বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

জাতির জনক, ৭ মার্চসহ কয়েকটি ধারা সংসদের জন্য রেখেছেন আদালত

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৬৩ Time View

ডেস্ক নিউজ : সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর পুরোটা বাতিল করেননি আদালত। আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও গণভোট পদ্ধতি বাতিল করে সংবিধানের যে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়েছিল সেটিকে আংশিক বাতিল করেছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। আইনজীবীরা জানিয়েছেন , পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত করা কয়েকটি ধারা আদালত বাতিল করেছেন। বাকিগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে এবং সংবিধানে জাতীয় চার মূলনীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনে।

একই সঙ্গে তখন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে অন্যান্য ধর্মের সমমর্যাদা নিশ্চিত করার বিধান আনা হয়। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের সাতই মার্চের ভাষণ, ছাব্বিশে মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে।

অবৈধ ক্ষমতা দখল করলে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা ও সংরক্ষিত নারী আসন ৫০-এ উন্নীত করা এবং জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ২০২১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে।

আজ মঙ্গলবার পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের মাধ্যমে সংবিধানে যুক্ত ৭ক, ৭খ, ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করেন আদালত।

রায়ের পর রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা পঞ্চদশ সংশোধনী সম্পূর্ণ বাতিল চেয়েছিলেন। আদালত বেশ কয়েকটি ধারা বাতিল করলেও অন্যগুলো বাতিল করেননি। আদালত বলেছেন, বাকিগুলোর বৈধতাও তিনি দিচ্ছেন না। সেগুলো ভবিষ্যৎ সংসদের জন্য রেখে দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ সংসদ জাতির প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো রাখতে পারে অথবা বাতিল করতে পারে।

উল্লেখ্য, ৭ক অনুচ্ছেদে সংবিধান বাতিল, স্থগিতকরণ, ইত্যাদি অপরাধ এবং ৭খ সংবিধানের মৌলিক বিধানাবলি সংশোধন অযোগ্য করার কথা বলা ছিল। আর ৪৪ (২) অনুচ্ছেদ বলছে, এই সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীন হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার হানি না ঘটিয়ে সংসদ আইনের দ্বারা অন্য কোনো আদালতকে তাঁর এখতিয়ারের স্থানীয় সীমার মধ্যে ওই সব বা এর যেকোনো ক্ষমতা প্রয়োগের ক্ষমতা দান করতে পারবেন। এই অনুচ্ছেদটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে রায়ে।

রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদের গণভোটের বিধান বিলুপ্তি-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ৪৭ ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় বাতিল ঘোষণা করা হলো। ফলে দ্বাদশ সংশোধনীর ১৪২ অনুচ্ছেদ পুনর্বহাল করা হলো।

আইনজীবী শরীফ ভূঁইয়া বলেন, মাননীয় আদালত বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামোর একটি অংশ। যেহেতু নির্বাচন, গণতন্ত্র বাংলাদেশের সংবিধানের মূল কাঠামো, যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে সুসংহত করেছে, সেহেতু এটি সংবিধানের একটি মূল কাঠামো। এটা ঐতিহাসিক রায়।

শরীফ ভূঁইয়া বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার ক্ষেত্রে বড় বাধা দূর হলো। তবে সেটা এখনই ফিরে এসেছে বলা যাবে না; কারণ, সেটা বাতিল করা হয়েছিল দুইভাবে। আদালতের রায় ও সংসদ কর্তৃক সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, বদিউল আলম মজুমদার ও আরও চারজন এ বিষয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছেন। জানুয়ারিতে শুনানি হবে। সেটা আবেদনকারীদের পক্ষে নিষ্পত্তি হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরবে।

কিউএনবি/অনিমা/১৭ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:২০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit