আবু জাহের, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগে বেশ কয়েকদিনে ধরে আন্দোলন করছিল কলেজ শিক্ষার্থীরা। এরই পরিপেক্ষিতে বাড়িতে গিয়ে আন্দোলন না করতে হুমকি দেয়ার অভিযোগ ও পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজের ছাত্রীরা ৭ অক্টোবর সোমবার দুপুরে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে অন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। ফলে অভিযুক্ত শিক্ষক মাহবুবুল হক (প্রদর্শক) কে সমায়িক বহিস্কার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শেরপুর টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি মহিলা অনার্স কলেজের ছাত্রীরা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন শুরু করেন। এতে মহাসড়কে ২ ঘণ্টার বেশি সময় যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
পরে উপজেলা প্রশাসন ও থানাপুলিশ এসে ওই শিক্ষক কে সাময়িক বরখাস্ত করলে আন্দোলনরত ছাত্রীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন। কলেজের ছাত্রীরা বলেন, তাঁদের কলেজের কৃষি বিভাগের প্রদর্শক মাহবুবুল হক বেশ কিছুদিন ধরে ছাত্রীদের পোশাক নিয়ে কটূক্তি, অসৌজন্যমূলক আচরণ ও উত্ত্যক্ত করে আসছেন। এই ঘটনায় তাঁরা গত ২২ সেপ্টেম্বর কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির কাছে অভিযোগ দেন।
তবে তাঁরা এখনো কোনো প্রতিকার পাননি। এ কারণে কলেজের ছাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কলেজের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান। ছাত্রীরা বলেন, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি গতকাল রাতে শেরপুর পৌর শহরের শান্তিনগর এলাকায় আন্দোলনরত ছাত্রীর বাড়িতে গিয়ে আন্দোলন না করার জন্য হুমকি দেন। কলেজ কর্তৃপক্ষই ওই ব্যক্তিকে পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ ছাত্রীদের। এ কারণে তাঁরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ও কৃষি প্রদর্শক মাহবুবুল হকের অপসারণ চান।
ছাত্রীদের আন্দোলন ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ওই কৃষি প্রদর্শককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে যে ব্যক্তি হুমকি দিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিক খান বলেন, ওই ছাত্রীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন আক্তারকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিবে উপজেলা পরিষদের কাছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ৮:১৪