ডেস্ক নিউজ : আজ রবিবার সারাদেশে পালিত হচ্ছে বাংলার ঐহিত্য নবান্ন উৎসব। বগুড়ায় প্রতি বছর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে গ্রাম-বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এই উৎসব পালিত হয়। নবান্ন উৎসবকে ঘিরে বগুড়ার বাজারে উঠেছে নতুন আলু। দাম নাগালের বাহিরে হলেও উৎসবের আমেজে কম বেশি সবাই কিনছেন। নবান্ন উৎসব ঘিরে বাজারে প্রতি কেজি নতুন পাগড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০টাকা। এছাড়া নতুন পিয়াজ, নতুন ধান ও নতুন সব ফসল নিয়ে পালন করা হবে নবান্ন উৎসব।
জানা যায়, পহেলা অগ্রহায়ণ মানেই বাঙালি বাড়িতে উৎসবের আমেজ। আবহমান এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পহেলা অগ্রহায়ণ দিনটি নবান্ন উৎসব হিসেবে পালন করে আসছে এদেশের মানুষেরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পঞ্জিকা অনুযায়ী আজ রবিবার নবান্ন উৎসব। এ উপলক্ষে জামাইসহ আত্মীয়স্বজনদের আপ্যায়ন করা হয়। খাদ্য তালিকায় মাছসহ নতুন আলু থাকে। আর এ কারণেই বাজারে নতুন আলুর চাহিদা বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীরা নবান্ন উৎসবকে সামনে রেখে বাজারে নতুন আলু নিয়ে আসেন। দাম বেশি হলেও চাহিদা অনুযায়ী কম বেশি সবাই কিনছেন। পাশাপাশি এই উৎসবে নতুন পাতা পিয়াজ, সকল প্রকার নতুন সবজি ও নতুন ধানের পিঠা পায়েশ থাকে এই আয়োজনে।
নতুন ধান থেকে পাওয়া চালে হয় নবান্ন উৎসব। হিন্দু লোককথায় এদিনকে বলা হয়ে থাকে বার্ষিক মাঙ্গলিক দিন। নতুন আমন চালের ভাত বিবিধ ব্যঞ্জনে অন্নাহার, পিঠাপুলির উৎসবের আনন্দে মুখর হয় জনপদ। মেয়েকে নাইয়র আনা হয় বাপের বাড়ি। নতুন ধানের ভাত মুখে দেওয়ার আগে কোথাও কোথাও দোয়া, মসজিদে শিন্নি দেওয়ার রেওয়াজ আছে। হিন্দু কৃষকের ঘরে পূজার আয়োজন চলে ধুমধামে। হিন্দুদের বারোমাসের তেরো পার্বণের বড় পার্বণ হলো এই নবান্ন। এই নবান্নকে ঘিরে তাদের বারো পূজার প্রচলন আছে। তারা নতুন অন্ন পিতৃপুরুষ, দেবতা, কাক প্রভৃতি প্রাণীকে উৎসর্গ করে এবং আত্মীয়স্বজনকে পরিবেশন করার পর গৃহকর্তা ও পরিবারবর্গ নতুন গুড়সহ নতুন নবান্ন গ্রহণ করেন। হিন্দু লোকবিশ্বাসে কাকের মাধ্যমে ওই খাদ্য মৃতের আত্মার কাছে পৌঁছে যায়।
গতকাল শনিবার বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজারসহ অন্যান্য বাজার ঘুরে দেখা যায়, নবান্ন উৎসবকে ঘিরে নতুন পাগড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০টাকা কেজি। আকারভেদে এসব আলু ছোট এবং মাঝারি সাইজের। আমদানি কম হলেও চাহিদা রয়েছে।
ফতেহ আলী বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম জানান, বাজারে নতুন আলু উঠেছে, আকারে বড় না হলেও নবান্ন উৎসবের কারণে দাম ভালো পাওয়ার জন্য কৃষকরা বিক্রি করছেন। তাই বেশি দামে কিনে বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
বাজারে নতুন আলু কিনতে আসা কল্যাণ চন্দ্র জানান, প্রতি বছর আমাদের পরিবারে নবান্ন উৎসব পালন করা হয়। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই উৎসব পালনে বাজারে নতুন আলু কিনতে এসেছি। এই উৎসবে নতুন ধানের চাল, নতুন আলুসহ পিঠাপুলি আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়ানো হয়। বাজারে আলুর দাম বেশি হলেও উৎসবের কারণে কিনতে হয়েছে।
কিউএনবি/অনিমা/১৬ নভেম্বর ২০২৪,/দুপুর ২:২৪