সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:০৭ অপরাহ্ন

জাদুর ক্ষতি থেকে বাঁচার ৫ আমল

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৩৮ Time View

ডেস্ক নিউজ : মাওলানা নোমান বিল্লাহ

শয়তানকে যখন বিতাড়িত করা হয় তখন সে আল্লাহ তাআলার কাছে কেয়ামত পর্যন্ত মানুষকে পথভ্রষ্ট করার সুযোগ চায়। আল্লাহ তাআলা তাকে এই সুযোগ দেন। যা সুরা আরাফে বর্ণিত হয়েছে।
শয়তান বলল, ‘সেদিন পর্যন্ত আমাকে অবকাশ দিন, যেদিন তাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে’। আল্লাহ তাআলা বললেন, ‘নিশ্চয় তুমি অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হলে’। পরে শয়তান বললো, ‘আপনি আমাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, সে কারণে অবশ্যই আমি তাদের জন্য আপনার সোজা পথে বসে থাকব। তারপর অবশ্যই তাদের নিকট উপস্থিত হব, তাদের সামনে থেকে ও তাদের পেছন থেকে এবং তাদের ডান দিক থেকে ও তাদের বাম দিক থেকে। আর আপনি তাদের অধিকাংশকে কৃতজ্ঞ পাবেন না’। (সুরা আরাফ ১৪-১৭)
শয়তান মানুষকে যত মাধ্যমে পথভ্রষ্ট করে তার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো জাদুবিদ্যা। জাদু বিদ্যার ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তারা অনুসরণ করেছে, যা শয়তানরা সুলাইমানের রাজত্বে পাঠ করত। আর সুলাইমান কুফরি করেনি; বরং শয়তানরা কুফরি করেছে। তারা মানুষকে জাদু শেখাত।’ (সুরা আল-বাকারা ১০২)জাদু করা বা জাদুর সাহায্য নেয়া কবিরা গোনাহ। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক।
সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রসুল! সেগুলো কী? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে শরিক করা, জাদু, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সুদ খাওয়া, এতিমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা সাধ্বী বিশ্বাসী সরলমনা রমনাদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা। (বুখারি ২৮৬৪)

জাদুর ক্ষতি থেকে যেভাবে বাঁচবেন

রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেও জাদু করা হয়েছিল। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে পরিত্রাণের পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েছিলেন। এক. জাদু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগে সকাল ও সন্ধ্যায় দোয়া করতে হবে। যা জাদু ছাড়াও অন্যান্য অনিষ্ট থেকে মুক্ত রাখে।

بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআসমিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিসসামায়ি ওয়াহুওয়াস সামিউল আলিম।’ অর্থ: ‘আমি শুরু করছি সেই আল্লাহর নামে, যার নামের সাথে পৃথিবী ও আকাশের কোনো জিনিস ক্ষতি সাধন করতে পারে না এবং তিনিই সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

এই দোয়াটি সন্ধ্যায় তিনবার করে পাঠ করলে কোনো জিনিস ক্ষতি সাধন করতে পারে না। (তিরমিজি ৩৩৮৮)

দুই. সকাল সন্ধ্যার আরেকটি দোয়া أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ উচ্চারণ : আউজু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিনশারি মা খালাকা। অর্থ : ‘আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ বাণীর অসিলায় তিনি যা সৃষ্টি করেছেন, তার মন্দ থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’

এই দোয়াটি সন্ধ্যার সময় পড়লে ওই রাতে কোনো সাপ-বিচ্ছু ইত্যাদি কষ্ট দিতে পারে না। (মেশকাত ২৪২২, তিরমিজি ৩৪৩৭)

তিন. জাদু দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেলে জিবরাইল আলাইহিস সালাম রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এই দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়েছিলেন।

 

بِسْمِ الله أرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ، بِسمِ اللهِ أُرقِيكَ উচ্চারণ : বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি আরক্বিক। অর্থ: আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয় থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি। (মুসলিম ২১৮৬, তিরমিজি ৯৭২)

 

চার. সুরা ফালাক ও নাস এক্ষেত্রে অনেক বেশি উপকারী। সকাল-সন্ধ্যা সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস প্রতিটি তিন বার করে পড়ার পরামর্শ দেন আলেমগণ।
পাঁচ. সুরা ফাতেহার অপর নাম হলো সুরা শিফা অর্থাৎ আরোগ্য লাভের সুরা। এই সুরাও পড়া যেতে পারে। এসব দোয়া ও সুরা পড়লে আল্লাহ তাআলার কাছে জাদু থেকে বাঁচার দোয়া হবে। আমাদের উচিত জাদু থেকে বাঁচতে আল্লাহ তাআলার কাছে বেশি বেশি দোয়া করা।
এমন ব্যক্তির দ্বারস্থ না হওয়া যিনি জাদু দিয়ে জাদু সারিয়ে তোলেন। এতে সাময়িক লাভ হলেও হারাম কাজ করার গুনাহ হবে এবং স্থায়ী কোনো সমাধান হবে না।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/১৪ ডিসেম্বর ২০২৪,/রাত ১১:০৩

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit