আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আন্তর্জাতিক চাপ তোয়াক্কা না করে ফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সবসময়ই অস্ত্র সরবরাহ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইলকে দেওয়া বিপুল পরিমাণে অস্ত্র সহায়তার মধ্যে দুই হাজার পাউন্ডের বোমা, হেলফায়ার মিসাইল ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। গত বছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে তাদের এসব মারণাস্ত্র দিয়ে আসছে বাইডেন প্রশাসন।
মার্কিন কর্মকর্তারা অস্ত্র চালানের দিন-তারিখ না জানালেও যুদ্ধাস্ত্র সরবরাহের পরিমাণ থেকে বোঝা যায়, আন্তর্জাতিক চাপ তোয়াক্কা না করেনি, অস্ত্র সরবরাহ সবসময়ই অব্যাহত রেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুধুমাত্র বাইডেন প্রশাসনের একটি ভারী বোমার চালান বন্ধ ছাড়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব চালানের ফলে ইসরাইল গাজায় দীর্ঘ সময় ধরে হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে সক্ষম হয়েছে। যার শুরুটা হয়েছিল ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে। ওই সময় হামাস ইসরাইলের অভ্যন্তরে স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন বেসামরিক ইসরাইলি নাগরিক নিহত ও ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অস্ত্র বিশেষজ্ঞ টম কারাকো বলেছেন, সরবরাহকৃত বিপুল পরিমাণের এসব অস্ত্র গাজার মতো বড় যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। সম্প্রতি অস্ত্র সরবরাহের তালিকা প্রকাশ প্রমাণ করে যে, ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমর্থন রয়েছে। তালিকায় উল্লেখিত অস্ত্র ইসরাইল হামাস বা হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষে ব্যবহার করতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্বের চালানের তেমন কোনো তথ্য না থাকলেও গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলে পাঠানো সব অস্ত্রের নথিপত্র রয়েছে।
গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইল ও ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহর মধ্যে হামলা–পাল্টা হামলা চলমান রয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, উভয় পক্ষের মধ্যে যেকোনো সময় বড় পরিসরে যুদ্ধ শুরু হতে পারে।
এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস। ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরাইলের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারাও কোনো সাড়া দেয়নি। এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধের পর থেকে পাঠানো চালানগুলো ইসরাইলকে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো চালানের একটি বড় অংশ। আরেক সিনিয়র কর্মকর্তা গত বুধবার (২৭ জুন) সাংবাদিকদের জানান, ওয়াশিংটন ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলকে এ পর্যন্ত ৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন মূল্যের নিরাপত্তা (অস্ত্র) সহায়তা পাঠিয়েছে।
এদিকে গাজা যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থন দিতে গিয়ে বাইডেন নিজ দেশে রাজনৈতিক চাপে পড়েছেন। বিশেষ করে তরুণ ডেমোক্র্যাটরা বাইডেনের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফলে দ্বিতীয় মেয়াদে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাইমারিতে ‘অনিচ্ছুক’ ভোট বেড়েছে এবং মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/২৯ জুন ২০২৪,/রাত ১০:৫৪