রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:১৭ অপরাহ্ন

বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না তরুণ ইঞ্জিনিয়ার সুজনের

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৬ আগস্ট, ২০২৪
  • ১০২ Time View

ডেস্ক নিউজ : বিয়ের পিঁড়িতে বসা হলো না ইঞ্জিনিয়ার সুজন মাহমুদের। অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে অকালেই ঝরে গেল একটি তাজা প্রাণ। পুলিশ ও ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার পৌর সদরের রূপপুর নতুনপাড়া মহল্লার মৃত আব্দুর রশিদ মাস্টারের ছোট ছেলে ইঞ্জিনিয়ার সুজন মাহমুদের (৩৪) বিয়ের কথা ছিল আগামী ২৭ আগস্ট। তার আগেই সোমবার ঢাকার মিরপুর-২ এ তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

মঙ্গলবার সকালে রূপপুরের বাসভবনে নিহত সুজনের বোন রাবেয়া খাতুন বিলাপ করে বলছিল কী দোষ ছিল আমার ভাইয়ের। তাকে কেন নিষ্ঠুরভাবে গুলি করে মারা হলো। এই বলে বারবার সে মূর্ছা যাচ্ছিল।

এ সময় বাড়িভর্তি স্বজনদের আহাজারি ও কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। শোকে স্তব্ধ সন্তানহারা মা শামছুন্নাহার বেগম সন্তানের জন্য বারবার ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠছেন আর আল্লাহর কাছে বিচার চাইছেন। এ সময় তিনি ক্ষিণকণ্ঠে বারবার বলেন, আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দাও। কি দোষ ছিল তার। সে তো কোনো অন্যায় করেনি। তাহলে তার প্রাণ কেন এ ভাবে কেড়ে নেওয়া হলো।

এ বিষয়ে নিহত সুজনের মেজো ভাই সুলতান মাহমুদ বলেন, বিএসসি ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে তার ভাই ঢাকার একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করতেন। মিরপুর-৬ এ ভাড়া বাসায় থাকতেন। ৫ আগস্ট বিকালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে মিরপুর-২ এর দিকে যান। সেখানে পুলিশ ও ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে গুলি বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন সুজন। তাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রাতেই তার লাশ শাহজাদপুর উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের রতনকান্দি গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে বাদলবাড়ি শাহ হাবিবুল্লাহ (রঃ)-এর মাজার শরিফ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে পাশের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

তার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন- শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আরিফ, হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক মনির আহমেদসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই শাহীন উদ্দিন বলেন, আমি আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিকে খুঁজে বের করে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।

অপরদিকে সোমবার দুপুরে গাজীপুরের শফিপুর এলাকায় পুলিশ ও ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের কৈজুরি গ্রামের আব্দুল হকের ছেলে ও শাহজাদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র আব্দুল আলিম অন্তর (২২)। তিনি লেখাপড়ার পাশাপাশি শফিপুর এলাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন।

খবর পেয়ে তার স্বজনেরা কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে এদিন রাতেই তার লাশ উদ্ধার করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার সকালে কৈজুরি মাদ্রাসা মাঠে তার জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তার এই অকাল মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

 

কিউএনবি/আয়শা/০৬ অগাস্ট ২০২৪,/রাত ১০:১৪

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

October 2025
M T W T F S S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit