এম এ রহিম,চৌগাছা (যশোর) : যশোরের চৌগাছায় শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। পশু কেনা বেচায় ইজারাদারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত খাঁজনা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এদিকে পশুরহাটটি সকারের পেরি-ফেরি ভুক্ত না হওয়ায় সরকার প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।জানা যায়, খুলনা বিভাগের সব থেকে বড় পশুর হাট চৌগাছা। পশুহাট টি চৌগাছা-মহেশপুর সড়কেরবেলে মাঠে বসে। সপ্তাহে শুক্রবার-সোমবার দুইদিন বসে এ পশুর হাটটি। এ হাটে রাজধানী ঢাকা,চিটাগাঙ, নোয়াখালি বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় বড় ব্যাপারীরা গরু-ছাগল কিনতে আসেন। প্রতি হাটে ৮০ থেকে ৯০ ট্রাক গরু এ হাট থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবারাহ করা হয়।
প্রতিটি ট্রাকে ২০ থেকে ২২ টি করে গরু থাকে। সে হিসেবে প্রতি হাটে ১ হাজার ৯৮০টি গরু কেবল মাত্র রাজধানী ঢাকা, চিটাগাঙ, নোয়াখানী, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল যায়। এছাড়া এ হাট থেকে মাগুরা, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার মানুষ গরু-ছাগল বেঁচাকেনা করতে আসেন।শুক্রবার (১৪ জুন) ছিলো চৌগাছা পশুর হাট। হাটে গিয়ে দেখা যায় শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। হাজার হাজার গরু উঠেছে হাটে। শেষ মুহুতে বেঁচাবিক্রি বেড়েছে বেশ। তবে পশু কেনা বেচায় ইজারাদারদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত খাঁজনা আদায়ের অভিযোগ করেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তারা অভিযোগ করে বলেন পশুরহাটটি সকারের পেরি-ফেরি ভুক্ত না। স্থানীয় পৌরসভা এ হাট থেকে খাঁজনা আদায় করে থাকেন। ফলে কোন নিয়ম কানুন না মেনেই নেওয়া হয় খাঁজনা। খুলনা বিভাগের সব থেকে বড় পশুর এ হাট হতে সরকার প্রতিবছর কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রাণিস¤পদ মন্ত্রণালয়ের ¯পষ্ট নির্দেশনা গরুর হাটে বিক্রেতাদের কাছ থেকে কোন খাঁজনা আদায় করা যাবে না। কেবল মাত্র ক্রেতাদের কাছ থেকে নির্ধারিত হারে খাঁজনা আদায় করতে হবে।এ সময় কথা হয় গরু কিনতে আসা ব্যাপারী আসাদুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন, ইজারাদারের লোকজন নির্ধারিত ফির বদলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছেন। পাশাপাশি নিয়ম না থাকলেও বিক্রেতাদের কাছ থেকেও জোরপূর্বক খাঁজনার নামে টাকা আদায় করছেন। যা ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর আইনে দন্ডিত অপরাধ।ইজারাদার আতাউর রহমান লাল জানান, ঈদ উপলক্ষ্যে সব গরুর হাটেই খাঁজনা বেশি করে নেওয়া হয়। আমরা আর অতিরিক্ত খাজনা নেবো না।
উপজেলা প্রাণিস¤পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ মাহফুজুর রহমান বলেন, এবারের কোরবানির জন্য ২ হাজার ৬৫১টি বাণিজ্যিক খামারে গরু ও ছাগল পালন করা হচ্ছে। এ ছাড়াও পারিবারিক ভাবে পশু পালন করে ৮ হাজার ৩৭৫টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে।তিনি বলেন গত বছর থেকে এ বছর উপজেলায় কোরবানির পশু পালন বেশি হয়েছে, যা এ উপজেলায় কোরবানির পশু ৬ হাজার ৮৫২ টির চাহিদা মিটিয়ে ৩ হাজার ৯২৩টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। এ সব পশু এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বড়-বড় শহরের হাটবাজারে সরবরাহ করা হবে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বিভাগের ১ হাজার ৩০৩টি স্থায়ী এবং তিন শতাধিক অস্থায়ী গরুর হাট বসে।হাটের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইজারাদার সিন্ডিকেট অবৈধভাবে ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছ থেকে গরু প্রতি এক হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খাঁজনা আদায় করছেন। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতা ও বিক্রেতারা। প্রশাসনের চোখের সামনে এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়ার খুব একটা নজির দেখা যায় না।
কিউএনবি/অনিমা/১৪ জুন ২০২৪,/বিকাল ৫:১৩