সংস্কারের জন্য জাতীয় ঐকমত্য গঠনে বিএনপি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে বলে দাবি করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সামাজিক এবং সংবাদমাধ্যমে ধারণা তৈরি করা হচ্ছে, বিএনপি সংস্কার চায় না। অথচ বিএনপি অনেক বিষয়ে দলীয় অবস্থান পরিবর্তন করে একমত হয়েছে জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে।
বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের অষ্টম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সংস্কারের ৪৭ সুপারিশের একটি বাদে সবগুলোতে একমত হয়েছে বিএনপি। একটি সামান্য ভিন্নমত জানিয়েছে। সংস্কার কমিশন দুদকের সার্চ কমিটির যেসব প্রস্তাব করেছে, এর প্রশংসা করেছে বিএনপি। কারণ, এতদিন দুদক ছিল বিরোধীদল দমনের হাতিয়ার।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৪৭ সুপারিশের ৪২টিতে বিএনপি একমত জানিয়েছে। শুধু নিম্ন আদালত নিয়ে কিছু সুপারিশে ভিন্ন জানিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের ২৪৩ সুপারিশের ১৪১টিতে একমত হয়েছে বিএনপি। জনপ্রশাসন সংস্কারের ২১৬ সুপারিশের ১৮৭টিতে একমত হয়েছে। বিএনপি ৯০ শতাংশের বেশি একমত। তারপরও বলা হচ্ছে, বিএনপির কারণে সংস্কারে ঐকমত্য হচ্ছে না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, পাঁচটি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের বিপরীতে বিএনপি বিস্তারিত মতামত দিয়েছে, যা অন্য কোনো দল দেয়নি। সরকারের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে বিএনপি সংবিধানের ৭৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ চেয়েছে। ন্যায়পালের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের প্রস্তাব করেছে। অথচ বাজারে রিউমার আছে- বিএনপির কারণে সমঝোতা হচ্ছে না।
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, অর্থবিল, আস্থা ভোট, সংবিধান সংশোধন এবং জাতীয় নিরাপত্তা বাদে অন্য বিষয়ে এমপিরা স্বাধীনভাবে যেন ভোট দিতে পারেন, সে জন্য বিএনপি ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনে একমত হয়েছে।
বিএনপি ছাড় দিচ্ছে না, এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদের মেয়াদ ১০ বছরে সীমাবদ্ধ করার সুপারিশ আমিই করেছি। বিএনপি চেয়েছিল, দু’বারের পর বিরতি দিয়ে আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া যাবে। কিন্তু ঐকমত্যের জন্য বিএনপি ১০ বছর মেয়াদ নির্ধারণে প্রস্তাব অনুমোদন করে।
তিনি আরও বলেন, ঐকমত্য কমিশন প্রস্তাব করেছিল সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণে স্বতন্ত্র কমিশন গঠন করা হবে। ঐকমত্যের জন্য বিএনপিই বিশেষায়িত কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেছে। আমার দেওয়া প্রস্তাবে, সবাই ঐকমত্য হয়েছে।
সংসদের উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে নিয়োগ কমিটি গঠনে এখনও রাজি নয় বিএনপি। একে অন্যান্য দল মৌলিক সংস্কার বলছে, এ বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি ৯০ ভাগের বেশি সংস্কার প্রস্তাবে একমত। শতভাগ বিষয়ে তো জোর করে একমত করা যাবে না। যদি শতভাগ বিষয়েই একমত হতে হয়- তাহলে আলোচনায় ডাকা হয় কেন?
কিউএনবি/সুমন/০৩ জুলাই,২০২৫/ সকাল ১০:০৫