রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
পরিবারে সুখ ফেরাতে বিদেশে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন শার্শার রনি শার্শায় গৃহবধূকে গনধর্ষণের অভিযোগ কোম্পানীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তরুণের মৃত্যু মনিরামপুর প্রেসক্লাবের দাতা সদস্যের বোনের ইন্তিকাল মনিরামপুরে রশীদ বিন ওয়াক্কাসকে জমিয়তের প্রার্থী ঘোষণা আটোয়ারীতে কিন্ডারগার্টেনের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ পাঁচদোনা টু ডাঙ্গা চারলেন সড়ক অপরাধীদের অভয়ারণ্যে  চৌগাছায় শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের উল্টো রথযাত্রা অনুষ্ঠিত দৌলতপুরে প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন চৌগাছায় ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে বিএনপি নেতাকে পিটিয়েছে প্রতিবেশী পুলিশ সদস্য

ধন, জ্ঞান ও শক্তি মহান আল্লাহর দান

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৮৯ Time View

ডেস্ক নিউজ : পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে মানুষকে নসিহত শোনানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। নসিহতের দুটি দিক হয়, ভালো ও মন্দ। নসিহত করতে গেলে যার মাঝে অহংকার সৃষ্টি হয় তার নসিহতের দ্বারা মানুষের ফায়দা হয় না। বরং হিতে বিপরীত হয়। ইমাম গাযালী (রহ.) তাঁর কিতাবে বলেছেন, ‘ওয়াজ করা হারাম।’ আসলে তিনি এর দ্বারা এ কথাই বোঝাতে চেয়েছেন যে, যে ওয়াজের দ্বারা নিজের মাঝে অহংকার, বড়ত্ব প্রকাশ পায় সে রকম ওয়াজ করা হারাম। মূলত ওয়াজের আসল উদ্দেশ্য হলো নিজের ও শ্রোতার আত্মা পরিশুদ্ধ করা। যে বয়ান, বক্তৃতা, নসিহত বা ওয়াজ বক্তার নিজের অন্তরে অহংকার সৃষ্টি করে সেই বয়ান অন্যের অন্তরের বা আত্মার সংশোধনের মাধ্যম হবে কী করে? বস্তুত ইখলাসপূর্ণ ওয়াজই মানুষের উপকারে আসে। এরকম ওয়াজের প্রতিক্রিয়ায়ই শ্রোতাদের মধ্যে আমলের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পর বিশাল শামিয়ানা ও উপস্থিত বড় বড় আলেম-ওলামা দেখে আমার অন্তরে এক প্রকার গর্বের ভাব সৃষ্টি হয়ে গেল যে, এত বড় সম্মেলনে আমিও একজন বিশেষ অতিথি। এরপর আমার বয়ান শুরু করার আগে উপস্থাপক আমার পরিচয় পেশ করার সময় কয়েকটি বড় বড় বিশেষণ যোগ করলেন। এতেও সৃষ্টিগত স্বাভাবিক কারণে অন্তর পুলকিত হলো। কিন্তু পরক্ষণেই একটি হাদিসের কথা স্মরণ হতেই অন্তরে প্রকম্পন শুরু হয়ে গেল। হাদিসটি হলো- রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কারও প্রশংসা তার সামনেই করল, সে যেন তার ভাইয়ের গর্দান কেটে ফেলল। (অর্থাৎ তাকে হত্যা করে দিল) কারও অন্তরে কিবির তথা অহংকার আছে কি না তা প্রমাণ হবে তার সামনেই তার ভূয়সী প্রশংসা করলে। কিবির মানুষের জন্য মারাত্মক এক ব্যাধি। যার মাঝে এ রোগ জন্ম লাভ করেছে সে ভয়ানক বিপদের ভিতর রয়েছে। এক সাহাবি রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে অন্য এক সাহাবির উপস্থিতিতে তার প্রশংসা করছিল, তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসাকারীকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি তো তোমার ভাইয়ের গর্দান কেটে দিলে। নবীর এই সতর্কবাণীর পরও যখন সে থামছিল না তখন নির্দেশ দেওয়া হলো যে, প্রশংসাকারীর মুখ মাটি দিয়ে বন্ধ করে দাও। যা হোক চট্টগ্রামের সেই সম্মেলনের উপস্থাপক আমার প্রশংসা করতে গিয়ে বলল, ‘ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়ার মহাপরিচালক।’ তৎক্ষণাৎই আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনারা আমাকে ‘মহাপরিচালক’ কেন বললেন? ‘মহাপরিচালক’ তো ফার্মের মালিকও হতে পারে, সরকারি কেন ডিপার্মেন্টের প্রধানও হতে পারে। তদ্রুপ এ বিশেষণটি ইহুদি-খ্রিস্টান সবার জন্যই প্রযোজ্য। তাহলে তাদের মাঝে আর আমার মাঝে পার্থক্য কী রইল? সেদিন আমার এই পাকড়াও তাদের শক্তভাবে নাড়া দিয়েছিল।

ইসলামী পরিভাষা ত্যাগ করার কারণে বিষয়ের হাকিকত তথা প্রকৃতিই নষ্ট হয়ে যায়। ইসলামী শরিয়ত হজ, জাকাত, সালাহ, সওম ইত্যাদি পরিভাষা নির্ধারণ করে দিয়েছে। এখন আমরা যদি সেগুলো বাদ দিয়ে নতুন নাম ব্যবহার শুরু করে দিই তাহলে কি শরিয়তের পরিভাষা বহাল থাকবে? এ জন্যই ‘মহাপরিচালক’ বিশেষণের প্রতি আমার আপত্তি। এ ক্ষেত্রে আরবি শব্দ ‘মুহতামিম’ বলা উত্তম। মুহতামিম বলার দ্বারা যে হাকিকত বুঝে আসে তা মহাপরিচালক বলার দ্বারা আসে না। এটা তো মাদরাসার পরিবেশ, উলামাদের পরিবেশ। এখানে আরবি শব্দ ব্যবহারই যুক্তিযুক্ত। বস্তুত ‘মুহতামিম’ বললে বুঝে আসে, তিনি একজন আলেমে দীন, তিনি নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন, সুন্নতি লেবাস পরেন। অন্যদিকে মহাপরিচালক বললে বুঝে আসে, তিনি দাড়ি কাটা লোক, নামাজ পড়েন না, সুন্নতি লেবাস পরিধান করেন না ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে এই শব্দ দ্বারা বদনাম করা হলো। শরিয়তে মুখোমুখি যেমন প্রশংসা করা নিষেধ তেমনি সামনে কিংবা আড়ালে বদনাম করাও নিষেধ।

প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন সাহাবিদের মজলিসে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তোমরা কি জানো, সবচেয়ে নিঃস্ব ও গরিব কে? হজরত সাহাবায়ে কেরামের নীতি ছিল রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এরূপ প্রশ্নে তারা সরাসরি কিছু না বলে বলতেন, আল্লাহর রসুলই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো জানেন। এটা এ করণেই বলতেন, যেন নবীর কাছ থেকে নতুন কোনো বিষয় পাওয়া যায়। কিন্তু এদিন মজলিসে দাঁড়িয়ে এক সাহাবি উত্তর দিলেন, ‘যার অর্থ-সম্পদ মোটেই নেই সে-ই সবচেয়ে নিঃস্ব ও গরিব।’ প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিন ওই সাহাবির এ উত্তর সঠিক হয়েছে কি না তা কিছুই বলেননি। আল্লাহতায়ালা প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি বাদশাহ-নবী হতে চান, না ফকির-নবী হতে চান? উত্তরে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমি গরিব-ফকির নবী হতে চাই। এ কারণেই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা এই দোয়া করতেন ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মিসকিন অবস্থায় দুনিয়াতে জীবিত রাখো, এই অবস্থায়ই মৃত্যু দান করো এবং আখেরাতেও যেন মিসকিনদের সঙ্গে উঠতে পারি সেই তৌফিক দান করো।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া, বাংলাদেশ

কিউএনবি/অনিমা/০১ এপ্রিল ২০২৪/দুপুর ১:১৬

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit