ডেস্ক নিউজ : বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে জেলার রাণীশংকৈল উপজেলার জগদল সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দুষ্কৃতকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং আগুন দেয়ার পর থেকে এমন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে। তবে এখনও কেউ সীমান্ত দিয়ে ভারতে যেতে পারেনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের নুনতোর, গৈলাপাড়া, ভাগিটোলা, কামারটলী, কামাতপাড়া, কোরেলডোভা ও ঝাড়বাড়ী গ্রামের শতাধিক মানুষ নাগর নদী পার হয়ে অবৈধ পথে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করেন। শুরুতে বিএসএফ বুঝিয়ে ফেরত পাঠালেও তা মানেনি লোকজন। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়লে বাংলাদেশে ফিরে আসেন তারা।
বিকেল চারটার পর জগদল সীমান্তের ৩৭৪ নং মেইন পিলারের কাছে নদীর ওপারে ভারতের মুকেশ ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করা কাশিপুর কামাতপাড়া গ্রামের সুক্কু সেন, দেবী রানীসহ কয়েকজন জানান, আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুজনের বাড়ি ভাঙচুর করেছে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা। এরপর কয়েকজন এলাকায় হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়তে বলেছেন। এজন্য ভয়ে সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেন।
তারা আরও জানান, ওপারে আত্মীয় স্বজন আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার চলে আসবেন। কী নিয়ে যাচ্ছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা জানান, নদীতে পানি আছে, কোনো কিছু নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সরকার পদত্যাগ করার খবর এলাকায় এলে কিছু মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই নেতার বাড়িতে আক্রমণ করে। তারা দুজনেই হিন্দু সম্প্রদায়ের। এরপরে বাকিরা আতঙ্কিত। তবে ওই দিনের পর আর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
বিকেল ৫টার পর পার্শ্ববর্তী হরিপুর উপজেলার কাঠালডাঙ্গী ক্যাম্পের বিজিবি’র সদস্যরা জগদল সীমান্তে এলে দুটি ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা মিলে লোকজনকে জগদল বিওপির সামনে কাশিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে এনে জড়ো করে। সেখানে কাশিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বকুল সকলকে শান্ত করার চেষ্টা করলেও মানতে নারাজ ছিলেন লোকজন।
সেখানে থাকা হরিপুর উপজেলার কাঠালডাঙ্গী বিওপি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার শুবেদার মোজাম্মেল জানান, সেনাবাহিনীকে খবর দেয়া হয়েছে। বিজিবির লোকজনের কথা শুনতে নারাজ লোকজন। তবে সীমান্তের কাছ থেকে ক্যাম্প পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। পরে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর গাড়িসহ রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ড. টিএম মাহবুবর রহমানসহ স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
এ বিষয়ে রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান জানান, ঘটনাস্থল থেকে সবাইকে শান্ত করে বাড়িতে ফেরানো হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টার আগেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ওই পরিবারগুলোর জানমাল নিরাপত্তার জন্য এলাকায় বিজিবির সদস্যরা কাজ করছেন। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এ ঘটনায় কেউ উসকে দিয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি এমন প্রমাণ পাওয়া যায়, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
কিউএনবি/আয়শা/০৭ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ১১:২৫