মঙ্গলবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:০৪ পূর্বাহ্ন

জুলাই অভ্যুত্থান: সব বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচি ঘোষণা

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৫ Time View

ডেস্ক নিউজ : জুলাই অভ্যুত্থানের শুরুটা কোটা ব্যবস্থা বাতিল দিয়ে শুরু হলেও তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের অবিবেচক সিদ্ধান্ত এবং ছাত্রদের ওপর নির্যাতনের কারণে সরকার উৎখাতের দিকে মোড় নেয়। আন্দোলনের শুরুর দিকে ছাত্ররা বারবার তাদের দাবির বিষয়ে কঠোর অবস্থান জানালেও সেটি সরকারের সংশ্লিষ্টদের কর্ণকুহরে সঠিক সমাধানের জন্য কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেনি। তারা ভেবেছিল দমন-নিপীড়নের মাধ্যমেই সহজে সমাধান হয়ে যাবে। ডাণ্ডা মেরে ঠান্ডা করা হবে এটাই ছিল তাদের মন্ত্র।    

২০২৪ সালের ২ জুলাই ছিল মঙ্গলবার। পরদিন বুধবার সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আজ অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়ে শিক্ষার্থীরা এ আহ্বান জানান। একই দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও।

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানির তারিখ ছিল পরবর্তী বৃহস্পতিবার। হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে কিনা, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার রিটকারী পক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা এ তথ্য গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

সরকারি চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলসংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে এর আগে ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। ওই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়ায় আর কোনো বাধা থাকল না বলে জানিয়েছিলেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। অবশ্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান বলেছিলেন, নির্দেশনা সাপেক্ষে আপিল বিভাগে আবেদন করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

২০২৪ সালের ২ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গলবার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বেলা আড়াইটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ঢাবির ভিসি চত্বর-নীলক্ষেত-ঢাকা কলেজ-সায়েন্সল্যাব হয়ে বেলা সাড়ে ৩টায় শাহবাগ মোড়ে পৌঁছায়। পরে সেখানে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। শাহবাগ মোড় অবরোধ করে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। বিকাল পৌনে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় থেকে অবরোধ তুলে নিয়ে মিছিলসহকারে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন অভিমুখে রওয়ানা হন। 

আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তৎকালীন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, দাবি আদায়ে বুধবার বেলা আড়াইটায় তারা আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেবেন। দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একই ব্যানারে একই সময়ে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।

বিক্ষোভ-মিছিল শেষে আবারও ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রায় ২৫ মিনিট অবরোধ করে রাখলে মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম পরের দিন পুনরায় বেলা ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ২ ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দিয়ে কর্মসূচি শেষ করেন। তা ছাড়া আপিল বিভাগের রায়ে কোটা পদ্ধতি বাতিল না করা হলে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

এদিন বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হলে টানা আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালচত্বর থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডায়না চত্বরের সামনে এসে ছাত্রসমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় কোটাবৈষম্য দূরীকরণসহ বিভিন্ন দাবি জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করেন। এর আগে ববি গেটে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা।

 

 

কিউএনবি/আয়শা//০২ জুলাই ২০২৫,/রাত ১২:১২

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

September 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit