বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৫ অপরাহ্ন

ইসলামে উত্তম চরিত্রের মূল্যায়ন

Reporter Name
  • Update Time : বুধবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৯১ Time View

ডেস্ক নিউজ : উত্তম চরিত্র মানব জীবনের অতি মূল্যবান সম্পদ। ইসলাম ধর্মে উত্তম চরিত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। এ ধর্মে প্রতিটি মানুষকে সচ্চরিত্র অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইহ ও পরকালে ভালো চরিত্রবানদের অশেষ কল্যাণের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে। কোরআন-সুন্নায় মন্দ চরিত্র পরিহার করার আদেশ রয়েছে। বর্ণিত হয়েছে ইহ ও পরকালের শাস্তির বিধান।

উন্নত চরিত্র ছাড়া জাতি উন্নত মর্যাদা লাভ করতে পারে না। আশা করতে পারে না ইহ ও পরকালে শান্তি ও কল্যাণ। সব নবী ও রসুল নিজ নিজ জাতিকে উত্তম চরিত্রের শিক্ষা দিয়েছেন। বারণ করেছেন যাবতীয় মন্দ চরিত্র থেকে। উন্নত চরিত্রের পূর্ণতাদানের জন্য আল্লাহ শেষনবী মুহাম্মদ (সা.)-কে প্রেরণ করেছেন। 

রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘উন্নত চরিত্রের পূর্ণতা-দানের জন্যই আমি প্রেরিত হয়েছি।’ (ইবনে মাজাহ, আদাবুল মুফরাদ)।
মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী’ (সুরা আল কলম-৪)।

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম সে, যে ভালো চরিত্রবান।’ (মুসলিম)। অন্য এক হাদিসে তিনি উল্লেখ করেন, ‘কেয়ামত দিবসে মিজানের পাল্লায় সচ্চরিত্র অপেক্ষা ভারী আর কিছুই হবে না।’ (তিরমিজি)।

উত্তম চরিত্র বা সচ্চরিত্র কী? কীভাবে তা অর্জন করা যায়। বস্তুত উত্তম চরিত্রের পরিধি অনেক ব্যাপক। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আচার-আচরণ, চলাফেরা ওঠাবসা, লেনদেন, স্বভাব ও কথাবার্তায় ভালো কিছু যা প্রকাশ পায় তা-ই উত্তম চরিত্র। মানুষের দু-এক দিনের কাজকে স্বভাব বলা যায় না। বরং তা একটি বদ্ধমূল অবস্থা ও স্থায়ী অনুশীলনের নাম। 

রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমার ভাইয়ের প্রতি তোমার মুচকি হাসিও তোমার জন্য সদকা।’ (তিরমিজি)।

অতএব, মানুষের সঙ্গে সুন্দরভাবে কথা বলা, সত্য কথা বলা, পরস্পরের সাহায্য-সহযোগিতায় নিবেদিত হওয়া, দান-অনুদানে এগিয়ে আসা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, মানুষের প্রতি সুধারণা পোষণ, সহনশীল হওয়া, সবার যথাযথ মর্যাদা ও অঙ্গীকার রক্ষা করা ইত্যাদি উত্তম চরিত্রের অন্তর্ভুক্ত। 

পক্ষান্তরে মিথ্যা বলা, মিথ্যা চর্চা করা, ঝগড়া-বিবাদ করা ও গালমন্দ করা, কারও ক্ষতি করা বা ক্ষতির প্রচেষ্টা করা, দুর্নীতি করা, প্রতারণা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা ইত্যাদি অপকর্মে লিপ্ত হওয়া মন্দ চরিত্র হিসেবে গণ্য হবে। বিবেচিত হবে উত্তম চরিত্রের অন্তরায় হিসেবে। 

মানুষের চরিত্র সুন্দর হওয়ার জন্য অন্তর সুন্দর ও স্বচ্ছ হওয়া অতি জরুরি। বাহ্যিক আচার-আচরণের মাধ্যমে অন্তরের অবস্থাও প্রকাশ পায়। উত্তম চরিত্র ও মন্দ চরিত্র অন্তর থেকে উদ্গত হয়। তাই উত্তম চরিত্র সৃষ্টিার জন্য অন্তরের অনুশীলন করা প্রয়োজন। একজন মানুষ সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তখনই গণ্য হবে যখন তার অন্তরটা মানুষ হিসেবে গণ্য হবে। 

মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি মাংসের টুকরা আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সেই মাংসের টুকরোটি হলো অন্তর বা কলব।’ (বুখারি, মুসলিম)।

উত্তম চরিত্র লাভের জন্য অন্তর কলুষমুক্ত করা প্রধান কাজ। সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে জিব, হাত ও যাবতীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। পরিচালনা করতে হবে আল্লাহ ও রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী। কেননা একজন মুসলিম হিসেবে উত্তম চরিত্রবানের পৃথক বৈশিষ্ট্য হলো, স্রষ্টার প্রতি সঠিক ইমান ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর আনুগত্য করা।

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা

কিউএনবি/অনিমা/১০ জানুয়ারী ২০২৪/বিকাল ৪:৩৫

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

আর্কাইভস

December 2025
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৫-২০২৬
IT & Technical Supported By:BiswaJit