খোরশেদ আলম বাবুল.শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট মনিরুজ্জামান ইমরান (৫৫) আত্মহত্যা করেছে। দীর্ঘদিন তিনি মানসিক রোগাক্রান্ত ছিলেন বলে আইনজীবী মহল জানিয়েছেন। ১৯ জুন বুধবার সন্ধ্যার পরে তিনি নিজ চেম্বারে গিয়ে সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুতে আদালত প্রাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সকল আইনজীবীসহ আত্মীয়-স্বজনরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছেন।
নিহতের পরিবার ও জেলা আইনজীবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নিহত আইনজীবী মনিরুজ্জামান ইমরান জাজিরা উপজেলার মুলনা ইউনিয়নের কাউয়্যাদি গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামোহ মরহুম সামসুর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের একজন সংসদ সদস্য। মনিরুজ্জামান ২০০৭ সনে শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যুবক বয়সে প্রথমবার মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসার পরে তিনি সুস্থ হয়। পরবর্তীতে বার কাউন্সিল পরীক্ষায় প্রথমবার অকৃতকার্য হয়েও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে যায়। চিকিৎসার মাধ্যমে আরোগ্য লাভ করেন। প্রায় বছর দুই আগে তিনি জমিজমার বিষয়ে পারিবারিক কলহে জড়িয়ে পড়েন। তখন থেকে তিনি পুনরায় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরেন। দেশ-বিদেশে চিকিৎসা নিয়েও তিনি পরিপূর্ণ সুস্থতা পায়নি। জুনিয়র আইনজীবীরা তার চেম্বার পরিচালনা করতেন। সেখান থেকে তাকে প্রতিদিন ৩ হাজার করে টাকা দিতেন। বাসায় বসে তিনি ইউটিউব, টিভি ও মোবাইল দেখে সময় কাটাতেন। গত বুধবার সন্ধ্যার পরে তিনি চেম্বারে যান। জুনিয়র আইনজীবী ও মোহরারগণ চেম্বারে না থাকায় সাদা রঙের রশি ফ্যান ও গলায় বেধে ঝুলে পরেন। এভাইে তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে।
এজিপি এডভোকেট হুমুয়ুন কবির মুন্সী বলেন, মনিরুজ্জামান ইমরান একজন সিভিল আইনজীবী ছিলেন। তার বসচেয়ে বেশী মামলা ছিল। তিনি বিভিন্ন সময় আমার চেম্বারে এসে জটিল বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এই রোগটা তার মায়ের মধ্যে ছিল। বুধবার সন্ধ্যার পরে নির্জন চেম্বারে ফ্যানের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করে। পরিবার ও আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি ময়না তদন্ত না করার জন্য।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, এডভোকেট মনিরুজ্জামান ইমরান দীর্ঘদিন ধরে ভারসাম্যহীন ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যার পরে তার চেম্বারেই তিনি আত্মহত্যা করেন।পালং মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ওলিউর রহমান বলেন, সংবাদ পেয়ে আদালত পাড়ার দ্বিতল ভবনের একটি চেম্বার থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করি। প্রাথমিক ভাবে জানাগেছে, তিনি কয়েকবার স্ট্রক করেছিলেন। অনেকদিন ধরে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
কিউএনবি/অনিমা/২০ জুন ২০২৪,/ দুপুর ১২:০২