উপজেলায় সম্প্রতি ছয়টি হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এসব হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কোনো আসামী আটক করতে পারিনি পুলিশ। ১৬ মার্চ শিশু ধর্ষণ চেষ্টার মামলা হয়েছে থানায়। এই মামলার এক মাত্র আসামীকে আটক করতে পারিনি পুলিশ। পুলিশের তৎপরতা না থাকায় উপজেলায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোর চক্রের সদস্যরা। ১৪ মার্চ রাতে উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের যুবলীগ নেতা আজগার আলী যুবদল কর্মী ইমরানকে গুলি করে আহত করে। এঘটনায় জনগন পিস্তল উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দেয়। কিন্তু অদৃশ্য কারনে আজগারকে আটক করেনি পুলিশ। আজগারকে পালিয়ে যাওয়ার সহযোগীতার করার অভিযোগ রয়েছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে।
উপজেলায় বেপরোয়া, চুরি, ধর্ষণ, হত্যা প্রতিনিয়ত বেড়ে যাওয়ায় নাগরিকদের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক। এমনকি কোথাও কোথাও অপরাধীদের গ্রেপ্তার অভিযানে উপজেলায় হামলা শিকার হচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। এমন প্রেক্ষাপটে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর উপর থেকে আস্থা হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।আইন শৃঙ্খলা উন্নতির জন্য সম্প্রতি অপরাধ দমনে ডেভিল হান্ট নামে অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। আর এই অভিযানে এখন পর্যন্ত চৌগাছায় কোনো ডেবিল আটক হয়নি। উপজেলায় কিছু অ¯্রধারি চিহ্নিত সন্ত্রাসী রয়েছে। তারা এখনো উপজেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সন্ত্রাসীরা যেই দলেরই হোক না কেন প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
জানা যায় ৫ আগষ্টের পরে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুই একজন শীর্ষ নেতা গা ঢাকা দিলেও বেশির ভাগ নেতারা দাবিয়ে বেড়াচ্ছে মাঠে ময়দানে। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন থেকে উপজেলা প্রশাসনের সকল দপ্তর নেপথ্যে এখনো নিয়ন্ত্রন করছে আওয়ামীলীগের নেতারা। পতিত শেখ হাসিনা সরকারের সময় মিটিং-মিছিলে শোডাউনে প্রদর্শিত অস্ত্র এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আওয়ামীলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া দিতো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেও দেখা গেছে আওয়ামী ক্যাডাররা অস্ত্র উঁচিয়ে মিছিল করছে। স¤প্রতি এসব অস্ত্র হাত বদল হচ্ছে বলেও জানা গেছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে বিদেশী রিভলবার, শটগান, কার্টুজ, মেশিনগান, ককটেল, রামদা, চাপাতি, শামুরাই, বড় ছুরি, হকিস্টিক ও রড। এখন এসব অস্ত্র দখলে মরিয়া দুষ্কৃতকারীরা। অদৃশ্য কারনে অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের আটকে কোনো ভুমিকা রাখছেনা চৌগাছা থানার পুলিশ।
৩ জানুয়ারী রাতে উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে গভীর রাতে বোমা ফাটাই আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আতংকের সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসী জানান, চৌগাছার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের মৃত দাউদ হোসেনের ছেলে টিটোন হোসেন (৩০), সলেমান হোসেনের ছেলে আব্দুল হোসেন (৩২) তার ভাই মনি হাসান (২৮) এবং একই এলাকার মসলেম উদ্দীনের ছেলে পিন্টু রহমান (৪০) নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বিকালে হাফিজুর রহমান নামের এক জনকে পিটিয়ে আহত করে সন্ত্রাসীদের অন্য একটি গ্রæপের সদস্যরা। এ নিয়ে সন্ত্রাসীদের দুই গ্রæপের মধ্যে নিজেদের অবস্থান জানান দেওয়ার জন্য রাতে এলাকায় দফায় দফায় বোমা ফাটায়।
একাধিক মাদক মামলার আসামী উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ওরফে খোকন (৪০)। ৪ অক্টোবর রাতে মাদক ব্যবসায়ের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে গুলি বিদ্ধ হয় খোকন।খোকন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ১০৫ নং ওয়ার্ড থেকে চিকিৎসা নিয়ে সে যাত্রা বেঁচে যান।সন্ত্রাসীরা সাংবাদিক এম এ রহিমকে হত্যা করতে তার বাড়ীতে বেপরোয়া ভাবে বোমা হামলা চালায়। সে যাত্রায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান। উপজেলার কয়েকজন বিশেষাজ্ঞ জানিয়েছেন, উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত কিছু চিহ্নিত আগ্নেয় অস্ত্রধারী ক্যাডার রয়েছে। তাদের একজনও আটক হয়নি। তাছাড়া আওয়ামীলীগের যে সকল নেতার অপরাধের সাথে জড়িত ছিল তারও নিরাপদে রয়েছেন। আওয়ামী নেতারা নিরাপদে থেকে সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। অপরাধ দমনে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে মদোদ দাতাদের আটক করা খুবই জরুরী বলে মনে করেন তারা।
কিউএনবি/অনিমা/২১ মার্চ ২০২৫,/সন্ধ্যা ৬:৪২