহর রহমতের অধিকারী হতে পারে না।

 

কিউএনবি/আয়শা/১৩ এপ্রিল ২০২৫,/রাত ১১:৫২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit