রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০৩ অপরাহ্ন

বিদেশে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেবে মালয়েশিয়া

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১২ মার্চ, ২০২৫
  • ৪৭ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মালয়েশিয়ার আদালতের এক ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়েছে। এখন থেকে বিদেশে জন্ম নেওয়া শিশুদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। ফলে দেশটির মায়েরা বিদেশে জন্ম নেওয়া তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব প্রদানের অধিকার অর্জন করলেন। গত সোমবার ঘোষিত এই রায়ের ফলে ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের মালয়েশিয়ার নাগরিকত্ব লাভের পথ সুগম হয়েছে। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি, যা অনেক পরিবারকে এখনো আইনি অনিশ্চয়তায় রেখেছে।

বারনামাসহ দেশটির প্রায় সবগুলো সংবাদমাধ্যম ও সিঙ্গাপুর-বেজড মাল্টিন্যাশনাল নিউজ চ্যানেল সিএনএ এবং সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, চার বছর ধরে চলা এই আইনি লড়াইয়ের মূল কেন্দ্র ছিল লিঙ্গবৈষম্য। মালয়েশিয়ার পুরুষরা বিদেশে জন্ম নেওয়া সন্তানদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব দেওয়ার সুবিধা পেয়ে আসলেও নারীরা এতদিন এই অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলেন। ২০২০ সালে ‘ফ্যামিলি ফ্রন্টিয়ার্স’ নামের একটি অধিকার সংস্থা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন মা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে, যার প্রেক্ষিতে এই ঐতিহাসিক রায় আসে।

এতদিন নাগরিকত্বের স্বীকৃতি না পাওয়ায় অনেক শিশু সরকারি শিক্ষা, চাকরির সুযোগ এবং স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি মালয়েশিয়ায় জন্মগ্রহণ করেও তারা রাষ্ট্রহীনতার শিকার হয়েছে। কারণ দেশটি দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃতি দেয় না। গত সোমবারের সমঝোতার মাধ্যমে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে যে, মালয়েশিয়ার নারীদেরও পুরুষদের মতো সমান অধিকার থাকা উচিত। আদালতের এই সিদ্ধান্ত সংবিধান সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে এসেছে, যা ইতোমধ্যে পার্লামেন্টে পাস হয়েছে তবে এখনো কার্যকর হয়নি।

ফ্যামিলি ফ্রন্টিয়ার্স-এর প্রধান আইনজীবী গুরদিয়াল সিং নিজার বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়, যা দশকের পর দশক ধরে চলে আসা বৈষম্যের অবসান ঘটিয়েছে। ফ্যামিলি ফ্রন্টিয়ার্সের সভাপতি আদলিন আদম তেওহ, যিনি এই মামলার অন্যতম আবেদনকারী তিনি সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টকে জানিয়েছেন, আজ আমরা উদযাপন করছি। আমরা উদযাপন করছি প্রতিটি মালয়েশিয়ান মা এবং তাদের সন্তানের জন্য যারা আর আমাদের মতো বৈষম্যের শিকার হবে না।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট আরও জানিয়েছে, সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ৩ হাজারেরও বেশি নাগরিকত্ব আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ অনুমোদন পেয়েছে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার ফলে এখনো বহু পরিবার সমস্যায় রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রশাসন গত অক্টোবরে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ করেছিল। তবে এতে অনাথ ও পরিত্যক্ত শিশুদের স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব না দেওয়ার বিতর্কিত বিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল। ফলে পরবর্তীতে এই বিতর্কিত বিধান বাতিল করা হলেও স্থায়ী বাসিন্দাদের সন্তান এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিশুদের নাগরিকত্বের সুযোগও কমিয়ে দেওয়া হয়, যা শিশু অধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

এদিকে ফ্যামিলি ফ্রন্টিয়ার্স দাবি জানিয়েছে যে, মালয়েশিয়ার নারীদের বিদেশি স্বামীদের জন্য স্থায়ী বাসিন্দার আবেদনের শর্ত পাঁচ বছর থেকে কমিয়ে তিন বছর করা হোক, যাতে পরিবারগুলোর আর্থিক ও সামাজিক চাপ কমে। এই রায় মালয়েশিয়ার নারীদের জন্য একটি বড় জয় হলেও প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের নাগরিকত্ব সংকটের সমাধান এখনো বাকি রয়ে গেছে। তবে অধিকার সংগঠনগুলো এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে দ্রুত সমাধান চেয়েছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১২ মার্চ ২০২৫,/দুপুর ১:৫৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit