এছাড়া অন্যান্য সাক্ষীরা জানান তৎকালীন সময়ে নাইকোর প্রস্তাব তারা প্রত্যাখ্যান করলেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নাইকোকে গ্যাস উত্তোলনে অনুমতি দেন। যদিও চার্জশিটভুক্ত আসামি হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলাটি বাতিল করা হয় বলেও জানান খালেদা জিয়ার এ আইনজীবী। খালেদা জিয়ার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম আরও বলেন, চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দেননি। তার ওপর জোরপূর্বক মামলাটি চাপানো হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি, দ্রুতই তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট স্বীকার করেছেন, স্বীকার রেকর্ড করার সময় আসামির ১৬১ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। যা আইনবহির্ভূত। ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া বলেছেন, তিনি ম্যাজেস্ট্রেটকে কোনো সাক্ষ্য দেন নাই। কেবল সাদা পাতায় সাক্ষর দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির কোনো সার্টিফিকেটও দেয়া হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, এ জবানবন্দির আর কোনো ভিত্তি নেই। দুদকের কাছেও কোনো এভিডেন্স আর নেই।এর আগে গত বছরের ১৯ মার্চ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এতে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ আনা হয়।
খালেদা জিয়া ছাড়াও মামলার অন্য সাত আসামি হলেন-তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল করপোরেশনের চেয়ারম্যান সেলিম ভূঁইয়া ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
এছাড়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন ও বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান মারা যাওয়ায় মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দুদকের অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে খালেদা জিয়াসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে কানাডার কোম্পানিটিকে অবৈধভাবে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের সুবিধা পাইয়ে দেন। অভিযোগপত্রে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।