রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৫ অপরাহ্ন

কোথা থেকে কীভাবে এলো চুমু

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৭২ Time View

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : সুইডিশ অভিনেত্রী ইনগ্রিড বার্গম্যানের এই রোমান্টিক কথাগুলো সম্ভবত সত্যি। প্রকৃতির তৈরি এক অদ্ভূত সুন্দর কৌশল হলো চুমু, যেখানে শব্দ অপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠলে কথার দূষণ এড়াতে ব্যবহার হয় চুমুর।

চুমু কোথা থেকে এলো তা বহুদিন ধরেই জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষণায় উঠে এসেছে, এর উত্তর লুকিয়ে আছে মানুষের প্রাচীন পূর্বপুরুষ এপদের আচরণের মধ্যে, যেখানে স্পর্শের নানা রূপকে ছাপিয়ে যায় চুমু। এর কারণেই বাদবাকি স্পর্শ ‘অপ্রয়োজনীয়’ হয়ে ওঠে, ঠিক যেমনটি বলেছেন বার্গম্যান।

বর্তমানে মানুষের মধ্যে রোম্যান্স ও শুভেচ্ছা জানানো থেকে শুরু করে শ্রদ্ধা দেখানো পর্যন্ত অনেক সামাজিক মিথস্ক্রিয়ারই অংশ চুমু। এর রয়েছে সাড়ে চার হাজার বছরের প্রামাণ্য ইতিহাস। তবে চুমুর উৎপত্তি কীভাবে তা এখনো রহস্যই রয়ে গেছে।

চুমু নিয়ে সম্প্রতিক এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘ইভোলিউশনারি অ্যানথ্রোপলজি’তে। এ গবেষণায় তুলে ধরা হয়েছে চুমুর বিবর্তন কীভাবে হয়েছে এ সম্পর্কিত নানা তত্ত্ব। মানুষের আধুনিক প্রাইমেটদের মধ্যে দেখা গেছে চুমুর মতো আচরণ। এর থেকে ইঙ্গিত মেলে, মানুষের মধ্যে চুমুর আচরণটি এসেছে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে।

শিম্পাঞ্জিদের মধ্যে অভিবাদনের আচরণ হিসাবেও বর্ণনা রয়েছে চুমুর। তবে মানুষের আচরণকে চুমু কতটা প্রতিফলিত করে তা নির্ধারণের জন্য আমাদের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই, বলেছেন এ গবেষণার লেখক ও যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ওয়ারউইক’-এর মনোবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক আদ্রিয়ানো লামেইরা।

কেবল বোনোবোরাই মানুষের মতো চুমু খেতে বদ্ধপরিকর বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসকম। এসব বানরদের জন্য চুমু হচ্ছে এক ধরনের সামাজিক বন্ধন ও স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়। এমনকি ঝগড়ার পর ‘চুমুর’ মাধ্যমে এরা সবকিছু মিটমাটও করে। মানুষের সঙ্গে বোনোবো’র ডিএনএ-এর ৯৮.৭ শতাংশ মিল থাকার কারণে মানুষের মধ্যে চুমুর মতো আচরণের বিষয়টি একেবারে বিস্ময়কর কিছু নয় বটে, তবে এর মাধ্যমে এখনো বোঝা সম্ভব নয় যে, চুমুর ধারাবাহিক বিকাশের ধরনটি কেমন ছিল।

গবেষকদের অনুমান বলছে, সামাজিক সম্পর্কের জন্য বা যৌন আচরণে অলঙ্করণের মাধ্যমে ‘স্নিফিং’ থেকে এসেছে চুমু। “তবে চুমু কীভাবে এল তা ব্যাখ্যা করার জন্য এসব অনুমান পযাপ্ত নয়,” বলেছেন লামেইরা। আরেকটি চমকপ্রদ ধারণা হচ্ছে, বানরদের মধ্যে নার্সিং বা সেবামূলক আচরণ থেকে এসেছে চুমু। মা বানরেরা প্রায়শই ঠোঁট ব্যবহার করে নিজের শিশুদের খাবার দেওয়ার আগে তা চিবিয়ে মুখে তুলে খাইয়ে দেন।

লামেইরা বলেছেন, বানরের এই আচরণটি চুমুর প্রেক্ষাপট ও কার্যকারিতার সঙ্গে একেবারেই মেলে না। বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্ক বানরদের মধ্যে এমনটি নেই। এমনকি স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বেলায় চুমুর বিবর্তন কেন হয়নি তারও কোনো ব্যাখ্যা মেলে না এ থেকে।

চুমুর বিবর্তনের বিষয়টি গ্রেট এপদের গঠন, বৃদ্ধি, বিবর্তন ও আচরণের মধ্যে সবচেয়ে ভালভাবে ফুটে উঠেছে। গ্রেট এপ হচ্ছে, মানুষের হোমিনিড পূর্বপুরুষদের এক জীবন্ত প্রক্সি,” বলেছেন লামেইরা। লামেইরা বলেছেন, গ্রুমিং প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত ধাপ হচ্ছে চুমু। বানরদের মধ্যে শারীরিকভাবে গ্রুমিংয়ের অন্যান্য দিক শেষ হয়ে গেলেও চুমুর বিষয়টি বজায় ছিল।

বর্তমান বিভিন্ন প্রমাণ থেকে ইঙ্গিত মিলেছে, মানুষের মধ্যে সন্তান বাৎসল্যের প্রকাশ হিসেবে যে চুমুর শুরু তা ক্রমশ রূপ পেয়েছে স্নেহ ও ভালবাসার প্রকাশ হিসাবে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/৩০ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ৯:০০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit