ডেস্ক নিউজ : বিভাগের চার নদীতে তিন মৌসুম থেকে জেলেদের জালে উল্লেযোগ্যহারে ইলিশ ধরা পড়ায় বেশ খুশি তারা। জেলেরা বলছেন, সরকার যদি প্রজনন মৌসুমে সঠিকভাবে পুনর্বাসন করে তাহলে এ অঞ্চলে ইলিশ উৎপাদনের হার কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদী মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে জেলে ভরত দাস। তিনি সময় সংবাদকে বলেন, ‘দাদা, অধিকাংশ জেলে মাছ ধরি সংসার খরচ চলে। এমনও আছে দুই দিন মাছ না ধরলে পেটে ভাত যায় না। এমন অবস্থায় ইলিশের প্রজনন মৌসুমে প্রায় এক মাস নদীতে জাল ফেলতে দেয় না। অভাব ও লোভের কারণে অনেকে গোপনে মাছ ধরতে যায়। এ সময় অনেক মা ইলিশ মাছ মারা পড়ে। তবে সরকার যদি জেলেদের এ সময়ে যথেষ্ট সহযোগিতা করে এবং সঠিকভাবে তদারকি করে তাহলে অনেক বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে ব্রহ্মপুত্রে।’
যেখানে মিলছে ইলিশ:
সাগর থেকে নদীতে ইলিশ:
ইলিশ মূলত লোনা পানির মাছ। এর আবাসস্থল সাগরে। তবে প্রজনন মৌসুমী ডিম ছাড়ার জন্য সাগর থেকে নদীতে চলে আসে ইলিশ মাছ। সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় পদ্মা নদীতে। এই নদী হয়ে মেঘনা থেকে যমুনা আর যমুনা থেকে ব্রহ্মপুত্রে আসে ইলিশ। এভাবেই রংপুর অঞ্চলের চার নদী ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে মৎস্য অধিদফতর রংপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মনজুরুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সাগর থেকে নদীতে আসে। সেই ধারাবাহিকতায় সাগর থেকে পদ্মা নদী হয়ে মেঘনা ও যমুনা পাড়ি দিয়ে ব্রহ্মপুত্র ও তার শাখা নদীগুলোতে আশ্রয় নেয় ইলিশ এবং প্রজনন শেষে সেই পথে সাগরে ফিরে যায়। তবে ইলিশের উৎপাদন নানা বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এরমধ্যে আবহাওয়া পরিস্থিতি, বৃষ্টিপাত ও নদীর পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘মা ইলিশ সংরক্ষণে প্রজনন মৌসুমে জেলেদের পুনর্বাসনসহ গত কয়েক বছর ধরে রংপুর অঞ্চলের প্রধান নদ-নদীগুলোকে ইলিশের অভয়াশ্রম হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারে নেয়া নানা পদক্ষেপর কারণে এ অঞ্চলে ইলিশের আনাগোনা বেড়েছে। একইসঙ্গে মোবাইল কোর্ট চালিয়ে নিয়মিত কারেন্ট জাল নিধনসহ জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে এই অঞ্চলে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে।’
উৎপাদন বাড়াতে নানা উদ্যোগ:
চলতি বছর ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময়ে সাগর থেকে নদীতে আসবে ইলিশ। তাই জেলেরা যাতে মা ইলিশ ধরতে না পারে সে জন্য পুরো সময় নদীতে জাল ফেলা নিষেধ করেছে সরকার। এমন অবস্থায় উৎপাদন বাড়াতে বেকার বসে থাকা জেলেদের পুনর্বাসন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
মৎস্য অধিদফতর রংপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মনজুরুল ইসলাম সময় সংবাদকে বলেন, ‘প্রজনন মৌসুমে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে জাল ফেলা নিষেধ। এ সময়ে যাতে নদীকে কেউ জাল না ফেলেন সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেদের যাতে জীবিকা নির্বাহে সমস্যা না হয়, সেজন্য সরকারিভাবে রংপুর অঞ্চলের ১৩ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। আশা করছি, এতে করে জেলেরা মা ইলিশ ধরতে নদীতে যাবেন না। জেলেদের সচেতনতার পাশাপাশি বাজার মনিটরিং ও নদীগুলোতে টহল জোরদার করা হবে। ফলে এবার ইলিশের উল্লেযোগ্য উৎপাদন বাড়বে।’
ইলিশ নিয়ে আশা:
কিউএনবি/আয়শা/০১ অক্টোবর ২০২৪,/রাত ৯:৫৫