ডেস্ক নিউজ : মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যে সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে তার প্রভাব যদি বাংলাদেশে আসে তাহলে সরকার চুপ করে বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত মাকাওয়াদি সুমিতমোর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গায়ে পড়ে যদি কোনো কিছু হয় তাহলে বাংলাদেশ চোখ বুঁজে থাকবে না। আমাদের সরকার খুব নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়, মানুষের স্বাধীনতা বিঘ্নিত হয়, জীবন-যাপন বিঘ্নিত হয় এ রকম যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ সরকার প্রস্তুত আছে।
মিয়ানমারের সংঘাতময় পরিস্থিতির কারণে টেকনাফ বন্দরে পণ্য আনা-নেওয়ায় কোনো প্রভাব পড়েছে কি না- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত টেকনাফ স্থলবন্দরে এ ধরনের কোনো প্রভাব বা কর্মকাণ্ডে কোনো রকমের বিঘ্ন ঘটার সংবাদ আমাদের কাছে নেই।
আমাদের নৌ ও স্থলবন্দরগুলোতে অতিরিক্ত কোনো সতর্কতা বা নিরাপত্তা নেওয়া হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিয়ানমারের পুরো সীমান্ত এলাকা সতর্ক নজরদারিতে আছে। বিজিবি, র্যাব, পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। একইসঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার জন্য যে সশস্ত্র বাহিনী আছে তারা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। কাজেই দেশের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে।
নৌ-যোগাযোগ বাড়াতে নদী খননের প্রকল্পগুলোর কী অবস্থা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নদী খননের প্রকল্প আমাদের যেটা আছে সেটা ঘাঘর ও বংশী নদী খনন প্রকল্প আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে আমাদের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে কার্যক্রম শুরু হবে। আরও কিছু কিছু নদী খনন পাইপলাইনে আছে। যেমন ভারতের ত্রিপুরার সঙ্গে যুক্ত গোমতী নদী। এছাড়া যেসব নদী নাব্যতা সংকটে আছে সেগুলোতো ড্রেজিংয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, অনেকগুলো নদী বন্দর করেছি। সেগুলো আপডেট করার জন্য প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল যেমন- হাতিয়া, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া এসব জায়গার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও নিরাপদ করার উদ্যোগ নিয়েছি, একটি প্রকল্প চলমান রয়েছে। আমরা সবসময় উপকূলীয় অঞ্চলগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আসছি। ভোলার সঙ্গে সরাসরি ফেরি চালু হয়েছে। নদী পথের যোগাযোগ ব্যবস্থা আস্তে আস্তে আরও নিরাপদ করতে চাই।
থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে নির্বাচন বা রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে থাইল্যান্ড সরকারের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে এবং থাকবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করতে চাই। ৫০ বছরের সম্পর্ক আরও উচ্চতায় নিতে চাই। থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক আছে, সে সম্পর্কটা আরও কাছাকাছি যাতে আসে সে ব্যাপারে তিনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সম্পর্ক কী রকম এবং আমরা কীভাবে লাভবান হবো- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থাইল্যান্ডের সঙ্গে আমাদের দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য রয়েছে। তবে এখন সেটা কিছুটা কমে গেছে। সেটা যেন আরও ভালো হয়, সে চেষ্টা চলছে। কারণ আমাদের যে পণ্য রয়েছে সেটার চাহিদা থাইল্যান্ডে আছে। পাশাপাশি তাদের পণ্যের চাহিদাও আমাদের দেশে রয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের পণ্যগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক, ফুড আইটেম, প্লাস্টিক, চামড়াসহ অনেক পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে থাইল্যান্ডে। এগুলো নিয়ে রাষ্ট্রদূত আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যাতে পরিমাণ আরও বাড়ে। একদিন পরে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। সেখানেও এসব বিষয়ে আলোচনা করবেন।
কিউএনবি/আয়শা/০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪,/বিকাল ৪:৩৮