একসময় শান্তিপূর্ণ জনপদ হিসেবে পরিচিত নরসিংদী আজ রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয়েছে। রাজনীতি, অপরাধ ও আধিপত্য বিস্তারের অন্ধকারে ঢাকা পড়েছে এই জেলার সামাজিক স্থিতিশীলতা। সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক খুনের ঘটনায় নরসিংদীকে কেউ কেউ অভিহিত করছেন “খুনের নগরী” হিসেবে। এই জেলায় খুন হয়েছেন সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান এবং ইউপি সদস্য নৃশংস হামলা হয় সাংবাদিকদের উপর। সাধারণ নাগরিক থেকে জনপ্রতিনিধি কারো জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না প্রশাসন।
নরসিংদীতে হত্যাকাণ্ডের একটি বড় কারণ স্থানীয় রাজনৈতিক গ্রুপিং। ক্ষমতার লড়াই ও আধিপত্য বিস্তারের প্রতিযোগিতা প্রায়শই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে। প্রতিপক্ষকে দুর্বল করতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ঘটানোর অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহল থেকে। ক্ষমতার এই ভয়ঙ্কর খেলা শুধু রাজনীতিবিদদের নয়, সাধারণ মানুষের জীবনকেও ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। নরসিংদীর অস্থিতিশীলতার আরেকটি বড় কারণ মাদক ব্যবসা।
এই জেলায় সক্রিয় মাদক চক্রের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখল বানিজ্য হত্যার ঘটনা বাড়িয়ে তুলছে। মাদকের কালো অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণের লড়াই থেকে এই হত্যাকাণ্ডগুলো প্রভাব বিস্তারের নতুন উপাখ্যান তৈরি করছে। এই একের পর এক হত্যাকাণ্ডে সাধারণ মানুষের মনে তীব্র আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। জনপ্রতিনিধিদের হত্যা শুধু ব্যক্তিগত শত্রুতা নয়, বরং এটি নরসিংদীর রাজনীতিতে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার এক ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।
নরসিংদীর জনগণ এই সহিংসতা বন্ধে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ চান। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে তাদের আবেদন সহিংসতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক। নরসিংদীর পরিস্থিতি সামাল দিতে হলে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ । এই জনপদে আবারও শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের। নরসিংদী যেন খুনের নগরী নয়, বরং শান্তির প্রতীক হয়ে ওঠে, সেটাই এখন সবার প্রত্যাশা।
কিউএনবি/আয়শা/২০ জানুয়ারী ২০২৫,/বিকাল ৪:১২