খোরশেদ আলম বাবুল,শরীয়তপুর প্রতিনিধি : ডামুড্যায় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আকলিমা বেগম নামে এক প্রসূতি মা ও নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ স্বজনরা ওই ক্লিনিকে ভাংচুর করে বলে অভিযোগ ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের। বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাত ১০ টায় শরীয়তপুরের ডামুড্যা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে এই ঘটনা ঘটে। নিহত আকলিমা বেগম ও নবজাতক পূর্ব ডামুড্যা গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী ও সন্তান। নিহতদের স্বজন ও ক্লিনিক সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট বুধবার রাত ৩ টার দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে আকলিমা বেগম ডামুড্যা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকে আসেন। ওই সময় ক্লিনিকটিতে কোনো চিকিৎসক না থাকায় সিনিয়র নার্স সোহানা আকলিমাকে ভর্তি করে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।
অপারেশন থিয়েটারে স্বাভাবিক ভাবে আকলিমা সন্তান জন্ম দেয়ার পরে প্রসূতি মায়ের অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়। এর কিছুক্ষর পরে নবজাতকসহ মা আকলিমা অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এরপর তাদের অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক আকলিমাকে নবজাতকসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। ঢাকায় যাওয়ার পথে দুপুর ২ টার দিকে নবজাতক ও রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে মা আকলিমা বেগম মারা যায়। এরপর বিক্ষুদ্ধ স্বজনরা রাত ১০ টার দিকে ক্লিনিক ও ক্লিনিক সংলগ্ন হ্যাপি মেডিকেল হল নামে একটি ফার্মেসী ভাঙচুর করে।
আকলিমার ভাই মো. কাউছার বলেন, বুধবার রাতে আমরা আকলিমাকে ক্লিনিকে নিয়ে যাই। ওই সময় কোনো ডাক্তার ক্লিনিকে না থাকলেও এক নার্স আমাদেরকে বিভিন্ন ওষুধ আনতে একটি স্লিপ ধরিয়ে দেয়। ওষুধ আনার পরে স্বাভাবিক উপায়ে আকলিমা একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। এরপর সকালে ক্লিনিকের পরিচালক সাত্তার আসার পরে সে রোগীকে রক্ত দিতে পরামর্শ দিলে রক্তও দেওয়া হয়। তখনও ক্লিনিকে ডাক্তার ছিল না। ডাক্তারের কথা জিজ্ঞাস করায় ক্লিনিকের পরিচালক সাত্তার আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এরপর সকাল ১০ টার দিকে এক ডাক্তার এসে আমার বোন ও তার সন্তানকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে ঢাকায় পাঠানোর পর তারা দুই জনেই মারা যায়। আমি এই ঘটনার বিচার দাবি করছি।
ডামুড্যা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড ক্লিনিকের পরিচালক আব্দুস সত্তার বলেন, রোগীর অসুস্থতার কথা সিনিয়র নার্স আমাকে জানায়নি।আমি ডাক্তারের সাথে কথা বলে রক্ত দিতে বলি। প্রসূতির রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ার কারণে ডাক্তার রোগী ও নবজাতককে ঢাকায় প্রেরণ করেন। সেখানে কি হয়েছে তা আমি জানি না।বিষয়টি ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমারত হোসেন বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি ক্লিনিকের নিচের তলা ভাঙচুর করা হয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আমরা পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শেখ মোস্তফা খোকন বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কিউএনবি/অনিমা/৩০ অগাস্ট ২০২৪,/বিকাল ৫:১৬