ডেস্ক নিউজ : খুলনার কয়রা উপজেলার দেয়াড়া হইতে হোগলা অভিমুখে প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া মেয়াদ শেষের পরেও ধীর গতিতে কাজ চলায় কয়েক হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খুলনার কয়রা উপজেলার দেয়াড়া থেকে হোগলার হাট পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার সড়কটি ২০২৩ সালের প্রথম দিকে সংস্কারের কাজ শুরু করে কয়েকমাস বন্ধ রাখা হয়। গত বছরের মে মাসের দিকে সড়কটির বিভিন্ন স্থান খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়। ফলে জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। বর্তমানে কাজ চললেও রাস্তার ওপরে ইট বিছিয়ে সেখানেই ভেঙে খোয়া তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া বেশ কিছুস্থানে ইট ও খোয়ার স্তূপ রাখা হয়েছে। যার কারণে জরুরি অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবহন চালাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে, রাস্তার দুই পাশে ঠিকমতো মাটি দেওয়া হয়নি। রাস্তাটির পাশের হেজিং এ নিম্নমানের ইট দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ডব্লিউবিএম’র জন্য অতি নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। একপর্যায়ে স্থানীয়দের বাধার মুখে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশনায় নিম্মমানের ইট অপসারণ করা হলেও পরবর্তীতে সে একই ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। নিম্নমানের হওয়ায় সামান্য চাপে খোয়া গুঁড়া হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন পাড়, আজাদ সানা, মোস্তাফিজুর রহমানসহ কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগের ভালো রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখায় চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। এছাড়া যেভাবে নিম্মমানের ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে, তাতে টেকসই হবে বলে মনে হয় না। এভাবে অর্থ অপচয় করার দরকার ছিল না। শুধু ইয়াসে ভেঙে যাওয়া দুটি স্থান ঠিক করার পাশাপাশি রাস্তার পাশে ভালোভাবে মাটি দিয়ে রাখলে ন্যূনতম আরও পাঁচ বছর ভালোভাবে চলতে পারতাম। অনেক ভালোমানের সামগ্রী দিয়ে আগের রাস্তা তৈরি করা ছিল।
স্থানীয় বাসিন্দা খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. ইমরান হোসেন জাকি বলেন, ঠিকাদারের অবহেলার কারণে রাস্তাটি এভাবে পড়ে আছে। অতি নিম্মমানের ইট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মানুষ হিসেবে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা চাঁদাবাজি মামলার ভয় দেখায়। কেউ অসুস্থ হলে, একটা অ্যাম্বুলেন্সও আসতে চায় না।
তিনি আরও বলেন, ইঞ্জিনিয়ার সাহেবকে বারবার অবগত করার পরেও এ ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রওশনারা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমার লাইসেন্স হলেও কাজটি আমি করছি না। রুবেল নামে একটি ছেলে কাজটি করছেন, বাড়ি খুলনায়। কাজটা নিয়ে আমি খুব বিপদে আছি। আমার লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে।
কাজের তদারকি করা রুবেল বলেন, ইটের ভাটায় ভালো ইটের টাকা দিচ্ছি, তবে তারা কিছু ভেজাল মিক্সড করে পাঠিয়েছিল। এজন্য ভাটা পরিবর্তন করেছি। আর দ্রুত কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি আশ্বাস্ত করেন। এ বিষয়ে কয়রা উপজেলা প্রকৌশলী মো. দারুল হুদা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ইট ফেরত নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে সব ইট খারাপ না থাকায় বাছাই করে বেশ কিছু ইট ফেরত নিয়ে যায়। ওনাদের বলা আছে, রাস্তায় কোনো নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, আবেদন সাপেক্ষে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত কাজের মেয়াদ বেড়েছে।
কিউএনবি/আয়শা/১১ মে ২০২৪,/সন্ধ্যা ৭:৩৪