বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৩ পূর্বাহ্ন

পরকালে যারা আরশের ছায়া পাবে

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ২৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : কিয়ামতের দিনটি অত্যন্ত কঠিন ও ভয়ংকর দিন হবে। সেদিন সূর্য খুব নিকটবর্তী হবে এবং এর তাপ মানুষের ওপর তীব্রভাবে প্রভাব ফেলবে। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের এমন কিছু মানুষ সম্পর্কে সুসংবাদ দিয়েছেন, যাদের আল্লাহ তায়ালা সেদিন আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যেদিন আল্লাহর (আরশের) ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না, সেদিন আল্লাহ তাআলা সাত শ্রেণির মানুষকে সে ছায়ায় আশ্রয় দেবেন।

১. ন্যায়পরায়ণ শাসক। ২. যে যুবক আল্লাহর ইবাদতের ভেতর গড়ে উঠেছে। ৩. যার অন্তরের সম্পর্ক সব সময় মসজিদের সঙ্গে থাকে। ৪. আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে দুই ব্যক্তি পরস্পর মহব্বত রাখে, উভয়ে একত্র হয় সে মহব্বতের ওপর, পৃথকও হয় সে মহব্বতের ওপর।

৫. এমন ব্যক্তি যাকে সম্ভ্রান্ত সুন্দরী নারী (জিনার জন্য) আহ্বান জানিয়েছে, তখন সে বলেছে, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৬. যে ব্যক্তি গোপনে এমনভাবে সদকা করে যে তার ডান হাত যা দান করেছে বাঁ হাত তা জানতে পারে না। ৭. যে ব্যক্তি নির্জনে আল্লাহ তাআলাকে স্মরণ করে এবং আল্লাহভীতির কারণে তার চোখ হতে অশ্রু ঝরে।’(সহিহ বুখারি, হাদিস ১৪২৩)

এই মহামূল্যবান হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) তার উম্মতের এমন সাত শ্রেণির লোকের কথা উল্লেখ করেছেন, যারা সেদিন আল্লাহর ছায়ায় আশ্রয় পাবে।

এখানে ছায়া বলতে আরশের ছায়া বোঝানো হয়েছে, যেমনটি অন্যান্য হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।
এই সাত ব্যক্তির মধ্যে প্রথমজন হলেন ন্যায়পরায়ণ শাসক, যিনি জনগণের অধিকার রক্ষা করেন। তাদের কল্যাণের প্রতি যত্নশীল থাকেন। আল্লাহর শরিয়ত মোতাবেক রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। এখানে শাসক বলতে প্রতিজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।

প্রত্যেকের জন্য আপন গণ্ডিতে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক। যে ব্যক্তি পরিবারের প্রধান, সে পরিবারে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। সমাজপতি হলে সমাজে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। এভাবে পরিবার থেকে রাষ্ট্র পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে। যারা ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে, হাদিসের ঘোষণা অনুযায়ী তারা কিয়ামত দিবসে আরশের ছায়া পাবে। যদি এর ব্যতিক্রম হয়, তাহলে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকেই অধীনস্থদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। নেতা তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীল, পুরুষ তার পরিবারে দায়িত্বশীল, নারী তার স্বামীর ঘর ও সন্তানের দায়িত্বশীল। সুতরাং তোমাদের প্রত্যেককেই স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।’(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫২০০)

তৃতীয়জন হলেন ওই ব্যক্তি, যার হৃদয় মসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। যিনি মসজিদকে ভালোবাসেন। সেখানে বারবার আসেন। নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। এক নামাজ শেষে পরবর্তী নামাজের জন্য অপেক্ষা করেন।

চতুর্থ হলেন এমন দুই ব্যক্তি, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য একে অপরকে ভালোবাসেন। এ ভালোবাসা কেবল আল্লাহর জন্য। এখানে পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য থাকে না। তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কখনো একত্র ও বিচ্ছিন্ন হন।

পঞ্চমজন হলেন সেই ব্যক্তি, যাকে কোনো সুন্দরী ও মর্যাদাশালী নারী কুপ্রস্তাব দেয়, কিন্তু তিনি আল্লাহর ভয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন।

ষষ্ঠজন হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি অত্যন্ত গোপনে দান করেন, এমনকি তার বাঁ হাত জানে না তার ডান হাত কী দান করেছে।

সপ্তমজন হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করেন এবং আল্লাহর ভয়ে তার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়।

এই সাত শ্রেণির মানুষ আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত থেকে, নিজ নিজ কামনা-বাসনার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজেদের এই মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। হাদিসে এই সাতটি শ্রেণির কথা উল্লেখ করা হলেও আরো কিছু শ্রেণি আছে, যাদের সম্পর্কে অন্যান্য হাদিসে আল্লাহর ছায়া পাওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা আমাদের আরশের ছায়ায় আশ্রয়দান করুন।

কিউএনবি/অনিমা/২৭ নভেম্বর ২০২৪,/বিকাল ৩:৪০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2024
M T W T F S S
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit