ডেস্ক নিউজ : ইসলামের নির্দেশ হচ্ছে—কোনো সভা-সমিতি, অনুষ্ঠান ও মজলিসে বক্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে বড়দের আগে সুযোগ প্রদান করা। একবার তিন সাহাবি—আব্দুর রহমান বিন সাহাল, মুহাইয়্যাসাহ এবং খুয়াইসা ইবনে মাসুদ নবীজির দরবারে গেলেন। আব্দুর রহমান বিন সাহাল প্রথমে কথা বলতে শুরু করলেন। নবীজি (সা.) তাঁকে থামিয়ে বললেন—বড়কে আগে কথা বলতে দাও।
(কারণ তিনি সবার ছোট ছিলেন) তিনি তখন চুপ হয়ে গেলেন। বাকি দুজন কথা বলা শুরু করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৩১৭৩)
অনুরূপভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে বড়দের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। ইমামতির ক্ষেত্রে বয়সে বড় ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা হাদিসে এসেছে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘…যদি তারা হিজরতের দিক দিয়ে বরাবর হয় তাহলে যারা বয়সে বড় তারা ইমামতি করবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৬৭৩)
অর্থাৎ যেকোনো কাজে যেন বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়, এটা ইসলামের অন্যতম চাওয়া। যেমন : ছোটরা বড়দের আগে সালাম দেবে। সম্মানার্থে বড়দের আগে সালাম দেওয়ার কথা হাদিস শরিফে এসেছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) সালামের আদেশ করে বলেছেন, ছোটরা বড়দের সালাম দেবে। (বুখারি, হাদিস : ৬২৩১)
সম্মোধনের ক্ষেত্রে বয়োজ্যৈষ্ঠদের সঙ্গে সম্মানসূচক শব্দ প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনের সময় ছোটরা যখন বড়দের সম্মোধন করবে তখন অবশ্যই সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রকাশক শব্দ ব্যবহার করবে। যেমন : বাবার বয়সী হলে চাচা, কাকা। ভাইয়ের বয়সী হলে বড় ভাই। দাদার বয়সী হলে দাদা ইত্যাদি শব্দে সম্মোধন করবে।
সাহাবি আব্দুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) বলেন, বদর যুদ্ধের দিন আমি সারিতে দাঁড়িয়ে ডানে-বাঁয়ে লক্ষ্য করে দেখি আমার দুই পাশে দুই আনসার বালক দাঁড়িয়ে আছে। আমি মনে মনে ভাবলাম যে আমি তাদের থেকে বেশি সাহসী হব। কিছুক্ষণ পর তাদের একজন আমাকে বলল, চাচা, আপনি কি আবু জাহেলকে চেনেন? উত্তরে আমি বললাম, তাকে আমি চিনি; কিন্তু ভাতিজা, তোমরা তাকে চিনে কী করবে? একজন বলল, আমি জেনেছি যে সে রাসুলকে গালি দেয়। আল্লাহর কসম! যদি আমি তাকে দেখি তাহলে হয় আমি না হয় সে, যে কেউ একজন অবশ্যই মরবে। অনুরূপ দ্বিতীয়জনও বলল। কিছুক্ষণ পর আবু জাহেলকে মানুষের মধ্যে ঘুরতে দেখে তাদের বললাম, এই তো তোমাদের কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি। তখন তারা দ্রুতগতিতে তার দিকে ছুটে গেল এবং তাকে হত্যা করল। (বুখারি, হাদিস : ৩১৪১)
কিউএনবি/অনিমা/২৮ নভেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:০১