ডেস্ক নিউজ : সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষ্মীপুরের ওয়াপদা ও রহমতখালী খালের তীব্র স্রোতে ভাঙছে সদর উপজেলার টুমচর, দক্ষিণ কালিচর ও পিয়ারাপুরের বিস্তৃর্ণ এলাকা। গত ১৫দিনে ভাঙনের মুখে বিলীন হয়েছে এসব গ্রামের ফসলী জমি, বসতভিটেসহ গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতাধিক পরিবার। এরই মধ্যে বসতভিটা হারিয়েছেন অন্তত ৪০ পরিবার। জাগায়াজমি ও বসতভিটে হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি নামতে শুরু করার পর রহমতখালী ও ওয়াপদা খালে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়। এতে গত ১৫ দিনে ভাঙনের মুখে পড়ে অন্তত ৪০টি পরিবারের বসতঘর তলিয়ে যায়। ভেসে যায় জলাশয়ের মাছ। খালের গর্ভে বিলীন হয়ে যায় অনেক ফসলী জমি। অচিরেই তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ না করা হলে হুমকির মুখে পড়বে বিস্তৃর্ণ এলাকা।
সদর উপজেলার পিয়ারাপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজন বলেন, ‘ভাঙনের কবলে পড়ে বাড়িঘর হারিয়ে এখন খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে। কোনোরকম টিনের বেড়া দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে খালের পাড়েই বসবাস করছি। আমাদের যাওয়ার মত কোনো জায়গা নেই। কোথায় থাকবো বা কোথায় যাবো, এই ভেবেই এখন নির্ঘুম রাত কাটছে। এছাড়া একই অবস্থা এখানকার ১৭টি পরিবারের।’ এই অবস্থায় সরকারি সহযোগিতার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
একই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত আব্দুল মালেক, দুলাল, আব্দুল্লাহ আল নোমান ও আলেয়া বেগম বলেন, ‘কয়েকদিন আগেও আমাদের এখানে সাজানো সংসার ছিল। বাড়িঘর ছিল, রান্নাঘর ছিল, উঠান ছিল। সবাই মিলে মিশে বসবাস করেছি। বছরের পর বছর আমরা এখানে থেকেছি। আজ সব কিছু এই রাক্ষুসে খালের পেটে চলে গেছে। আমরা এখন বড়ই নিঃস্ব। আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্ত নেই।’
এদিকে ভাঙন থেকে রক্ষায় তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবিতে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ক্ষতিগ্রস্তরা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহানের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দেন তারা।
বিষয়টি নিয়ে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ উজ জামান খান বলেন, ‘খালের পানির তীব্র স্রোতে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার এলাকা ভাঙনের মুখে পড়েছে। কয়েকটি স্থানে অস্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করা হয়েছে। স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত নির্মাণ করা হবে স্থায়ী তীর রক্ষা বাঁধ।’
কিউএনবি/আয়শা/০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ৮:২৮