একপর্যায়ে আশরাফুল ইসলাম তৎকালীন জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিনের স্মরণাপন্ন হলে, তিনি উপজেলা সেচ কমিটির নিকটে গিয়ে জানতে চান কি কারণে তাকে লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। এসময় উপজেলা সেচ কমিটি তড়িঘড়ি করে তাকে আবারো আবেদন করতে বলেন। তিনি পুনরায় আবেদন করলে শুরু হয় নানা তালবাহানা। অবশেষে দীর্ঘ চার বছর পর ২০২৩ সালের ২৫ মে উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানার স্বাক্ষরিত অগভীর নলকূপ স্থাপনের লাইসেন্স প্রদান করা হয়। যাহার লাইসেন্স নং-২০২৩-২৪/৪৬৭ তারিখ ২৫/৫/২০২৩।
লাইসেন্স পাওয়ার পর ২০২৪ সালের ১২ মে আশরাফুল ইসলাম বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের জন্য যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পুড়াপাড়া সাব জোনাল অফিসে ৪৮ হাজার টাকা জমা দেন। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কতৃপক্ষ নিয়মানুযায়ী লাইন নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করলে যশোরের মিজানুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়।
ওয়ার্ক অর্ডার পেয়ে মিজানুর রহমানের লোকজন গত ৮ জুন লাইন নির্মাণের জন্য নারায়ণপুর গ্রামের সোলাকুড়োর মাঠে যায়। কাজ শুরু করলে পার্শবর্তী মাঠের নলকূপের মালিক মৃত সরবোত মন্ডলের মেয়ে আরজিনা বেগম তার ঘরজামাই স্বামী চাঁদ আলী ও ভাই মধু মন্ডল লাইন নির্মাণ কাজে বাঁধা দেয়। এসময় আশরাফুল ইসলাম স্থানীয় মেম্বর ওহিদুল ইসলাম ভোদড় এর নিকট অভিযোগ করলে তিনি কাজটি করতে দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। কিন্তু কোন কথা না শুনে চাঁদ আলী গাছি দা উচিঁয়ে লাইন নির্মাণকারী লোকজনকে ধারালো দা দিয়ে কেটে ফেলার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে ঠিকাদারের লোকজন তাদের যন্ত্রপাতি নিয়ে ফিরে যান।
চাঁদ আলীর হুমকিতে বিদ্যুৎ লাইনের নির্মাণ কাজ করতে না পেরে নিরাপত্তাহীনতার কারণে ওই দিনই চৌগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আশরাফুল ইসলাম । দীর্ঘ একমাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও পুলিশ আজ পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এঘটনায় অভিযুক্ত চাদ আলী বলেন, ‘আমার সেচ লাইন নির্মান করতে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি কোনো আইন বুঝিনা। সাফ কথা আমার লাইন থেকে কারো লাইন নির্মান করতে দেবনা’। এমন বাঁধার ফলে সরকার কৃষি খাতকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতেই নানা মুখি কর্মসুচি গ্রহণ করলেও তা যেন মাঠে মারা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ লাইনটি নির্মান কাজ বন্ধ হওয়াতে এলাকার কৃষকরা সেচ নিতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর পুড়াপাড়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম হাবিবুল্লাহ জনি বলেন, লাইন নির্মান করতে অফিসের নিয়ম অনুযায়ি কিছু টাকা খরচ হয়। পল্লীবিদ্যুতের শর্ত সাপেক্ষ লাইন সংযোগ দেওয়া হয়। সেখান থেকে লাইন বর্ধিত বা নতুন লাইন নির্মানের ব্যাপারে পল্লীবিদ্যুৎ দেখবে। কোনো ব্যাক্তি লাইন নির্মান কাজে বাধা দিতে পরেনা। কেউ বাধা দিলে আইনে আশ্রয় নিয়ে সংযোগ নিতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, চাঁদ আলীর লাইনও কোনো কোনো জায়গা থেকে সংযোগ নেওয়া হয়েছে। তার সংযোগেও যদি বাদ দেওয়া হয় তাহলে তিনিও তো লাইন নিতে পারতেন না। এভাবে বাধা দিলে কেউই লাইন নিতে পারবেনা।
অভিযোগ তদন্তের দায়িতপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই রিয়াজ উদ্দিন বলেন, উভয় পক্ষকে ডেকে প্রাথমিকভাবে কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়দের নিয়ে মীমাংসা করার চেষ্টা চলছে।
কিউএনবি/আয়শা/০৯ জুলাই ২০২৪,/বিকাল ৫:১২