শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

শান্তিচুক্তির জন্য জেলেনস্কিকে পদত্যাগ করতে হতে পারে!

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ৪১ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে আলোচনার পথে নানা বাধা আসছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অবস্থান। 

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস রবিবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ইউক্রেনে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করতে হলে জেলেনস্কিকে পদত্যাগ করতে হতে পারে। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়ালৎস বলেন, ‘শান্তিচুক্তি সফল করতে একজন নতুন নেতা দরকার। এমন একজন ব্যক্তি, যিনি যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া—উভয়ের সঙ্গেই কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ বন্ধ করবেন।’

হোয়াইট হাউসে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়, চাপে জেলেনস্কি 
এই মন্তব্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠক। ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে সেদিন আলোচনার বদলে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। আলোচনার উদ্দেশ্য ছিল একটি খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষর করা, যা যুক্তরাষ্ট্রকে ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদের ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ দেবে। কিন্তু আলোচনার টেবিলেই ব্যাপারটি জটিল হয়ে ওঠে, ফলে চুক্তিটি আটকে যায়। বিতণ্ডার সূত্রপাত হয় যখন জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলতে শুরু করেন, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে মস্কোর সঙ্গে একটি চুক্তির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেখানে নিরপেক্ষ ভূমিকায় না থেকে ট্রাম্পের উচিত কিয়েভকে আরও বেশি সমর্থন করা। তখন ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন না এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে যেসব ছাড় দেওয়া প্রয়োজন, তা দিতে ইচ্ছুক নন।

শান্তি আলোচনা থেকে ইউক্রেনকে বাদ দিচ্ছেন ট্রাম্প? 
ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও ফোনালাপ করেছেন ট্রাম্প। তবে এই আলোচনায় ইউক্রেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, এটি কিয়েভের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও অবশ্য এই পরিস্থিতিতে কিছুটা আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, শান্তিচুক্তির বিষয়ে আলোচনা আবার শুরু হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি জেলেনস্কি বুঝবেন যে, আমরা শুধু যুদ্ধের আগুনে ঘি দিতে চাই না, বরং এটি বন্ধ করার চেষ্টা করছি।’

জেলেনস্কির দোটানা: যুদ্ধ নাকি খনিজ সম্পদ চুক্তি? 
এদিকে জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ সম্পদ চুক্তি স্বাক্ষর করতে আগ্রহী। রবিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে তিনি বিবিসিকে জানান, চুক্তিটি স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা এই চুক্তি করতে প্রস্তুত। যদি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো রাজি থাকে, তাহলে এটি সই হবে।’

তবে এই চুক্তিকে ঘিরে বিতর্কও রয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তির মাধ্যমে ইউক্রেনের অর্থনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতার বিনিময়ে রাজনৈতিক সমর্থন নিশ্চিত করতে চায়।

নতুন সংকটে কিয়েভ 
এখন প্রশ্ন উঠছে, জেলেনস্কি কি ট্রাম্পের শর্ত মেনে নেবেন, নাকি ইউক্রেনের স্বাধীন অবস্থান বজায় রাখার চেষ্টা করবেন? ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে স্পষ্ট বলা হচ্ছে, শান্তিচুক্তি সফল করতে হলে ইউক্রেনকে নতুন নেতৃত্বের দিকে এগোতে হতে পারে।  এখন দেখার বিষয়, জেলেনস্কি শান্তিচুক্তি ও নিজের পদ ধরে রাখার মধ্যে কোনটি বেছে নেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের জন্য এটি এক কঠিন সিদ্ধান্ত।

কিউএনবি/অনিমা/০৪ মার্চ ২০২৫,/দুপুর ১২:৫৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit