রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

রাসুল (সা.) যাদের সর্বোত্তম বলেছেন

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৭০ Time View

ডেস্ক নিউজ : পৃথিবীতে মুমিনের উদাহরণ হলো খনিজ ও গুপ্তধনের মতো। মুমিনের অন্তরে ঈমানের আলো থাকার কারণে তাঁর সব ভালো বৈশিষ্ট্যকে হাদিস শরিফে রত্নভাণ্ডারের খনির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা মানুষকে খনিজ ও গুপ্তধনের ন্যায় দেখতে পাবে। অতএব, যারা জাহেলি যুগে উত্তম ছিল তারা ইসলামেও উত্তম বলে বিবেচিত হবে।

যখন তারা দ্বিনি জ্ঞানের অধিকারী হবে। কিংবা তোমরা এ ব্যাপারে অর্থাৎ ইসলামে উত্তম ব্যক্তি দেখতে পাবে, যারা তার পূর্বে চরমভাবে ইসলামকে ঘৃণা করত। আর তোমরা সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তি হিসেবে দেখতে পাবে সেসব লোককে, যারা দ্বিমুখী চরিত্রের লোক। এরা এই দলের কাছে একমুখী কথা বলে আবার অন্য এক দলের কাছে আরেক ধরনের রূপ নিয়ে উপস্থিত হয়।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৩৪৮)

অন্য বর্ণনায় নবীকে প্রশ্ন করা হয়েছে, কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বলেন, প্রত্যেক বিশুদ্ধ অন্তরের অধিকারী সত্য ভাষী ব্যক্তি। তারা বললেন, সত্য ভাষীকে তো আমরা চিনি, কিন্তু বিশুদ্ধ অন্তরের ব্যক্তি কে? তিনি বলেন, সে হলো পূতঃপবিত্র নিষ্কলুষ চরিত্রের মানুষ, যার কোনো গুনাহ নেই, নেই কোনো দুশমনি কিংবা হিংসা-বিদ্বেষ, আত্মঅহমিকা ও কপটতা। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২১৬)

তা ছাড়া মানুষ যখন কোনো ধনরত্নের খনির নাগাল পায় তখন সে নিজে কখনো তার পরিমাপ এবং মূল্যের পরিমাণ অনুমান করতে পারে না; বরং এটা করে থাকে জহুরি ও স্বর্ণকাররা। ঠিক তেমনি খাঁটি মুমিনকে সবাই চিনতে পারে না।

হাদিস শরিফে তাদের পরিচয় এভাবে এসেছে, ‘মাথায় উষ্কখুষ্ক চুল এবং দেহে ধুলামলিন দুইখানা পুরনো কাপড় পরিহিত এরূপ অনেক ব্যক্তি রয়েছে, যার প্রতি লোকেরা দৃষ্টিপাত করে না। অথচ আল্লাহর নামে শপথ করে ওয়াদা করলে তিনি তা সত্যে পরিণত করেন। আল-বারাআ ইবনু মালিক তাদের দলভুক্ত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৫৪)
আর মুমিনকে খনির সঙ্গে তুলনা করার একটি কারণ হলো, মূল্যবান খনির মতো খাঁটি  মুমিনও খুব বেশি পাওয়া যায় না। এই হাজারে দু-একজন।

এ প্রসঙ্গে নবীজি বলেন, মহান আল্লাহ ডাকবেন, হে আদম, তখন তিনি জবাব দেবেন, রব আমি হাজির, আমি সৌভাগ্যবান এবং সব কল্যাণ আপনার থেকেই। আল্লাহ তখন বলবেন, জাহান্নামিদের বের করে দাও। আদম (আ.) বলবেন, জাহান্নামি কারা? আল্লাহ বলবেন, প্রতি হাজারে ৯৯৯ জন। এ সময় ছোটরা বুড়ো হয়ে যাবে। প্রত্যেক গর্ভবতী তার গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখাবে নেশাগ্রস্তের মতো, যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি কঠিন।
সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে সেই একজন কে? তিনি বললেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো। কেননা তোমাদের মধ্যে থেকে  একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ-মাজুজ হবে। অতঃপর তিনি বললেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাঁর কসম। আমি আশা করি, তোমরা সব জান্নাতবাসীর এক-তৃতীয়াংশ হবে। আবু সাঈদ (রা.) বলেন, আমরা এ সংবাদ শুনে আবার আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিলাম। তিনি আবার বললেন, আমি আশা করি তোমরা সব জান্নাতির অর্ধেক হবে। এ কথা শুনে আমরা আবারও আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কালো পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম। (বুখারি, হাদিস : ৩৩৪৮)

ইসলামের সূচনা ও সমাপ্তিতে ভালো ও খাঁটি মুমিনদের দুষ্প্রাপ্যতা ও স্বল্পতাকে বর্ণনা করে নবীজি বলেন, ‘ইসলাম শুরুতে অপরিচিত ছিল, অচিরেই তা আবার শুরুর মতো অপরিচিত হয়ে যাবে। সুতরাং এরূপ অপরিচিত অবস্থায়ও যারা ইসলামের ওপর টিকে থাকবে তাদের জন্য মোবারকবাদ।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৬৭)

ওপরের হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসরা বলেন, ইসলামের শুরু হয়েছে মক্কা থেকে অপরিচিত কিছু মানুষ হিজরত করে মদিনায় আসার মাধ্যমে। শেষ যুগেও ইসলাম তার আপন অবস্থায় ফিরে যাবে। অর্থাৎ সারা বিশ্বে কাফির ও বেঈমানদের রাজ্য কায়েম হবে। আর ঈমানদাররা ওদের ভয়ে মদিনায় ফিরে আসবে।

কাজি ইয়াজ বলেন, হাদিসের উদ্দেশ্য হলো, প্রথমে ইসলাম আরম্ভ হয়েছিল অল্পসংখ্যক লোকের দ্বারা। শেষ যুগে কমতে কমতে ইসলাম আবার অল্পসংখ্যক লোকের মধ্যে রয়ে যাবে।

কিউএনবি/অনিমা/১০ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ১০:৪৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit