আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে স্বাগত জানিয়েছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর, কোনো ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতার এটি ছিল ক্রেমলিনে একটি বিরল সফর।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ফিকো রাশিয়ায় গেছেন এবং পুতিনের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেছেন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ।
রাশিয়ার প্রাকৃতিক গ্যাস এখনও ইউক্রেন হয়ে স্লোভাকিয়াসহ কিছু ইউরোপীয় দেশে পৌঁছে। এটি ২০২০ সালে স্বাক্ষরিত একটি পাঁচ বছরের চুক্তির আওতায় চলছে, যা এ বছরের শেষেই শেষ হবে। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্প্রতি ব্রাসেলসে ইইউ নেতাদের জানিয়েছেন, কিয়েভ এই চুক্তি নবায়নের কোনো পরিকল্পনা করছে না। ফিকো বলছেন, এটি স্লোভাকিয়ার স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর হবে।
স্লোভাকিয়া গত মাসে আজারবাইজান থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস কেনার জন্য স্বল্পমেয়াদি একটি চুক্তি করেছে। এটি ইউক্রেন হয়ে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি। এছাড়া, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির জন্য পোল্যান্ডের একটি পাইপলাইনের মাধ্যমে চুক্তি করেছে।
অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি এবং চেক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জার্মানিসহ অন্যান্য সরবরাহকারীদের গ্যাস আমদানির সুযোগও রাখছে স্লোভাকিয়া।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপীয় নেতাদের পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার ঘটনা বিরল। তবে গত জুলাইয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান এবং ইউক্রেনে যুদ্ধের কয়েক সপ্তাহ পর অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার রাশিয়ায় সফর করেন। এই সফরগুলো ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়ে।
ফিকোর দৃষ্টিভঙ্গি ইউরোপের অধিকাংশ নেতার চেয়ে ভিন্ন। তিনি রাশিয়ার প্রতি ইতিবাচক এবং মার্কিনবিরোধী অবস্থান নিয়ে গত বছর ক্ষমতায় আসেন। তিনি ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা বন্ধ করেছেন, রাশিয়ার ওপর ইইউ নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছেন এবং ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান থেকে আটকানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিকো বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সমর্থন দিয়ে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করেছে। তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাকে অকার্যকর হিসেবে আখ্যা দেন এবং পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত থাকার কথা জানান।
আগামী বছরের মে মাসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উদযাপনে মস্কোয় সামরিক প্যারেডে যোগ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এই বিজয় দিবস উদযাপন রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শনের একটি মাধ্যম। পুতিন চলমান যুদ্ধে রুশ সৈন্যদের ‘নায়ক’ বলে অভিহিত করেন।
কিউএনবি/অনিমা/২৪ ডিসেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৩:৩০