শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন

কৃষি পতিত জমিতে স্বপ্নের বুনন

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ১৭০ Time View
বাদল আহাম্মদ খান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি : জমি বলতে টিলাভুমির বাড়ির পাশে নিচু জায়গা। কাগুজের ভাষায় পতিত জমি। অনাদরে অবহেলায় পড়ে থাকা জমি। সেখানেই বুনা হয়েছে স্বপ্নের বুনন। স্বপ্ন কৃষিকে ঘিরে। বুনা হয়েছে ফল, সবজির বুনন। উঁকিও দিতে শুরু করেছে স্বপ্ন।

বড়ই আর লেবুতে শুরু। আরো ডজন দেড়েক ফল, সবজি ফলবে সেই আশা। এ স্বপ্নময় কথা মো. আব্দুল আওয়ালকে ঘিরে। বাড়ির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের কৌড়াতলী গ্রামে। রাজনীতির মাঠে পদবী বয়ে বেড়ানো আব্দুল আওয়াল নিজেকে এখন পুরোদস্তুর কৃষক হিসেবে পরিচিত করে তুলছেন। বাড়ির পাশে ১২০ শতক জমিতে তিনি মিশ্র ফলের বাগান গড়েছেন তিনি। আম, কাঁঠাল, লিচু, বড়ই, মাল্টা, সফেদা, বড়ই, লেবু, বেগুন শোভা পাচ্ছে তার বাগানে।

মঙ্গলবার সেখানে যাওয়া। পড়ন্ত বিকেল। বাগানের পাশের বড় বড় গাছে পাখির কিচির মিচির। এ যেন প্রকৃতির বোনাস। আব্দুল আওয়ালের শুরুর গল্পটা তিন বছর আগের। বড় ভাই আব্দুস সালামের জমিতে একটা দুইটা করে গাছের চারা রোপণ করতে থাকেন। সংখ্যায় এটা তিনশ’ ছাড়িয়েছে। ৮০টির বেশি বড়ই গাছে ঝুলছে ফল। পাইকার এসে বর্তমান অবস্থাতেই ৫০ হাজার টাকা দাম বলে গেছেন। তবে লাখ টাকা বিক্রি করতে বড়ইগুলো আরো পরিপক্ক করতে চান তিনি। কিছুদিন পূর্বে বাগান থেকে লেবু বিক্রি করেছেন আব্দুল আওয়াল। এটাই এ বাগান থেকে তার প্রথম বাণিজ্যিক আয়।

কৃষি নিয়ে আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন দেখেন আব্দুল আওয়াল। কথা হলে জানালেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব দেখে কৃষির প্রতি আগ্রহ, ‘ফেসবুকে দেখি অনেকে কৃষি কাজ করে সাবলম্বী হচ্ছেন। এসব দেখে নিজের মনেও আশা জাগে। বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালামের জমিতে কৃষি কাজ শুরু করেন বছর তিনেক আগে। ভাতিজারাও এ কাজের শরিক আছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। স্থানীয়ভাবে পদে থাকায় সময় দিতে হয়। আগে ধানি জমি করতাম। এখন সেগুলো থেকে কিছুটা সরে এসে বাড়ির সামনের পতিত জমিতে মিশ্র ফলের বাগান করেছি। সঙ্গে কিছু সবজিও আছে। চারা লাগানোর পর এখন আমি ফসল পেতে শুরু করেছি। আশা করছি আমি লাভবান হবো। কৃষিকে ঘিরে আমার অনেক স্বপ্ন। সকলের সহযোগিতা পেলে সেটা বাস্তবায়ন করবো।’ 

কৃষি অফিসের লোকজন নিয়মিত এ বাগানের খোঁজ নেন বলে তিনি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমানের কথায় তিনি বাগান করতে আরো বেশি উদ্বুদ্ধ হন ও ওই কর্মকর্তা সব সময় সহযোগিতা করেন বলে জানান কৃষক আব্দুল আওয়াল। এ বাগানের জন্য যে আব্দুল আওয়াল শ্রম দেন সেটা বুঝা যায় সেখানে গিয়ে। বাগানের মাঝেই ছোট্ট একটি ডেরা নির্মাণ করে রেখেছেন যেখানে তিনি থাকেন। 

আখাউড়া উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. আশরাফুল হক বলেন, ‘একজন রাজনীতিবিদ হয়েও আব্দুল আওয়াল সফল কৃষক। এই মুহুর্তে ওনার বাগানে শোভা পাচ্ছে দুই জাতের বড়ই। নানা জাতের ফল থাকা বাগানটি ধীরে ধীরে আরো বেশি গাছে ফলন আসবে।’ উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এ বাগানটি ভালো-মন্দ দিক বুঝতে একজন কর্মকর্তা নিয়মিত দেখাশুনা করছেন। তবে আমিও মাঝে মাছে ওনাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে থাকি। বাগান নিয়ে বেশ আশাবাদী আব্দুল আওয়াল।’   

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা রয়েছে এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে। এমন একটি পতিত জমিতেই মিশ্র ফলের বাগান করেছেন কৃষক আব্দুল আওয়াল। তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে দুই জাতের বড়ই। এছাড়া আরো বিভিন্নজাতের ফল ধরতে শুরু করেছে যেগুলো শিগগিরই বাজারজাত করা যাবে।’ আব্দুল আওয়ালের মতো অন্য কৃষরাও যেন পতিত জমিতে কৃষি কাজ করেন সেই অনুরোধ জানান উপজেলা কৃষি অফিসের প্রধান ওই কর্মকর্তা।

কিউএনবি/আয়শা/১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:৩০

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

July 2025
M T W T F S S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৩
IT & Technical Supported By:BiswaJit