 
																
								
                                    
									
                                 
							
							 
                    বাদল আহাম্মদ খান ,নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নির্যাতনের পর মুরাদ মিয়া (৩৬) নামে এক যুবক মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার সেজামোড়া সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। তবে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুরাদ মিয়া ওই এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে।
নিহত মুরাদ মিয়ার স্ত্রী রত্না বেগম অভিযোগ করে বলেন, সীমান্তের কাছে আমাদের জমি আছে। সেখানে আমরা সবজি চাষ করি। সকালে আমি সেই সবজি ক্ষেতে গিয়েছিলাম। বিকেলে আমার স্বামী লিচু গাছে পানি দিয়ে বললো আমি জমি দেখে আসি। দীর্ঘক্ষণ পর না আসায় আমি বিকেল ৫টার দিকে তাকে খোজাখুজি করি। কিন্তু তাকে আমি পাইনি। পরে একজন ফোন দিয়ে জানায় বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় আমি ঘটনাটি জানাই, তারপরও তার সন্ধ্যান পাচ্ছিলাম না মাগরিবের নামাজের পরেও। এরপর একটি বাচ্চা এসে জানায় সিমান্তে তাকে মারধোর করে ফেলে দিয়ে গেছে। আমরা তাকে পেয়ে জিজ্ঞেস করি করলে জানায় বিএসএফ তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করেছে, আহত অবস্থায় তাকে বিজিবি ধানক্ষেতে নিয়ে রাখে। পরে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে মারা যান।
বড় বোন আমেনা খাতুন বলেন, সন্ধ্যায় বিজিবি খবর দিলে ধানক্ষেত থেকে আমার ভাইকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে তাকে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখান থেকে এম্বুলেন্সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। সীমান্ত পিলার থেকে আমাদের বাড়ি ১৫০ গজ দূরে। আমরা ভাই সীমান্তে জমিতে চাষ করে। এছাড়াও বাজারে তার ব্যবসা রয়েছে। আমার ভাইয়ের একটি বাচ্চা প্রতিবন্ধী। এখন এই পরিবারের দেখাশোনা কে করবে? বিএসএফ আমার ভাইকে ডেকে নিয়ে মারধোর করে হত্যা করেছে। এই ঘটনার বিচার চাই।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সফিউল্লাহ আরাফাত জানান, জরুরি বিভাগে নিয়ে আসার পর আমরা সাথে সাথে ইসিজি করি। ইসিজি অনুযায়ী তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয় এবং পুলিশকে জানানো হয়।তবে বিজিবি ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফারাহ্ মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, বিএসএফ জিরো লাইন অতিক্রম করার কথা নয় বা করবে না। মুরাদ নামে এক ব্যক্তি অবৈধ ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে আবার ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু কি কারণে তিনি সেখানে গিয়েছেন বা কে তাকে ধরে নিয়ে গেছে এবং মেরেছে তা এখনো জানা যায়নি। তিনি এসে একটি গাছের নিচে বসে ছিলেন। তখন আমাদের টহল টিম তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানিয়ে ছিলেন, অবৈধ ভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ফিরে এসেছেন। তখন একজনের মাধ্যমে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাকি বিএসএফের সাথে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।
কিউএনবি/অনিমা/০৯ এপ্রিল ২০২৫,/বিকাল ৪:০৩