ডেস্ক নিউজ : আর তা যদি নয়, চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার তবে তো কথা-ই নেই। এখন একেবারেই ভরা বর্ষা। চারদিকে অথৈই পানি। কিন্তু চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনার চিরচেনা সেই রূপ নেই। অর্থাৎ রূপালি ইলিশের বিচরণ। জেলেদের জালে কিছু ধরা পড়লেও তা কাঙ্খিত নয়। এতে হতাশায় মলিন মুখের ভাঁজ দীর্ঘ হচ্ছে এই জনপদের জেলেদের। আর তার প্রভাব পড়ছে চাঁদপুর শহরের পাইকারি মাছ বাজার বড়স্টেশনেও।
অতীতে মৌসুমের এই সময় ব্যস্ত বড়স্টেশনের বাজারে প্রতিদিন গড়ে আড়াই শ থেকে ৩০০০ মণ ইলিশ বিপণন হতো। এখন তা নেমে এসেছে ৪০০-৫০০ মণে। এতে চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ কম হওয়ায় আকারভেদে দরদামও বেশ চড়া। যে কারণে দেশের বাইরে রফতানি বন্ধ থাকার পরও স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের অন্যত্র চাহিদামতো চালান দেওয়া যাচ্ছে না। জানালেন, মাছ ব্যবসায়ীরা। শনিবার চাঁদপুর বড়স্টেশন পাইকারি মাছ বাজারে সব মিলিয়ে ইলিশের সরবরাহ ছিল ১ হাজার মণ।
ইলিশ মূলত সাগরের নোনা জলের মাছ। তবে ঝাঁক বেঁধে চলা, বিচিত্র স্বভাবের এই মাছ- গভীর সাগর, উপকূল ছেড়ে ঝাঁক বেধে ছুটে আসে নদীর মিঠা পানিতে। তাই নদীর তলদেশে থাকা ফ্লাংটন জাতীয় খাবার খেতে আর ডিম ছাড়ার জন্য উপকূলের নদীগুলো পেরিয়ে মেঘনা থেকে পদ্মা পর্যন্ত ইলিশ ছুটে আসে। আবার ডিম ছাড়ার পর কোনো বাধা না পেলে, ফের ছুটে যায় আপন ঠিকানা সাগরের দিকে। তবে বিশেষ সময় নদীর মিঠা পানিতে রেখে যায় ইলিশের পোনা জাটকাগুলো।
সুমন খান পাইকারি দামে ইলিশ বিক্রেতা। স্থানীয় পদ্মা ও মেঘনা ছাড়াও লক্ষ্মীপুরের রামগতি এবং নোয়াখালীর চেয়ারম্যানঘাট থেকে বেপারীরা তার কাছে ইলিশ বিক্রি করেন। মাছ ব্যবসায়ী সুমন খানের ভাষ্য, তার আড়তে ১০০ মণ ইলিশের মধ্যে ৪৮ মণ ইলিশ উপকূলের। আর বাকি ২ মণ পদ্মা ও মেঘনার। তবে বাজারে যে পরিমাণ চাহিদা তার সিকিভাগও যোগান দিতে পারছেন না তিনি। তার মতো মাছ ব্যবসায়ী সম্রাট বেপারীও ঠিক একই কথা বলেন। তারমধ্যে বাজারে যে পরিমাণ যোগান দেওয়া হচ্ছে। তার বিপরিতে চাহিদা বেশি। তাই বেপারীরা দামও ছাড়ছেন না।
চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শবেবরাত জানান, আকারে ১ কেজির উপরে প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০.০০০ থেকে ৭২.০০০ টাকা। সাড়ে ৯ শ গ্রাম থেকে ১ কেজির মধ্যে প্রতি মণ ৬০০০০ থেকে ৬২০০০ টাকা এবং ৭শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ গ্রামের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৪৮ হাজার টাকায়। তিনি আরো জানান, সম্প্রতি সরকারি আদেশে বিদেশে রফতানি বন্ধ ঘোষণা করা হলেও পাইকারি বাজারে এখন যে পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ হচ্ছে। তা স্থানীয় বাজার এবং রাজধানী ঢাকা ও আরো কিছু জেলায় চালান দেওয়া যায়। এটি পাইকারি চিত্র হলেও আবার ভোক্তা পর্যায়ের অনেকেই সরাসরি ইলিশ ক্রয় করতে বড়স্টেশনে আসেন। বিশেষ করে বন্ধের দিন শুক্র ও শনিবাওে দেখা যায় এমন চিত্র।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪,/রাত ১১:০৩